৭ বছর পর কাবার সাবেক ইমাম কারামুক্ত হলেও পায়ে থাকছে বিশেষ যন্ত্র

সাত বছর কারাভোগের পর মসজিদুল হারামের সাবেক ইমাম শায়খ সালেহ আল-তালিবকে মুক্তি দিয়েছে সৌদি সরকার। তবে এখনও তিনি গৃহবন্দি অবস্থায় রয়েছেন এবং তার পায়ে ইলেকট্রনিক মনিটর লাগিয়ে রাখা হয়েছে।
মানবাধিকার সংস্থা প্রিজনার্স অব কনসায়েন্স সামাজিক মাধ্যমে তার মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, শায়খ সালেহ আল-তালিব এখনও গৃহবন্দি আছেন এবং তার পায়ে ইলেকট্রনিক মনিটর লাগানো রয়েছে। এই সংস্থাটি সৌদি আরবের ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব ও আলেমদের গ্রেপ্তার ও বন্দিত্বের ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে থাকে।
সৌদি বাদশাহ-এর নেতৃত্ব ও বিনোদন নিয়ে সমালোচনা ও মিশ্র লিঙ্গ কেন্দ্রিক এক মন্তব্যের কারণে ২০১৮ সাল থেকে কারাবন্দি শায়খ সালেহ আল-তালিব। ওই বক্তৃতায় তিনি অন্যায়ের বিরুদ্ধে খোলাখুলিভাবে বক্তব্য ও ইসলামে নৈতিক দায়িত্ব পালনের গুরুত্বের ওপর কথা বলেন এবং বিশেষভাবে সৌদি আরবের জেনারেল এন্টারটেইনমেন্ট অথরিটি ও মিশ্র লিঙ্গের অনুষ্ঠানের সমালোচনা করেন। এরপর থেকে এই ইমামকে আর কখনো প্রকাশ্যে বক্তব্য দিতে দেখা যায়নি। খবর দ্য সিয়াসত ডেইলির।
তবে সৌদি সরকার কখনই কাবার ইমাম শায়খ সালেহ আল-তালিবের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক কোনো অভিযোগ প্রকাশ করেনি। তবে এই বক্তৃতার পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২০২২ সালে রিয়াদের বিশেষ আপিল আদালত তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন।
তিনি ১৯৭৪ সালের ২৩ জানুয়ারি হুৎতাত বানী তায়মি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ওই পরিবার বিশিষ্ট ইসলামি শিক্ষাবিদ, বিচারক ও গবেষকদের পরিবার হিসেবে বিখ্যাত।
শায়খ সালেহ আল-তালিব কুরআনের সুমধুর তেলাওয়াত এবং বক্তৃতার মাধ্যমে আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। অনলাইনে তার লাখ লাখ অনুসারী রয়েছে। বন্দ্বিত্বের আগে তিনি মক্কা, রিয়াদ ও অন্যান্য অঞ্চলে বিচারক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
শায়খ সালেহ আল-তালিবের মুক্তির ঘটনায় মুসলিম বিশ্বের অনেকেই স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের জুনে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান নেতৃত্ব নেয়ার পর থেকে ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব, রাজপরিবারের সদস্য এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনামূলক মন্তব্যকারীদের গ্রেপ্তার বেড়ে গেছে। সৌদি সরকারের এই কঠোর অবস্থান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সমালোচিত হয়েছে। সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ ও কর্মীরা প্রায়ই তাদের মতামতের কারণে দীর্ঘ কারাদণ্ডের মুখোমুখি হন।
What's Your Reaction?






