জুলাই সনদকে আইনি বৈধতা দিতে গণভোটই একমাত্র পথ : গোলাম পরওয়ার

Nov 14, 2025 - 23:20
 0  2
জুলাই সনদকে আইনি বৈধতা দিতে গণভোটই একমাত্র পথ : গোলাম পরওয়ার
ছবি : সংগৃহীত

জুলাই সনদকে আইনি ভিত্তি দিতে হলে জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজন ছাড়া বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেন, একই দিনে জাতীয় নির্বাচনের ভোট ও গণভোট আয়োজন জনগণকে বিভ্রান্ত করার শামিল।

শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় খুলনা-৩ আসনের দৌলতপুর থানাধীন শহিদ মিনার চত্বরে দৌলতপুর থানা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে আয়োজিত জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

গোলাম পরওয়ার বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট না দিলে জাতিকে গভীর সংকটে ফেলা হবে। প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে সংশোধন এনে এখনো এই ভুল সংশোধনের সুযোগ রয়েছে। একই দিনে দুটি ভোট আয়োজনের সিদ্ধান্তকে তিনি ‘অযৌক্তিক’ ও ‘জনবিরোধী’ বলে উল্লেখ করেন।

তিনি আরও বলেন, যারা জুলাই সনদ মানতে চায় না, তাদের জন্য ২০২৬ সালের জাতীয় নির্বাচন নয়। জনগণকে ধোঁকার মধ্যে রাখা যাবে না। গণভোটের আগে জাতীয় নির্বাচন দেয়া মানেই জুলাই সনদের বৈধতা এড়িয়ে যাওয়া।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, একটি বড় রাজনৈতিক দল নাকি সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টার সঙ্গে ‘গোপন বৈঠক’ করে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে সতর্ক করে তিনি বলেন, নির্বাচনের দাবি ও আন্দোলন দুটোই একসঙ্গে চলবে। গণভোট ছাড়া নির্বাচন হলে তা হবে গণতন্ত্রের জন্য বড় হুমকি।

মিয়া গোলাম পরওয়ার আরও বলেন, আগামী ১৬ নভেম্বর দেশের আটটি ইসলামী রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা বৈঠকে বসবেন। সেখানে পরবর্তী করণীয় ও সম্ভাব্য আন্দোলনের রূপরেখা নির্ধারণ করা হবে। তিনি বলেন, যে সিদ্ধান্তই আসুক, সবাইকে সেই সিদ্ধান্তের আলোকে আন্দোলনে যুক্ত হতে হবে।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন দৌলতপুর থানা জামায়াতে ইসলামীর আমির মুহাম্মাদ মুশাররফ আনসারী। প্রধান বক্তা ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমির অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান। মহানগরী ব্যবসায়ী থানার সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান স্বপনের পরিচালনায় বক্তব্য দেন ও উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর খুলনা অঞ্চল টিম সদস্য মাস্টার শফিকুল আলম, খুলনা মহানগরী ছাত্রশিবিরের সভাপতি আরাফাত হোসেন মিলন, নায়েবে আমীর অধ্যাপক নজিবুর রহমান, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও মহানগরী সেক্রেটারি এডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলাল, সহকারী সেক্রেটারি এডভোকেট মুহাম্মদ শাহ আলম, প্রিন্সিপাল শেখ জাহাঙ্গীর আলম, আজিজুল ইসলাম ফারাজী, খুলনা জেলা সহকারী সেক্রেটারি গাউসুল আযম হাদী, অধ্যাপক শহীদুল ইসলাম, জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি ইউসুফ ফকির, মহানগরী সেক্রেটারি রাকিব হাসান, মহানগরী যুববিভাগের সভাপতি মুকাররম বিল্লাহ আনসারী, কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আবু বকর সিদ্দিক, অধ্যাপক ইকবাল হোসেন, মাওলানা শাহারুল ইসলাম, মাওলানা শেখ মোহাম্মদ অলিউল্লাহ, খুলনা সদর থানা আমির এস এম হাফিজুর রহমান, খালিশপুর থানা আমির মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মামুন, দৌলতপুর থানা সেক্রেটারি মাওলানা মহিউদ্দিন, কাউন্সিলর প্রার্থী হুমায়ুন কবীর, ডা. সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া, বিএল কলেজের সাবেক ভিপি এডভোকেট শেখ জাকিরুল ইসলাম, সাবেক ছাত্রনেতা মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী, মতিয়ার রহমান ও মাওলানা হাবিবুর রহমান প্রমুখ।

প্রধান বক্তা অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বলেন, মহান আল্লাহর ইচ্ছায় ও জনগণের ভালোবাসা এবং ভোটের মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি মুক্ত, ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক একটি আদর্শ রাষ্ট্র গঠন করবেন ইনশাআল্লাহ।

তিনি বলেন, মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে হলে সমাজে নেতৃত্বের পরিবর্তন জরুরি। তিনি আরও বলেন, আগামীর বাংলাদেশ যদি ঘুষ, দুর্নীতি ও চাঁদাবাজি মুক্ত না করা যায়, তাহলে দেশ ব্যর্থ হবে।

খুলনা-৩ আসনের এই এমপি প্রার্থী বলেন, আমরা এমন একটি রাষ্ট্র গড়ার স্বপ্ন দেখি যেখানে সত্য, ন্যায় ও নৈতিকতার ভিত্তিতে সমাজ পরিচালিত হবে। একটি কল্যাণভিত্তিক শাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলাই আমাদের অঙ্গীকার।

তিনি বলেন, আমি আপনাদের ভাই-আমার জীবন আপনাদের কল্যাণে উৎসর্গ করতে চাই। আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, উন্নয়ন, ন্যায়বিচার ও ইসলামী মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আপনাদের পাশে থাকব। ইনশাআল্লাহ, যদি আপনারা আমাকে নির্বাচিত করেন, তাহলে প্রতিটি উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে আপনাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ভিত্তিতে এগিয়ে যাব।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow