লাগামহীন নিত্যপণ্যের দাম, ক্রেতাদের নাভিশ্বাস

অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্বগ্রহণের পর বেশ স্বস্তিতেই ছিল দেশের নিত্যপণ্যের বাজার। তবে, অস্বস্তি শুরু হয়েছে গেল প্রায় তিনসপ্তাহ ধরে। এই সময়ে কেজিতে ২০ টাকা বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। আদা, মশুর ডাল কিংবা আমিষেও নেই স্বস্তি।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) বাণিজ্য উপদেষ্টা এক অনুষ্ঠানে বলেন, আমরা অনেক ক্ষেত্রেই অগ্রগামী হয়েছি। বাজার সিন্ডিকেটকে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছি। উপদেষ্টার এই বক্তব্যে স্বস্তি পাওয়ার কথা ছিল সাধারণ মানুষের। কিন্তু শনিবারের (৯ আগস্ট) বাজারজুড়ে অস্বস্তি আর দাম বৃদ্ধির চাপে অতিষ্ঠ সাধারণ ভোক্তারা।
তারা বলেন, কালকে শুনছি এক দাম, আজকে আরেক দাম। দাম অনেক বেশি, যার কারণে আমরা খাইতে পারিনা। বেশি দামে কিনতে আমাদের অনেক কষ্ট হয়। এভাবে যদি দাম বাড়ে তাহলে আমরা মধ্যবিত্তরা বাঁচবো কেমনে।
বৃষ্টি শুরু না হতেই এ বছর চড়া হতে থাকে শাক-সবজিসহ নানা পণ্যের দাম। কিন্তু, সপ্তাহখানেক ধরে সেই তালিকায় যোগ হয়েছে আদা-পেঁয়াজ, ব্রয়লার-সোনালী মুরগি কিংবা মশুর ডাল। টিসিবির হিসাব বলছে, মাসের ব্যবধানে ৫২টি পণ্যের মধ্যে দাম বেড়েছে ১৯ টির। সর্বোচ্চ ৪৫ শতাংশ বেড়েছে আদার দাম। এই সময়ে কেজিতে ২৫ টাকা বেড়ে পেঁয়াজের দর ঠেকেছে ৮০ টাকায়। মানভেদে কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে মশুর ডালও। ডিম আর মাংসও নেই হাতের নাগালে।
ভোক্তারা বলেন, নিশ্চয় এখানে কারো কোনো কারসাজি আছে, এরা তো খুচরা বিক্রি করে যারা মহাজনরাই এগুলো করে। বাজারে এলে একটা মিললে আরেকটা মিলানো যায় না। কামাই রুজি তো রোজ বাড়ে না।
টিসিবির বাজারমূল্যের বাইরে থাকা সবজির দাম আরও চড়া। এই সময়ে প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে ঢেঁড়স-পটলের কেজি ঠেকেছে ৮০ টাকায়। শসা, করলা, কাকরোল বিক্রি হচ্ছে শতটাকা পর্যন্ত। বেগুন ১৪০ আর কাঁচা মরিচ দুশো টাকার ঘরে।
ভোক্তারা বলেন, সবজির দাম বেশি নাগালের বাইরে, কিনতে গেলে হিমশিম খাচ্ছি। তাহলে আমরা গরিব মানুষরা খাবো কিভাবে।
নিত্যপণ্যের দাম যে বেড়েছে তার প্রমাণও পাওয়া যায় জুলাইয়ের মূল্যস্ফীতির তথ্যে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাজার ব্যবস্থাপনার উন্নতি না করা গেলে অধরাই থেকে যাবে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ।
রিসার্স অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের চেয়ারম্যান ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ মেজেনমেন্টকে কন্টিনিউ করতে হবে। চালের দামের ওপরেই নির্ভর করবে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ কীভাবে ম্যানেজ করতে পারবো।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের বাজার সংক্রান্ত যেসব মন্ত্রণালয় রয়েছে তাদের উচিত হবে আগস্ট মাসের ভিতরেই আগামী ছয় মাসের জন্য একটা পরিকল্পনা ঘোষণা করা। যাতে নির্বাচন কেন্দ্রিক কোনো প্রেশার আসলেও বাজার স্থিতিশীল থাকে। এদিকে গত কয়েক মাস ধরে বাড়তি চালের দাম, গেলো এক মাসে বেড়েছে আরও ৪ শতাংশ।
What's Your Reaction?






