যুদ্ধাবস্থায় ভারত-পাকিস্তান, অবস্থান সম্পর্কে যা বলল চীন

May 1, 2025 - 17:52
 0  3
যুদ্ধাবস্থায় ভারত-পাকিস্তান, অবস্থান সম্পর্কে যা বলল চীন
ছবি : সংগৃহীত

গত ২২ এপ্রিল দুপুরে কাশ্মীরের পর্যটনস্থল পেহেলগামে সশস্ত্র হামলায় ২৬ জন নিহতের ঘটনায় ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্কে উত্তেজনার পারদ মুহূর্তের মধ্যে চরমে পৌঁছে যায়। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে মদদ দেয়ার অভিযোগ আনছে ভারত। অন্যদিকে, এই হামলাকে নয়াদিল্লির শাসনের প্রতি সশস্ত্র গোষ্ঠীর দীর্ঘ দিনের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ বলছে ইসলামাবাদ। সেই সঙ্গে কাশ্মীর সংকটকে ভয়াবহ মাত্রায় নিয়ে যাওয়া এবং কাশ্মীর শাসনে নয়াদিল্লির ব্যর্থতাকেই সশস্ত্র হামলার কারণ বলছে ইসলামাবাদ।

ভারত-পাকিস্তান যদি সরাসরি যুদ্ধ বা পারমাণবিক সংঘাতে জড়ায়, তাহলে এর প্রভাব শুধু এই দুই দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং গোটা দক্ষিণ এশিয়া ভয়াবহ তেজস্ক্রিয়তা, মানবিক বিপর্যয় ও অর্থনৈতিক সংকটে নিমজ্জিত হবে। গবেষণা অনুযায়ী, প্রায় পাঁচ কোটি মানুষ প্রাণ হারাতে পারে—যা এক অভাবনীয় মানবিক বিপর্যয়। তবে এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলোর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, তারা কি কোনো পক্ষ নেবে, নাকি সংঘাত নিরসনে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে বলিষ্ঠ এবং নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখবে। সেই সঙ্গে প্রশ্ন উঠেছে, গোটা দক্ষিণ এশিয়ায় ভূ-রাজনীতিতে সবচেয়ে বেশি প্রভাবশালী দেশ চীন এই সংঘাতে কী ভূমিকা রাখবে। 

এমন পরিস্থিতিতে, লাহোরে নিযুক্ত চীনা কনসাল জেনারেল ঝাও শিরেন এই সংকটে বেইজিংয়ের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। তিনি জানান, পাকিস্তানের যেকোনো পরিস্থিতিতে চীন দেশটির পাশে থাকবে। কৌশলগত সহযোগিতা, নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির বিষয়ে চীন পাকিস্তানের সঙ্গে ছিল, আছে এবং থাকবে। একইসঙ্গে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে সংলাপ ও কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ওপরও জোর দিয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার (১ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল।

প্রতিবেদন বলা হয়, সব পরিস্থিতিতে- সেটি হোক বিজয় কিংবা পরীক্ষার মুহূর্তে- এ ক্ষেত্রে পাকিস্তানের পাশে থাকার জন্য তার দেশের অটল প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন লাহোরে নিযুক্ত চীনের কনসাল জেনারেল ঝাও শিরেন। একই সঙ্গে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে সংলাপ এবং কূটনীতির পক্ষেও কথা বলেছেন তিনি। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, যুদ্ধ কোনো সমাধান নয় এবং উভয় দেশকে গঠনমূলক এবং শান্তিপূর্ণভাবে এগিয়ে যাওয়ার পথ খুঁজে বের করতে হবে।
 
পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) পাঞ্জাবের অর্থ সম্পাদক আহমেদ জাওয়াদ রানার বাসভবনে অনুষ্ঠিত এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ঝাও চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর (সিপিইসি), অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং জাতীয় নিরাপত্তা অবকাঠামোসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ইসলামাবাদের সঙ্গে বেইজিংয়ের দীর্ঘস্থায়ী অংশীদারত্বের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, কৌশলগত সহযোগিতা, নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির বিষয়ে চীন পাকিস্তানের সঙ্গে ছিল, আছে এবং থাকবে।
 
আড়াই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা এই বৈঠকে বিভিন্ন জাতীয় ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা হয়েছে। ঝাও চীন ও পাকিস্তানের জনগণের মধ্যে গভীর বন্ধুত্বের কথা তুলে ধরেন এ সময়। তিনি বলেন, প্রত্যেক চীনা নাগরিক পাকিস্তানকে ভালোবাসে এবং পাকিস্তানি জনগণ চীনের প্রতি একই উষ্ণতা ও শ্রদ্ধার প্রতিদান দেয়। বৈঠকে আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ভূ-রাজনৈতিক উন্নয়নের বিষয়েও খোলামেলা মতবিনিময় হয়েছে। উভয় পক্ষই চীন ও পাকিস্তানের মধ্যে স্থায়ী বন্ধুত্বের পুনর্ব্যক্ত করে বৈঠকটি শেষ করেন।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow