৪ কোটি টাকা চাঁদাবাজি, বিএনপি নেতা জনি গ্রেপ্তার

যশোর প্রতিনিধি
যৌথ বাহিনীর অভিযানে যশোরের অভয়নগর উপজেলার আলোচিত বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান জনি গ্রেপ্তার হয়েছেন। একইসঙ্গে তার সহযোগী চলিশিয়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য তুহিনকে আটক করেছে করা হয়েছে ।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) ভোরে খুলনায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে এক ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে নির্যাতন ও হত্যার হুমকি দিয়ে চার কোটি টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে।
আটক আসাদুজ্জামান জনি, নওয়াপাড়া বাজার গরুহাটা এলাকার কামরুজ্জামান মজুমদারের ছেলে। অপরদিকে সাবেক ইউপি সদস্য তুহিন অভয়নগর উপজেলার চলিশিয়া ইউনিয়নের কোটা গ্রামের মাহমুদ শেখের ছেলে।
পুলিশ জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে জনি পলাতক ছিলেন। গত বছরের জুলাই মাসে নওয়াপাড়ার এক ব্যবসায়ীর স্ত্রী আসমা খাতুন অভিযোগ করেন যে, তার স্বামীকে অপহরণ করে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করা হয়। চাঁদা না দিলে তাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। এরপর তাকে বালুতে বুক পর্যন্ত পুঁতে রেখে কয়েক দফায় ৪ কোটি টাকা চাঁদা আদায় করা হয়। এই ঘটনায় আসাদুজ্জামান জনিসহ আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। পরে চলতি বছরের ৩ আগস্ট আসাদুজ্জামান জনিসহ মোট ৬ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়।
অভয়নগর থানার ওসি আব্দুল আলিম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পলাতক থাকার পর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে যৌথ বাহিনীর একটি দল আজ ভোরে খুলনায় অভিযান চালিয়ে জনিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। বর্তমানে পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে আরও কিছু মাদক ও চাঁদাবাজির অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তিনি বলেন , ৪ কোটি টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগে জনির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। সেই মামলার ভিত্তিতেই যৌথ বাহিনীর অভিযানে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে, চার কোটি টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগে থানায় মামলা হওয়ার পর আসাদুজ্জামান জনি পালিয়ে থাকলেও তার স্বজনরা তাকে নিরপরাধ দাবি করেছেন।
গত ১২ আগস্ট যশোর প্রেসক্লাবে ওই সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন জনির বোন মানি জারমিন ইলোরা। তিনি লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করেন, একটি কুচক্রী মহল রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য প্রচার করছে। ব্যবসায়ী শাহনেওয়াজ কবীর টিপু একজন চিহ্নিত প্রতারক। তিনি জনি ও তার পরিবারের সুনাম নষ্ট করার জন্য তিনি মিথ্যা নাটক সাজিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, নওয়াপাড়ার ব্যবসায়ী শাহনেওয়াজ কবীর টিপুকে অস্ত্রের মুখে বালুতে পুঁতে রেখে ৪ কোটি টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগ এনে টিপুর স্ত্রী আসমা খাতুন বাদী হয়ে গত ৩ আগস্ট অভয়নগর থানায় একটি মামলা করেন।
আসাদুজ্জামান জনি নওয়াপাড়া পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ২০২৪ সালের ২১ নভেম্বর আসাদুজ্জামান তার সাংগঠনিক পদ স্থগিত করা হয়।
What's Your Reaction?






