সরকারের অন্যতম শীর্ষ অগ্রাধিকার নারীর ক্ষমতায়ন : জাতিসংঘে প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের শীর্ষ অগ্রাধিকারগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো নারীর ক্ষমতায়ন। নারীর নিরাপত্তা, মর্যাদা ও সমান সুযোগ সুনিশ্চিত করতে এ সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাতে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৮০তম অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।
ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের শীর্ষ অগ্রাধিকারগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো নারীর ক্ষমতায়ন। আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ভাষায়—‘‘বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চিরকল্যাণকর, অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।’’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে, বর্তমান বিশ্বে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে নারীদের অবদান অর্ধেকেরও বেশি। এ মাসে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ‘আনপেড হাউসহোল্ড প্রোডাকশন স্যাটেলাইট অ্যাকাউন্ট’ জরিপ প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে দেখা যায় যে, অবৈতনিক পরিচর্যা ও গৃহস্থালি কাজের শতকরা ৮৫ ভাগেরও বেশি কাজ নারীরা একাই করে থাকেন, যার অর্থমূল্য আমাদের স্থূল দেশজ উৎপাদনের প্রায় ১৬ শতাংশ।’
ড. ইউনূস আরও বলেন, ‘বহু প্রতিকূলতা সত্ত্বেও আজ আমাদের মেয়েরা শ্রেণিকক্ষ থেকে বোর্ডরুম, গবেষণাগার থেকে ক্রীড়াঙ্গন—সবখানেই বাধা অতিক্রম করে সফল হচ্ছে। সম্প্রতি আমাদের নারী ফুটবল দল আঞ্চলিক চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছে, আন্তএশীয় প্রতিযোগিতার জন্য উত্তীর্ণ হয়েছে এবং সারা দেশের লাখো মানুষকে অনুপ্রাণিত করে চলেছে।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘নারীর নিরাপত্তা, মর্যাদা ও সমান সুযোগ সুনিশ্চিত করার জন্য আমার সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’
ড. ইউনূস আরও বলেন, ‘এ বছর আমরা বেইজিং ঘোষণাপত্রের ৩০তম বার্ষিকী উদ্যাপন করছি। এই উপলক্ষে নারীর ক্ষমতায়নে আমাদের অঙ্গীকারকে আরও জোরদার করতে আমরা ‘‘বেইজিং+ ৩০ অ্যাকশন অ্যাজেন্ডা’’-এর অধীনে আগামী পাঁচ বছরে বাস্তবায়নের লক্ষ্য নিয়ে চারটি জাতীয় প্রতিশ্রুতি ঘোষণা করেছি। এর মধ্যে রয়েছে—যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও সুরক্ষাসংক্রান্ত আইন প্রণয়ন করা; নারীর অবৈতনিক পরিচর্যা ও গৃহস্থালি কাজের স্বীকৃতি ও মূল্যায়ন নিশ্চিত করা; রাজনৈতিক ও জনপরিসরে নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করা এবং নারীর সমতা ও ক্ষমতায়নের প্রতি সংবেদনশীল বাজেট প্রণয়ন পদ্ধতি শক্তিশালী করা।’
What's Your Reaction?






