বিএনপির দুগ্রুপের সংঘর্ষে আহত ২৫, অর্ধ-শতাধিক মোটরসাইকেল ভাঙচুর

Jul 13, 2025 - 01:12
 0  2
বিএনপির দুগ্রুপের সংঘর্ষে আহত ২৫, অর্ধ-শতাধিক মোটরসাইকেল ভাঙচুর
ছবি : সংগৃহীত

দিনাজপুর প্রতিনিধি

দিনাজপুর-৪ আসনে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন বিরোধের জেরে দলটির দু‘পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী কর্নেল (অব.) মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী, জেলা বিএনপির সহসভাপতি মিজানুর রহমান চৌধুরী, উপজেলা বিএনপির সদস্য ও শ্রমিক নেতা মহসিন আলীসহ অন্তত ২৫ জন নেতাকর্মী আহত হন এবং অর্ধ-শতাধিক মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। শুক্রবার (১১ জুলাই) রাতে দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার ভাবকী ইউনিয়নের কাচিনীয়া বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।  

প্রত্যক্ষদর্শী ও নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, কর্নেল মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর অনুসারী ও ভাবকী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হিসেবে স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তিতে আব্দুল জলিল শাহ ইউনিয়নের তিনটি স্থানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা প্রচারের জন্য সভা আয়োজনের ঘোষণা দেন। তবে এ নিয়ে বিরোধ দেখা দেয় সাবেক সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য আখতারুজ্জামান মিয়া গ্রুপের নেতাকর্মীদের সঙ্গে। তারা দাবি করেন, আব্দুল জলিল শাহ সাবেক সভাপতি এবং বর্তমানে তিনি উপজেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। ইউনিয়ন বিএনপির নেতৃত্বে আছেন মিয়া গ্রুপের অনুসারী নাসির উদ্দিন, সেলিম শাহ, তহিদুল ইসলাম তহি ও জাকারিয়া ইসলাম। এই বিরোধের জেরে গতকাল সকালে উপজেলা বিএনপির সদস্য আব্দুল জলিল শাহ ও ওয়ার্ড বিএনপি নেতা আশরাফ আলী মারধরের শিকার হন। পরে তারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন।

ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে সন্ধ্যায় কাচিনীয়া বাজারে এক প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে কর্নেল গ্রুপ। এতে অংশ নেন মনোনয়নপ্রত্যাশী কর্নেল (অব.) মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী, জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান চৌধুরী, ইউপি চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক চৌধুরী, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য শাহরিয়ার জামান শাহ নিপুণসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।

সভা শেষে মিয়া গ্রুপের অনুসারীরা কর্নেল গ্রুপের নেতাকর্মীদের ওপর অতর্কিতে হামলা চালায়। এতে উপজেলা বিএনপির সদস্য মহসীন আলী শাহ, ছাত্রদল নেতা মেহেদী হাসান মানিকসহ অন্তত ২৫ জন গুরুতর আহত হন এবং প্রায় অর্ধ শতাধিক মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। সংঘর্ষের সময় কর্নেল মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী ও মিজানুর রহমান চৌধুরী প্রায় দেড় ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকেন। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এ বিষয়ে কর্নেল (অব.) মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৩১ দফার প্রচার ও তৃণমূল বিএনপিকে সংগঠিত করতে গিয়ে সাবেক সংসদ সদস্য আখতারুজ্জামান মিয়ার প্ররোচনায় আমরা হামলার শিকার হয়েছি। এটা গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক কাজের ওপর সরাসরি আঘাত। এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সেই সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই। 

এবিষয়ে মিয়া গ্রুপের অনুসারী জেলা বিএনপির অর্থনৈতিক সম্পাদক ও ভাবকী ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল আলম তুহিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

খানসামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজমুল হক বলেন, ঘটনার সময় তাৎক্ষণিকভাবে সেনাবাহিনী ও পুলিশ উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow