একজন "বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. নুরুন নবী" আমাদের অহংকার

Dec 5, 2024 - 21:22
Dec 5, 2024 - 21:26
 0  2
একজন "বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. নুরুন নবী" আমাদের অহংকার
ফাইল ছবি

একুশে পদকপ্রাপ্ত লেখক ও মুক্তিযোদ্ধা নূরুন নবীকে নিয়ে নির্মিত ১৯৭১ এ মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র ‘ড. নূরুন নবী: আজীবন মুক্তিযোদ্ধা’  প্রদর্শিত হয়েছে আমেরিকার অঙ্গরাজ্য ফ্লোরিডার ওয়েস্ট পাম বীচে।

গত ১৬ নভেম্বর মুভিস অব লেকওয়ার্থ এ সন্ধ্যা ৭ টার দিকে ড. নুরুন নবী'র উপর নির্মিত মুক্তিযুদ্বের অন্যতম ডকুৃমেন্টরী দেখতে সাউথ ফ্লোরিডার নানা সিটির নাগরিকরা উপস্থিত হন। 

ড. নুরুন নবী, একজন শুধু মুক্তিযোদ্ধা নন, তিনি মুক্তিযুদ্ব বিষয়ক বহু গ্রন্থের লেখক এবং একজন গবেষক। তিনি মুক্তিযুদ্ধটাকে বাংলা, ইংরেজী ও বহু ভাষায় লিখনির মাধ্যমে তার বইয়ে তুলে ধরেছেন।

একুশে পদকপ্রাপ্ত আমেরিকার মূলধারার রাজনীতিবিদ ড. নুরুন নবী একজন জীবন্ত কিংবদন্তি। ড. নুরুন নবী'র জীবন ও তার বৈচিত্র্যময় কর্মকাণ্ড অত্যন্ত সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এই ডকুমেন্টরীটা আগামী প্রজন্মের জন্য একটি মূল্যবান মুক্তিযুদ্বের দলিল। যারা গবেষণা করবেন আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে তারা উপকৃত হবেন এই প্রামান্যচিত্রটি দেখে।

ড. নূরুন নবী'র লেখা সাড়া জাগানো বই ‘বুলেট অব সেভেন্টি ওয়ান : অ্যা ফ্রিডম ফাইটার্স স্টোরি’ অবলম্বনে নির্মিত প্রামাণ্য চলচিত্রটির দৈর্ঘ্য ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিট। বাংলাদেশের গৌরবময় অর্জনের কালজয়ী দৃষ্টান্ত ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বিজয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে এ দেশের বীর মুক্তিযোদ্ধারা সাহসিকতার সঙ্গে সংগ্রাম করে এ বিজয় অর্জন করেন। যারা আত্মনিয়োগ করেছেন দেশ গড়ার কাজে ড. নূরুন নবী তাদের মধ্যে অন্যতম।

একুশে পদকপ্রাপ্ত, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিজ্ঞানী, রাজনীতিবিদ, সমাজকর্মী ও লেখক ড. নূরুন নবী। তার বর্ণাঢ্য ও সংগ্রামমুখর অনুকরণীয় জীবনের চিত্র দেখানো হয়েছে চলচ্চিত্রে। মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য ফার ইস্টার্ন ইকোনমিক রিভিউ-এ ড. নূরুন নবীকে টাঙ্গাইল মুক্তিবাহিনীর ব্রেইন হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।

এই ডকুমেন্ট্ররীর নাম করনেই বুঝা যায়, একটি তথ্যচিত্রের মাধ্যমে ড. নুরুন নবীর মুক্তিযুদ্ধকালীন সময় এবং পরবর্তীতে ৫৩ বছর তিনি কিভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সময়টাকে বহুল প্রচারে ভুমিকা রাখছেন। যা বাংলাদেশে খুবই বিরল। বিদেশে বসেও তিনি থেমে নেই, লিখে যাচ্ছেন। তিনি একজন আমেরিকান গবেষক। ড. নবী’র ৫৫ টি আবিষ্কৃত পেটেন্ট রয়েছে আমেরিকায়।

