স্ত্রী ও সন্তানকে বাহিরে রেখে ঘরে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে পাষন্ড স্বামী

সাজ্জাত বিশ্বাস, ঝালকাঠি
ঝালকাঠি সদর উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নের বাউকাঠি বাজার এলাকায় স্ত্রী ও দুই সন্তানকে বাহিরে রেখে ঘরে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে পাষন্ড স্বামী। ভুক্তভোগী রাবিয়া আক্তার সুমী সদর উপজেলার কীর্ত্তিপাশা ইউনিয়নের সুলতান হোসেন মুন্সির মেয়ে। ১৩ বছর আগে নবগ্রাম ইউনিয়নের বাউকাঠির মুনসুর আলীর পুত্র শাহীন হাওলাদারে সাথে পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয় এই দম্পতির।
বিয়ের এক বছর পর থেকে যৌতুক দাবিসহ খুটিনাটি বিষয় প্রায়ই স্ত্রীকে নির্যাতন করত স্বামী শাহিন হাওলাদার। শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছেন দির্ঘদিন ধরে এবং বাবার বাড়ি থেকে তিন লাখ টাকা এনে দিতে বলে। রাবিয়া আক্তার সুমীকে মেরে ফেলার হুমকি দেন,স্বামী শাহীন। তবুও শত নির্যাতন সহ্য করে স্বামীর সংসার করছেন রাবিয়া আক্তার সুমী। কোল জুড়ে এসেছে দুইটি ছেলে সংন্তান। বড় ছেলে মো. ইয়াছিন হাওলাদার (১০)আর ছোট ছেলের নাম ইয়ামিন হাওলাদার (০৫)। বড় ছেলে পঞ্চম শ্রেনী ও ছোট ছেলে প্রথম শ্রেনীর ছাত্র।
২০১৬ সালে আদালতে যৌতুক ও নারী নির্যাতন মামলা দায়ের করে। ২০১৭ সালের শেষের দিকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মধ্যস্ততায় আদালত থেকে মামলা তুলে নিলে পুনরায় আবার সংসার শুরু করে তারা। তবে সাম্প্রতি বিদেশে যাবার জন্য স্ত্রীর কাছে তিন লাখ টাকা দাবি করে শাহিন হাওলাদার। টাকা না পেয়ে স্ত্রী ও সন্তানদের ভরন পোষন বন্ধ করে দেয় শাহিন। বাধ্য হয়ে বাবার বাড়ি ও স্বামীর বাড়ি থেকে জীবিকা নির্বহ করছেন সুমী। ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে ও অক্টোবর মাসে স্বামীর বিরুদ্ধে নারী নির্যানত ও যৌতুকের পৃথক দুইটি মামলা করে। মামলা চলা কালে স্বামীর বাড়িতে থাকতেন সুমী। এক সপ্তাহ পূর্বে সন্তানদের নিয়ে বাবার বাড়িতে যান রাবিয়া আক্তার সুমী।
শুক্রবার সকালে সন্তানদের নিয়ে স্বামী বাড়িতে আসলে তাদের ঘরে ঢুকতে দেয়নি স্বামী শাহীন। দরজার বাহির থেকে তালা ঝুলিয়ে অন্যত্র সরে যায় শাহীন। সন্তানদের নিয়ে অসহায় হয়ে বাড়ির দরজায় নিরুপায় হয়ে বসে থাকেন। শিশু সন্তানরা তালার ধরে অপলোক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে।
অভিযোগ করে রাবিয়া আক্তার সুমী বলেন, একজন স্বামীর কর্তব্য তার স্ত্রী সন্তানকে ভালো রাখা,তাদের পড়া লেখা শিখিয়ে মানুষের মত মানুষ করা। তবে তিনি এগুলা না করে বাইরে বাইরে থাকে সব সময়। আমার দুই ছেলে ভরনপোষণ পড়ালেখার খরচ দেয়না খারাপ ব্যবহার করে। আমি আমার সন্তানদের নিয়ে স্বামীর সংসারে থাকে চাই।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. তসলিম হোসেন বলেন, এর আগেও শাহীন তার স্ত্রীকে নির্যাতন করেছে আমরা শালিশী করে মিমাংসা করে দিয়েছে। এর পরেও স্ত্রী ও সন্তানদের নির্যানত করছে শাহীন।
এ বিষয়ে স্বামী শাহীন হাওলাদারের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সুমীকে তালাক দেয়া হয়েছে। আমি কোন বক্তব্য দিতে চাই না। যা বক্তব্য আদালতে দিবো। অসহায় এ নারী শিশু সন্তানদের নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। স্থানীয়রা এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে।
What's Your Reaction?






