জুনেই বাংলাদেশের জার্সিতে অভিষেক সামিত সোমের!

এক হামজা চৌধুরীর আগমনে বদলে গেছে বাংলাদেশ ফুটবলের চেহারা। এরপর থেকেই অনেক প্রবাসী ফুটবলার বাংলাদেশের জার্সি গায়ে চাপানোর আগ্রহ পোষণ করছেন। যাদের মধ্যে কানাডা প্রবাসী সামিত সোমকে জাতীয় দলে নেয়ার জন্য প্রায় তিন সপ্তাহ আগে থেকেই কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। সেই প্রক্রিয়ায় আরও একধাপ এগিয়ে গেছে তাবিথ আওয়ালের ফেডারেশন।
সামিত সোম কানাডা জাতীয় দলের জার্সিতে ২ ম্যাচ খেলেছেন। ক্লাব ফুটবলে খেলেন কানাডার প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব ক্যাভালরি এফসিতে। বাংলাদেশের জার্সিতে খেলার জন্য তাই কানাডা ফুটবল ফেডারেশনের অনাপত্তিপত্রের আবেদন করেছিলেন তিনি। সেজন্য প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্রও পেয়েছেন ২৭ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার। এবার ফিফার ছাড়পত্র আগে পেতে দ্রুতই আবেদন করবে ফুটবল ফেডারেশন।
সামিত সোমের বিষয়ে বাফুফের পক্ষে সবকিছু দেখভাল করছেন সহ-সভাপতি ফাহাদ করিম। বৃহস্পতিবার (১ মে) সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, 'আজ সকালে আমরা কানাডা ফুটবল ফেডারেশনের চিঠি পেয়েছি। সামিত কানাডা জাতীয় দলের হয়ে দুই ম্যাচে কত মিনিট, কোন প্রতিপক্ষের সঙ্গে খেলেছেন এর সম্পূর্ণ বিবরণ রয়েছে। আগামীকাল সামিতের পাসপোর্টের জন্য আবেদন করার কথা।'
প্যারাগুয়েতে আগামী ১৩-১৪ মে অনুষ্ঠিত হবে ফিফার কংগ্রেস। সেখানে এ নিয়ে কাজ করবেন বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল। তবে জুনের উইন্ডোতে জাতীয় দলে সামিত সুযোগ পাবেন কি না, সেটি নিশ্চিত করে বলতে পারেননি বাফুফের সহ-সভাপতি, '(সামিত) পাসপোর্ট হওয়ার পর আমরা ফিফায় আবেদন করব। ১০ জুন ঢাকায় ম্যাচ খেলানোর জন্য বাফুফে সর্বাত্মক চেষ্টা করছে।'
এক দেশে জন্মগ্রহণ করে অন্য দেশের হয়ে খেলার পর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে পাসপোর্ট। ইংলিশ প্রিমিয়ার ফুটবল লিগে খেলা ফুটবলার হামজা চৌধুরীর পাসপোর্ট হওয়ার পর ইংল্যান্ড ফুটবল ফেডারেশনের অনাপত্তিপত্র নিয়েছিল বাফুফে। সামিতের ক্ষেত্রে পাসপোর্ট পাওয়ার আগেই বাংলাদেশের জন্ম নিবন্ধন দিয়ে কানাডা ফুটবল ফেডারেশনের কাছে আবেদন করেছিল বাফুফে।
সামিতের প্রক্রিয়া নিয়ে ফাহাদ করিম বলেন, 'সাধারণত পাসপোর্টের পরই ঐ দেশের অনাপত্তিপত্র আবেদন করা হয়। সামিত যেহেতু আর কানাডার হয়ে খেলবেন না বাংলাদেশের হয়ে খেলতে চান। তার এই সিদ্ধান্ত যেহেতু চূড়ান্ত তাই পাসপোর্টের জন্য অপেক্ষা না করে সামিতের বাংলাদেশের হয়ে খেলার ডিক্লেয়ারেশন ও জন্ম নিবন্ধন কাগজ দিয়ে আমরা আবেদন করি। কানাডার ফেডারেশনে মেইল করার পর আমরা সুনির্দিষ্ট ব্যক্তি/বিভাগের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করি। তাদের সঙ্গে যোগাযোগের পর আশা করছিলাম আগামী সোম-মঙ্গলবার পেতে পারি। আজ সকালেই পেলাম।'
জানা গেছে, কানাডায় বাংলাদেশ হাই কমিশন সামিতের পাসপোর্টের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। বাফুফে আশা করছে আসন্ন সপ্তাহে সামিতের বাংলাদেশের পাসপোর্ট হয়ে যাবে। পাসপোর্ট হওয়ার পর কানাডার অনাপত্তিপত্র, সামিত ও তার পরিবারের বাংলাদেশ সংক্রান্ত কাগজপত্র দিয়ে ফিফার প্লেয়ার স্ট্যাটাস কমিটির কাছে আবেদন করবে। ফিফা থেকে সবুজ সংকেত পেলেই সামিতের বাংলাদেশের হয়ে খেলতে আর কোনো বাধা থাকবে না।
১০ জুন ঢাকায় বাংলাদেশের সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচ। সেই ম্যাচের জন্য খেলোয়াড় নিবন্ধনের সময়সীমা ৩ জুন। ফিফা প্লেয়ার স্ট্যাটাস কমিটির কাছ থেকে ২ জুনের মধ্যে বাফুফে ইতিবাচক সংবাদ পেলে সামিতকে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের জন্য নিবন্ধন করতে পারবে। হামজা চৌধুরীর ক্ষেত্রে ফিফা প্লেয়ার স্ট্যাটাস কমিটি প্রায় তিন মাসের বেশি সময় নিয়েছিল। সামিতের ক্ষেত্রে কি হয় সেটাই দেখার বিষয়।
What's Your Reaction?