ডকুমেন্টরী প্রদর্শনির পর মুল আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্যে ড. নুরুন নবী, ‘‘বলেন মুক্তিযুদ্বটা আপনারা যেমন করে নানা ডকুমেন্ট্রিতে দেখেন বাস্তবটা আরো কঠিন ছিল। অনেক ত্যাগ ও কষ্টের এই ৯ (নয়) মাসের যুদ্ধ।’’

তিনি বলেন, ‘‘স্বাধিনতাটা যে কি ছিল সেটা মুক্তিযোদ্বারাই জানেন। বঙ্গবন্ধুর কি অবদান, কি ত্যাগ এই জাতির জন্য তা এই প্রজন্ম বুঝবে না। আমি চেষ্টা করেছি আমার লেখায় ও এই ডকুমেন্ট্রিতে তুলে ধরতে।

এই ডকুমেন্ট্রিটা আপনারা সবাইকে দেখার সুযোগ করে দেন। আর মনে রাখবেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বিশ্ব ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছে।’’

ডক্টর নুরুন নবী হুশিয়ার করে বলেন, ‘‘আপনারা সজাগ থাকবেন। বাংলাদেশে বর্তমানে যে সরকারে আছে, তারা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করতে চাইবে। জাতির জনক ও মুক্তিযোদ্ধাদের অবদানকে অবহেলা করবে।’’

আমন্ত্রিত বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন- বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারন সম্পাদক রানা হাসান মাহমুদ, নির্মাতা নাদিম ইকবাল, সহকারি নির্মাতা নুসরাত চৌধুরী প্রমূখ।

এ আয়োজনের অন্যতম উদ্যোক্তা ফ্লোরিডা স্টেট বঙ্গবন্ধু পরিষদ। ইউএসএ আওয়ামীলীগ দক্ষিন শাখার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এম ফজলুর রহমানের অনুপ্ররনায় বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি একরামুল ইসলাম উূইয়ার উদ্যোগে প্রামান্য চিত্রটি প্রদর্শিত হয়। সমন্বয়ে ছিলেন ফ্লোরিডা স্টেট আওয়ামী লীগ এর যুগ্ম সাধারন সম্পাদক আনোয়ারুল খান দিপু। অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ প্রেসিডায়াম সদস্য মনজুরুল হক শাহীন, অর্থ ও পরিকল্পনা উপ-কমিটির সদস্য সাজ্জাদ হাসান।

প্রামন্যচিত্র পরিবেশনে সহায়তা করেন ফ্লোরিডা স্টেট আওয়ামা লীগ এর সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নান্নু আহমেদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা বুলবুল চৌধুরীসহ সভাপতি মীনু রহমান, ইমতিয়াজ হাসান, লিটন খান, কামাল ভূইয়া ,মোহাম্মদ জহির, রানা খান, শেখ বাবুল, বিন্তু খান, সাধারন সম্পাদক মুজিব উদ্দিন, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক আনোয়ারুল খান দিপু, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ সাজ্জাত, দপ্তর সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বাবু, প্রচার সম্পাদক টিপু আলম, শিক্ষা সম্পাদক মোজাম্মেল হক, সাংস্কৃতিক সম্পাদক মীম খান, বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারন সম্পাদক লেবু চৌধুরী, যুবলীগ সহ-সভাপতি ড. শাহিন, মহিলা আওয়ামী লীগ সভাপতি জেমী খান, যুব মহিলা লীগ সভাপতি চেমন ঊদ্দিন, সাধারন সম্পাদক এরিনা খান। বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান, নান্নু আহমেদ, বুলবুল চৌধুরী এবং নারী মুক্তিযোদ্ধা আফরোজা খানম তাদের মুক্তিযোদ্ধের সময়ের স্মৃতিচারণ করেন।

লেখক/ জুয়েল সাদত, সাংবাদিক ও কলামিস্ট ওরলান্ডো ফ্লোরিডা।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow