মামলা তুলে নিতে বাদীকে ভয়ংকর আস্তানায় নিয়ে নির্যাতন, তদন্তের নির্দেশ আদালতের
এম এ হান্নান, শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে মামলা তুলে নিতে বাদী এবং স্বাক্ষীদের রায়বাড়ি জঙ্গলে অপরাধীদের ভয়ংকর আস্তানায় তুলে নিয়ে ইলেকট্রিক শক দিয়ে নির্যাতনের ঘটনায় স্বপ্রণোদিত হয়ে জড়িতেদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করে শাহজাদপুর থানার ওসিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
শাহজাদপুর চৌকি আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মোসলেম উদ্দীনের আদালত মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ১৫৬ (৩) ধারা অনুযায়ী বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেন।
শাহজাদপুর চৌকি আদালতের বেঞ্চ সহকারী মোঃ আনোয়ার হোসেন এ নিশ্চিত করে জানান, অনলাইন পত্রিকা ‘জনপদ সংবাদ’ এ প্রকাশিত রায়বাড়ির জঙ্গলে অপরাধীদের ভয়ংকর আস্তানায় মামলার বাদী এবং স্বাক্ষীদের তুলে নিয়ে ইলেকট্রিক শক দিয়ে নির্যাতন 'শিরোনামের প্রতিবেদন আদালতের দৃষ্টিগোচর হওয়ায় (৩০ ডিসেম্বর) মঙ্গলবার বিজ্ঞ আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে তদন্ত করে ৩১ ডিসেম্বর মামলা FIR এর নির্দেশ দিয়েছেন।
এর আগে গণমাধ্যমে মামলার বাদী ও স্বাক্ষীদের রায়বাড়ির জঙ্গলের আস্তানায় তুলে নিয়ে অমানবিক নির্যাতনের বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। উক্ত প্রতিবেদন আদালতের দৃষ্টিগোচর হওয়ায় আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে তদন্তের আদেশ দেন। আদেশে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে সংবাদদাতা নিযুক্ত করে FIR করে সরেজমিনে তদন্ত এবং ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিচারক তাঁর আদেশে উল্লেখ করেন, মামলা তুলে নিতে বাদী মোঃ সোলাইমান হোসেনকে হুমকি, রায়বাড়ির জঙ্গলের 'বাঁশ ঝাড়ের' আস্তানায় আটকে রেখে ভ্যান চালক সোবহানের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় বৈদ্যুতিক শক দিয়ে গুরুতর আঘাতসহ নির্যাতন, মামলা না তুললে জানে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। অভিযোগগুলো দেশের প্রচলিত আইন ১৮৬০ এর ১৪৩, ৩২৩, ৩২৬, ৩৬৫, ৫০৬ (২), ৩৪ ধারার অভিযোগ এবং দণ্ডনীয় অপরাধ। এমতাবস্থায় ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ১৫৬ (৩) এর ক্ষমতাবলে বেলতৈল ইউনিয়নের মোঃ তোফাজ্জল হোসেন তোতা এবং রাসেলসহ অজ্ঞাত ৪/৫ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত করে একই আইনের ১৫৪ ধারা অনুযায়ী নিয়মিত মামলা FIR করার আদেশ দেন।
আদালতের আদেশের বিষয়ে জানতে চাইলে শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আদালতের কপি পেয়েছি, তদন্ত চলছে।’
উল্লেখ্য, শাহজাদপুর উপজেলার বেলতৈল ইউনিয়নের ঘোড়শাল গ্রামের রায়বাড়ির জঙ্গল বা ভোলার জঙ্গল খ্যাত বেত ও বাঁশের ঝাড়ের মধ্যে একটি চক্র আস্তানা বানিয়ে বিভিন্ন অপরাধ করে আসছে। রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে আস্তানায় আটকে রেখে অমানবিক নির্যাতন ইতোমধ্যেই এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।
What's Your Reaction?

