মূল্যস্ফীতি কমলেও চাল নিয়ে উদ্বেগ, পরিকল্পনা কমিশনের মাসিক প্রতিবেদন

Jul 28, 2025 - 14:48
 0  2
মূল্যস্ফীতি কমলেও চাল নিয়ে উদ্বেগ, পরিকল্পনা কমিশনের মাসিক প্রতিবেদন
ফাইল ছবি

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মূল্যস্ফীতি ধারাবাহিকভাবে কমে এসেছে। তবে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে চালের দামে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা। গত জুন মাসে মাঝারি, চিকন ও মোটা তিন ধরনের চালেই মূল্যস্ফীতি ১৫ শতাংশে পৌঁছেছে। গত ১২ মাসে ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে চালের মূল্যস্ফীতি। এটি কমার কোনো লক্ষণও নেই। এমনকি বোরো ধানের ফলনও চালের দামে কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি। 

পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) ইকোনমিক আপডেট অ্যান্ড আউটলুক-জুলাই ২০২৫ প্রতিবেদনে এ পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে মূল্যস্ফীতি ধারাবাহিকভাবে কমছে। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারির পর প্রথমবারের মতো গত জুন মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে, যা স্বস্তির বিষয়। মূল্যস্ফীতি কমার মূল কারণ বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্যের দাম কমে যাওয়া, বিশ্ববাজার স্থিতিশীল থাকা, সরবরাহ পরিস্থিতির উন্নতি, মিতব্যয়ী চাহিদা ব্যবস্থাপনা এবং ভারসাম্যপূর্ণ বিনিময় হার। এতে বলা হয়, মুদ্রানীতিতে ঘোষিত ৭-৮ শতাংশ মূল্যস্ফীতির যে লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে সেদিকেই অগ্রসর হচ্ছে সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি। বাংলাদেশ ব্যাংক গত ছয় মাম ধরে রেপো সুদহার ১০ শতাংশে রেখেছে। নীতি সুদহারসহ আরও কিছু উপাদান বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি কমাতে ভূমিকা রেখেছে।

তবে চালের দাম নিয়ে উদ্বেগের কথা জানিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, বাজার পরিস্থিতির ওপর নিবিড়ভাবে নজর রাখা জরুরি। গত জুন মাসে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি কমে ৮ শতাংশের নিচে নেমেছে। কিন্তু খাদ্য মূল্যস্ফীতিতে চালের অবদান মে মাসের ৪০ শতাংশ থেকে বেড়ে জুনে ৫০ শতাংশে পৌঁছেছে, যা একটি বড় উদ্বেগের কারণ। জুনে শুধু মাঝারি মানের চালই খাদ্য মূল্যস্ফীতিতে ২৫ শতাংশ অবদান রেখেছে। মোটা চালের অবদান ছিল ১৭ দশমিক ৮২ শতাংশ। ইউএসডিএ গ্রিন অ্যান্ড ফিড আপডেট অনুসারে, গত নভেম্বর মাসে মোটা চালের গড় দাম ছিল গত একদশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। সারের দাম, বীজ, শ্রম, সেচসহ উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়া, ফলন-পরবর্তী ক্ষতি, পরিবহন ব্যয় বাড়া, মজুদের প্রবণতা ইত্যাদি চালের বাজারকে প্রভাবিত করে থাকতে পারে। এ পরিস্থিতিতে বাজারে সরবরাহ ঘাটতি আছে কিনা অথবা সরবরাহ শৃঙ্খলে কোনো বিঘ্ন ঘটেছে কিনা তা আরও গভীরভাবে বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন। 

অর্থনীতির অন্যান্য দিক প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে বলা হয়, রেমিট্যান্স প্রবাহ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। ডলারের বিপরীতে টাকার মান কিছুটা বেড়েছে। ঘুরে দাঁড়িয়েছে পণ্য রপ্তানি খাতও। তবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) আন্দোলনের কারণে গত জুন মাসে সরকারের রাজস্ব আদায়ে বিঘ্ন ঘটেছে। 

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow