কামারখন্দে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে জনতার হাতে আটক ৩ যুবক, মুচলেকা দিয়ে মুক্ত

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
কখনো সাংবাদিক, কখনো জিয়া সাংস্কৃতিক পরিষদ (জিসাস)’র নেতা এমন বহুরুপী পরিচয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে চাঁদাবাজি করছে ৩ যুবক। চাঁদাবাজি করতে গিয়ে কামারখন্দের রায়দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদে ৩ যুবককে গণধোলাই দিয়ে ছেড়ে দিয়েছে জনতা।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বিকেল ৩ টার দিকে ঘটে এমন ঘটনা। গণধোলায়ের শিকার হওয়া তিন যুবক হলেন- সিরাজগঞ্জ পৌর মালশাপাড়ার মৃত রইচ উদ্দিন এর ছেলে জাহিদুল হক, পৌর মাছুমপুর কারিগরপাড়া গ্রামের ফটিক এর ছেলে ইয়ামিন (বিপ্লব) ও বহুলী ইউনিয়নের হরিণাহাটা গ্রামের মোবারক এর ছেলে লিটন সেখ।
বিএনপির অঙ্গ বা সহযোগি সংগঠন জিয়া সাংস্কৃতিক সংগঠনের সিরাজগঞ্জ শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে জাহিদুল হক, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হিসেবে ইয়ামিন হোসেন বিপ্লব ও সদস্য হিসেবে লিটন সেখ পরিচয় দিয়েও চাঁদাবাজি করার একাধিক অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
জানা যায়, ঈদুল আযহা উপলক্ষে সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার রায়দৌলতপুর ভিজিএফের চাল বিতরণের সময় চাউলের ওজন কম দেওয়া হচ্ছে মর্মে ৩ যুবক ইউপি প্যানেল চেয়ারম্যান এর নিকট মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে তিন যুবক। প্যানেল চেয়ারম্যান আবু তাহের এই যুবককে কিছু টাকাও প্রদান করে। তবে চাঁদা গ্রহণ করার সময় স্থানীয় জনতা দেখতে পেলে ৩ যুবককে গণধোলাই দিতে শুরু করে। গণধোলাইয়ের এক পর্যায়ে স্থানীয়রা ইউনিয়ন পরিষদের একটি রুমে তাদের আটক করে রাখে। আটককৃতরা সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার কারণে কামারখন্দ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক রাজকে অবগত করলে তিনি পরিষদে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে উত্তেজিত জনতাকে কৌশলে বুঝিয়ে আটককৃতদের মুক্ত করে দেন।
ছাত্র প্রতিনিধি নাহিদুর রহমান বলেন, পরিষদে গিয়ে এই তিন যুবক চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় ইউপি সদস্যদের বিভিন্ন রকমের ভয়ভীতি দেখায়। কৌশলে তিন যুবকের চাঁদা দেওয়ার সময় প্রমাণ স্বরুপ ছবি তোলা হয়। চাঁদা নেওয়ার সময় উপস্থিত জনতা তিন যুবক ধরে উত্তম মধ্যম দিতে থাকে এবং ইউপি পরিষদের চেয়ারম্যানের কক্ষে আটক করে রাখে। পরবর্তীতে সকলের উপস্থিতিতে মুচলেকা দিয়ে তাদের মুক্ত করে দেওয়া হয়।
কামারখন্দ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আজ জামতৈল ও রায়দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভিজিএফের চাল বিতরণ করা হচ্ছে। এই তিন যুবক সাংবাদিক পরিচয়ে চাল বিতরণের সময় মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দাবি করায় জনতা এই তিন যুবককে গণধোলাই প্রদান করে। পরবর্তীতে মোবাইল ফোনে আমাকে অবগত করলে, আমি স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে উত্তেজিত জনতাকে কৌশলে বুঝিয়ে ৩ যুবকের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে তাদের মুক্ত করে দেই। ইতিপূর্বেও এই তিন যুবকের নামে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে টাকা নেওয়ার অভিযোগ আমি পেয়েছি।
এ বিষয়ে জানতে রায়দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো: আবু তাহের সেখের সাথে মুঠো ফোনে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেনি।
উলেখ্য, এই ৩ যুবক কখনো সাংবাদিক আবার কখনো জিয়া সাংস্কৃতিক সংগঠনের পরিচয় দিয়ে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার রতনকান্দি ইউনিয়নের রুপের বেড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রিপন, বহুলী ইউনিয়নের হরিণা দাখিল মাদ্রাসার সুপার ফরিদুল ইসলাম ও আলমপুর বাজারে আবুল কালাম কষাইয়ের নামে সিরাজগঞ্জ সদর থানায় সাধারণ ডায়েরী করে মোটা অংকের চাঁদা হাতিয়ে নেয়।
What's Your Reaction?






