অন্যের স্ত্রীকে নিয়ে পালালেন জামায়াত সেক্রেটারি, এলাকায় তোলপাড়

Sep 18, 2025 - 03:35
 0  4
অন্যের স্ত্রীকে নিয়ে পালালেন জামায়াত সেক্রেটারি, এলাকায় তোলপাড়
ছবি : সংগৃহীত

বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি 

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বাউশা ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারি মো. শামসুল ইসলামের বিরুদ্ধে গুরুতর নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শামসুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে ধর্মের অপব্যাখ্যা ও প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করে আসছিলেন। সম্প্রতি স্থানীয় এক আনসার সদস্য মো. রুবেল হোসেনের স্ত্রী লামিয়া আশরাফীর সঙ্গে তার অনৈতিক সম্পর্ক প্রকাশ্যে আসার পর পুরো এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয়দের তথ্য অনুযায়ী, শামসুল ইসলানের বাড়ি বাঘা উপজেলা বাউশা ইউনিয়নে এবং রুবেল হোসেনের বাসা চারঘাট উপজেলার ভায়ালক্ষীপুর ইউনিয়ন পান্নাপাড়া গ্ৰামে। শামসুল ইসলাম উত্তর সোনাদহ জামে মসজিদে ইমামতি করতেন। ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানে তিনি নিয়মিত মহিলাদের সঙ্গে পুরস্কার বিতরণ, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক আয়োজন করতেন। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তিনি রুবেল হোসেনের বাড়ীতে নিয়মিত আসা-যাওয়া করতেন এবং লামিয়া আশরাফীর সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ রাখতেন।

স্থানীয় সূত্র আরও জানিয়েছেন, শামসুল ইসলানের শুধু রুবেল হোসেনের স্ত্রীর সঙ্গে নয়, তার সঙ্গে আরও কয়েকজন মহিলার সম্পর্ক ছিল। যদিও অন্য মহিলাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি, তবে তার অনৈতিক কর্মকাণ্ড দীর্ঘদিন ধরে চলছিল। অবশেষে সুযোগ বুঝে তিনি লামিয়া আশরাফীকে সঙ্গে নিয়ে পালিয়ে যান এবং পরে লামিয়া রুবেল হোসেনকে তালাক দিয়ে শামসুল ইসলামের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।

ভুক্তভোগী স্বামী রুবেল হোসেন বলেন, ‘‘আমার সংসার ভেঙে গেছে। বিশ্বাসই করতে পারছি না, সমাজের নেতা নামধারী একজন মানুষ কীভাবে আমার ঘর ভাঙতে পারে। প্রশাসনের কাছে আমি সঠিক বিচার চাই। আমাদের পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, আমাদের সম্মানও নষ্ট হয়েছে।’’

মাহামুদুল হাসান নামের এক প্রতিবেশী বলেন, “শামসুল ইসলাম বহুদিন ধরে ধর্মীয় ভাবধারাকে ব্যবহার করে নারীদের প্রলোভনে ফেলে আসছিল। সম্প্রতি যা ঘটেছে, তা পুরো সমাজের জন্য বিপজ্জনক। আমরা দেখছি, তার কর্মকাণ্ড যুবসমাজকেও বিভ্রান্ত করছে।”

প্রতিবেশী রেখা খাতুন নামের একজন নারী বলেন, “তিনি বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে মহিলাদের সঙ্গে খেলাধুলা ও পুরস্কার বিতরণ করতেন। অনেকেই তার কার্যকলাপে প্রভাবিত হয়েছেন। সম্প্রতি যা ঘটেছে, তা আমাদের গ্রামের জন্য বড় এক ধাক্কা।”

স্থানীয় আব্দুল হামিদ বলেন, “এ ধরনের কর্মকাণ্ড সমাজে অনাস্থা সৃষ্টি করছে। সাধারণ মানুষ হতবাক, যুবকরা বিভ্রান্ত হচ্ছে। প্রশাসন যেন দ্রুত ব্যবস্থা নেয় এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়।”

গ্রামবাসীর অভিযোগ, শামসুল ইসলানের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে এলাকায় সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয় শুরু হয়েছে। বিশেষ করে যুবসমাজ প্রভাবিত হচ্ছে এবং কিছু পরিবার অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। ধর্মের অপব্যাখ্যা ও সামাজিক অনুষ্ঠানের ছত্রছায়ায় সাধারণ মানুষ প্রলোভনে পড়ে যাওয়ার ঘটনা সমাজের জন্য একটি বড় সতর্কবার্তা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

নিউজ যাচাইয়ের জন্য শামসুল ইসলানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এছাড়া তার এবং লামিয়া আশরাফীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তারা কোনোভাবেই সংবাদকর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হয়নি।

স্থানীয়দের দাবি, শামসুল ইসলানের এই কর্মকাণ্ড কেবল এক পরিবারের নয়, পুরো এলাকার সামাজিক ও নৈতিক পরিবেশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। রাজনৈতিক পরিচয়ধারী ব্যক্তি হিসেবে তার কেলেঙ্কারী এলাকায় অনাস্থা ও অশান্তি সৃষ্টি করেছে। গ্রামবাসী আশা করছেন, প্রশাসন দ্রুত বিচার করে দোষীদের বিরুদ্ধে দৃঢ় পদক্ষেপ নেবে।

এ ঘটনার কারণে এলাকায় সামাজিক অশান্তি, নৈতিক অবক্ষয় ও যুবসমাজের বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। এটি কেবল একটি পারিবারিক ঘটনা নয়, পুরো সামাজিক পরিবেশে প্রভাব ফেলেছে। গ্রামবাসীর কথায়, প্রশাসন যেন দ্রুত, স্বচ্ছ ও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে সমাজে শান্তি ও নৈতিকতার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে।

চারঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জান্নাতুন ফেরদৌস জানিয়েছেন, ‘‘আমরা ঘটনাটি সম্পর্কে অবগত। ভুক্তভোগী পরিবার লিখিত অভিযোগ করেছেন আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তদন্ত চলমান রয়েছে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’’

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow