ঈদ যাত্রায় কিছুটা পরিবহন সংকট, কয়েকগুণ ভাড়া আদায়ের অভিযোগ

মোঃ মনির মন্ডল, সাভার
ঈদ যাত্রার দ্বিতীয় দিনেও বেড়েছে যাত্রীর চাপ। যাত্রীর তুলনায় পর্যাপ্ত পরিবহন কম থাকায় ভোগান্তি পড়েছে নাড়ীর টানে ঘরে ফেরা মানুষ। ফলে ভাড়া গুণতে হচ্ছে কয়েকগুণ। দুই'শ টাকার ভাড়া নয়'শ ও পাঁচ'শ টাকার ভাড়া ২ হাজার নিচ্ছে বলে দাবি যাত্রীদের।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঢাকা আরিচা, নবীগর-চন্দ্রা মহাসড়কের সাভার, নবীনগর, জিরানীবাজার ও বাইপাইল বাস স্ট্যান্ড ঘুরে দেখা যায়, যাত্রীদের উপচে পড়া ভীড়। কিন্তু সে তুলনায় সড়কে পরিবহন নেই। পরিবহন সংকটের মুখে প্রকৃত ভাড়ার প্রায় ৪ গুন বেশি নিচ্ছে পরিবহন সংশ্লিষ্টরা।
নবীনগর বাস স্ট্যান্ড থেকে গাইবান্ধা যাওয়ার জন্য বাসে উঠেছেন পোশাক শ্রমিক হাবিব। তিনি বলেন, সকাল ৮ টায় বাস স্ট্যান্ডে এসেছি। বাস পেয়েছি সকাল সাড়ে ১০ টায়। আগে সব চেয়ে ভাল পরিবহনে ভাড়া ছিল ৬৫০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা। কিন্তু আজ ভাড়া গুণতে হয়েছে ২ হাজার টাকা। পরিবহন সংকটের কারনে পরিবহন স্টাফরা যাত্রীদের পকেট কাটছেন। আমাদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিচ্ছেন তারা। তারা যাত্রীদের ওপর জুলুম করছেন।
বাইপাইল বাস স্ট্যান্ড থেকে দিনাজপুর যাওয়ার জন্য দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষা করছেন আব্দুর রহমান। তিনি বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে আছি। সড়কে যাত্রীর তুলনায় বাসের সংখ্যা অনেক কম। এই সুযোগটাই নেওয়ার চেষ্টা করছেন চালকরা। তারা ২০০ টাকার ভাড়া চাচ্ছেন ৭০০ টাকা থেকে ৯০০ টাকা। আমাদের প্রতি তারা যে অন্যায় করছেন এটা বোঝানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি। তাই এখনও দাঁড়িয়ে আছি।
ইতিহাস পরিবহনের চালক দিদার বলেন, দূরপাল্লার বাস সব গতকাল চলে গেছে। তাই সড়কে পরিবহনের সংখ্যা কম। যাত্রীদের চাপ অনেক বেশি। বাস দাঁড়াতেই প্রতিযোগীতা করে বাসে উঠছেন যাত্রীরা। তারা নিজেই বেশি ভাড়ার প্রস্তাব করছেন এবং বেশি ভাড়া দিয়ে গাড়িতে উঠছেন। আমরা যাত্রীদের কাছে জোর করে ভাড়া নিচ্ছি না। তারা নিজেরাই প্রতিযোগীতা করে ভাড়া বেশি দিয়ে সিট নিচ্ছেন।
অপর চালক মাহবুব বলেন, আমরা বছরে দুই ঈদে ব্যবসা করি। আমাদের তো মালিক বাড়তি বেতন দেন না। আমাদেরও স্ত্রী সন্তান ও পরিবার রয়েছে। বাংলাদেশের সবাই ঈদ উদযাপন করে। আমরাই শুধু করতে পারি না। আমরা পরিবারের আনন্দের দিকে তাকাই না, তাদের ছাড়াই ঈদ উদযাপন করি। যাত্রীদের নিয়ে গন্তব্যে গিয়ে অনেক সময় থাকতে হয় আবার তাদের নিয়ে ফিরে আসতে হয়। আমরা তো পরিবারের জন্য অন্তত কেনাকাটা করবো। এর জন্য হলেও ঈদে আমাদের একটু বেশি ভাড়া দেওয়া উচিৎ।
এ বিষয়ে সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালেহ আহমেদ বলেন, গতকাল রাত থেকে পরিবহনের তুলনায় যাত্রী চাপ বেশি হয়। যা সকাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। বেলা গড়ার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীর চাপ আরও বেড়ে যায়। সড়কে পরিবহন কম এ বিষয়টি ঠিক। কিন্তু বেশি ভাড়া আদায়ের ব্যাপারে এখনও কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
What's Your Reaction?






