নারী-শিশু ধর্ষণ এবং সহিংসতায় জামায়াতের ‘উদ্বেগ’

দেশে নারী ও শিশু ধর্ষণ এবং নারীর প্রতি সহিংসতা বেড়ে যাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। রোববার (৯ মার্চ) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার অবিলম্বে এর বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, গত ৫ মার্চ দিবাগত রাতে মাগুরা সদরে বড় বোনের বাড়িতে বেড়াতে এসে ৮ বছরের এক শিশু ধর্ষণের শিকার হয়। বর্তমানে মারাত্মক আহত অবস্থায় শিশুটি চিকিৎসাধীন আছে। সে এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। এদিকে শনিবার (৮ মার্চ) রাতে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে ৪ মাসের এক অন্তঃসত্ত্বা নারীকে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করে দেয়ার নামে পানগাঁও ঋষিপাড়া এলাকার একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে ডেকে নিয়ে কয়েকজন কুলাঙ্গার পালাক্রমে ধর্ষণ করেছে। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে।
বিবৃতিতে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আরও বলেন, অপর এক ঘটনায় গত ৫ মার্চ দুপুর দেড়টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে এক ঢাবি শিক্ষার্থীকে ‘ওড়না ঠিক নেই’ বলে নাজেহাল করা হয়। এসব ঘটনায় প্রমাণিত হয় দেশে নারী ধর্ষণ ও সহিংসতা বেড়ে গেছে। এইসব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় দেশবাসীর সঙ্গে আমরাও গভীরভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করছি।
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, মাগুরার ৮ বছরের শিশুর ধর্ষক ও ধর্ষণের সহযোগিতাকারীদের অপরাধ এক ও অভিন্ন। এদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। এরকম ধর্ষক নামের নিকৃষ্টদেরকে পাকড়াও করে দ্রুত বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
তিনি বলেন, বাস, ট্রেন, লঞ্চ, অফিস, বাসা-বাড়ি, স্কুল-কলেজ, মাদরাসা কোথাও আজ নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা নেই। সারাদেশে যে অবস্থা বিরাজ করছে, তার খণ্ডিতাংশই সংবাদপত্র ও মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়। বাস্তব অবস্থা আরও ভয়াবহ। নারী ধর্ষণ ও নারীর প্রতি সহিংসতা একটি মারাত্মক জাতীয় সমস্যায় পরিণত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ইমাম, খতিব ও ধর্মীয় ব্যক্তিত্বসহ সমাজের সচেতন নাগরিকদেরকে ধর্ষকদের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। ধর্ষকদের ঘৃণা ও সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, নৈতিক অবক্ষয়ের কারণেই সমাজে নারী ও শিশু ধর্ষণ, হত্যা, ছিনতাই, গুম, এসিড সন্ত্রাস ইত্যাদি বেড়ে যাচ্ছে। এ অবস্থার জন্য দায়ী নীতিহীন শিক্ষা ও সহশিক্ষা ব্যবস্থা, মাদকাসক্তি, সিনেমা এবং নাটকে অশালীন দৃশ্য প্রচার। এ অবস্থা থেকে একমাত্র কুরআন-সুন্নাহ ভিত্তিক ইসলামি শিক্ষা ব্যবস্থাই মানুষকে মুক্তি দিতে পারে। নৈতিক শিক্ষা দিয়ে মানুষের বিবেককে জাগ্রত করে তাদের মধ্যে মনুষ্যত্ব, মানবিক মূল্যবোধ ও আল্লাহর ভয় সৃষ্টি করতে হবে। সমাজের সর্বস্তরে কুরআন-সুন্নাহর আলোকে ইসলামি নীতি-আদর্শ অনুসরণের ওপর বিশেষভাবে গুরুত্বারোপ করতে হবে। তাহলেই এ অবস্থার অবসান হতে পারে।
বিবৃতিতে মাগুরায় শিশু ধর্ষণে জড়িতদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নিয়ে দেশে নারী ও কন্যা শিশু ধর্ষণ এবং হত্যা বন্ধের ব্যাপারে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার জোর আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।
What's Your Reaction?






