ডাকসু নির্বাচন: জয় পরাজয় বলে দেবে আমাদের জাতীয় রাজনীতি ও গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ

Sep 10, 2025 - 01:57
 0  1
ডাকসু নির্বাচন: জয় পরাজয় বলে দেবে আমাদের জাতীয় রাজনীতি ও গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ
ফাইল ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার অপেক্ষায় পুরো ক্যাম্পাস। এরই মধ্যে নির্বাচনকে ঘিরে প্রার্থীদের অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ তীব্র আকার ধারণ করেছে। এমন পরিস্থিতিতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ডাকসুর ফলাফল নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়েছেন। মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে তিনি এ পোস্ট দেন।

তিনি লেখেন, আজ ডাকসুতে যারা জিতবে, তারা কীভাবে দায়িত্ব নেবে এবং যারা হারবে, তারা কীভাবে পরাজয় গ্রহণ করবে এই দুইটি প্রশ্নের উত্তর বলে দেবে আমাদের জাতীয় রাজনীতি ও গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ কোন দিকে যাচ্ছে।

তার মতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের এই নির্বাচন ঘিরে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ প্রভাব বিস্তার অত্যন্ত উদ্বেগজনক। পেশিশক্তি, জনশক্তি ও সংগঠিত উপস্থিতির মাধ্যমে নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা ছাত্র রাজনীতির নিজস্ব চরিত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। ডাকসু এখন শুধু ছাত্রদের ম্যান্ডেট বহন করছে না, বরং জাতীয় রাজনৈতিক দলের এক্সটেনশন গেমে পরিণত হয়েছে, যা ভবিষ্যতের জন্য নেতিবাচক দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে।

এ সময় তিনি অভিযোগ করেন, নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় ভিন্নমতের শিক্ষক থেকে শুরু করে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ সবার প্রতি গণহারে ট্যাগ বসানোর প্রবণতা স্পষ্ট হয়েছে। তার ভাষায়, শেখ হাসিনার আমলের বিভাজন, সন্দেহ ও দমননীতির ধারাবাহিকতায় এই মানসিকতা রাজনীতিকে দীর্ঘমেয়াদে অনিরাপদ ও সংকুচিত করবে।

ছাত্র রাজনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে হলে নিয়মিত নতুন নেতৃত্বের উত্থান এবং পরাজয়কে পরবর্তী প্রস্তুতির অংশ হিসেবে গ্রহণের সংস্কৃতি গড়ে তোলার আহ্বান জানান হাসনাত আব্দুল্লাহ। তার মতে, ডাকসু নির্বাচন সেই সংস্কৃতি তৈরির সূচনা হতে পারত, তবে ফলাফল গ্রহণ নিয়ে অনিশ্চয়তা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য ক্ষতিকর দৃষ্টান্ত তৈরি করছে।

সব রাজনৈতিক দলকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সকলের উচিত ভোটারদের রায়কে সম্মান করা। গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি সহিষ্ণুতা। যাকে আমি পছন্দ করি না, তাকেও যদি জনগণ বেছে নেয়, সেটিকে সম্মান করাই গণতন্ত্র।

শেষে তিনি সতর্ক করে বলেন, গত ১৭ বছর ধরে রাজনৈতিক দলগুলোর স্বল্পমেয়াদি স্বার্থে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ফল ভুগছে দেশ। এবার সময় এসেছে পরাজয়কে সম্মানিত করার সংস্কৃতি গড়ে তোলার। অন্যথায় আগামী দিনের রাজনীতি থেকে যাবে কেবল জয়ীদের উল্লাস আর পরাজিতদের ক্ষোভে বন্দী, আর গণতন্ত্র কোনদিন পূর্ণতা পাবে না।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow