গাইবান্ধায় বোরো চাষে ব্যস্ত কৃষকরা, ভালো ফলনের আশাবাদী

Feb 16, 2025 - 18:10
 0  6
গাইবান্ধায় বোরো চাষে ব্যস্ত কৃষকরা, ভালো ফলনের আশাবাদী
ছবি : সংগৃহীত

মোঃ শুভ ইসলাম, গাইবান্ধা

শীত আর ঘন কুয়াশা উপেক্ষা করে গাইবান্ধায় শুরু হয়েছে ইরি-বোরো চাষাবাদ। শীতে ইরি-বোরোর চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।

তবে জেলা কৃষি বিভাগ বলছে, শীতের কারণে ইরি-বোরোর চারা সংকট হবে না। এবারও ইরি-বোরোর চাষ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। শ্রমিক ও উৎপাদন খরচ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে ধানের দামও।

সরেজমিনে দেখা গেছে, গাইবান্ধার সাত উপজেলায় পুরোদমে ইরি-বোরো চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। কেউ জমি চাষ দিয়ে প্রস্তুত করছেন, কেউ বীজ তুলছেন আবার কেউ চারা লাগাচ্ছেন।

কৃষকরা জানিয়েছেন, জমি চাষ, সার, কীটনাশক, শ্রমিকদের মজুরি ও সেচের পানিসহ সব কিছুর দাম বেশি। উৎপাদন খরচ অনুয়ায়ী ধানের দাম কম। গত বছর দুবার বন্যার সঙ্গে যুদ্ধ করে ভালো ফলন হলেও মেলেনি উপযুক্ত দাম। বাঁচার তাগিদে শীত ও সব খরচ উপেক্ষা করে ইরি-বোরোর চাষ করছেন কৃষকরা।

সাঘাটা উপজেলার গিদারী ইউনিয়নের আনালের ছড়া গ্রামের কৃষক মো: দুদু মিয়া বলেন, ভালো ফলনের আশায় শীত ও উৎপাদন খরচ উপেক্ষা করে কঠোর পরিশ্রম করছি আমরা। এরপরও ধান বিক্রির সময় উপযুক্ত দাম থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। এখন ধান চাষ করে উৎপাদন খরচই ওঠে না।

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের কৃষক আবু তালেব বলেন, ধান চাষ করে ছেলে-মেয়ের লেখাপড়ার খরচ ও সংসার চালানো এখন খুবই কষ্টকর। কারণ সরকারিভাবে লটারিতে ধান কেনা হলেও ন্যায্য দাম পাই না আমরা। নির্দিষ্ট ধান চাষিদের তালিকা না করে একসঙ্গে সব কৃষক ও চাষির অংশগ্রহণে লটারি করা হয়। এতে বেশিরভাগ চাষি ধান বিক্রি থেকে বঞ্চিত হন।

সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের চাষি আব্দুল সালাম বলেন, হাড় কাঁপানো শীত আর কুয়াশাযুক্ত মাঠে কাজ করতে বেশি টাকা নিচ্ছেন শ্রমিকরা। প্রতি বস্তা ইউরিয়া সারের দাম ১২৫০ টাকা, জমিতে সেচ দিতে খরচ ২৫০০ থেকে ৩০০০টাকা, বীজ বোপন, চারা রোপণ ও জমিতে চাষ দিয়ে অতিরিক্ত খরচ নেয়া হয়। বোরো মৌসুমের শুরুতেই বেড়ে গেছে উৎপাদন খরচ। ধান কাটার সময় দেখা যাবে বাজারে দাম নেই। তখন আমাদের সব কষ্ট মাটি হয়ে যায়।

গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক বলেন, এ বছর এক লাখ ৩০ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। শীতের কারণে ইরি-বোরোর চারা নষ্ট হলেও সংকট হবে না। এবারও ইরি-বোরোর চাষ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।

তিনি বলেন, শ্রমিক ও উৎপাদন খরচ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে ধানের দামও। কাজেই কৃষকদের হতাশ না হয়ে বোরো চাষ অব্যাহত রাখার পরামর্শ দেন তিনি।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow