আমি শুধুই বাংলাদেশের এজেন্ট : আজমেরী হক বাঁধন

সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় চাউর হয়েছে যে, জনপ্রিয় অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন নাকি ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ সহ একাধিক দেশের গোয়েন্দা সংস্থার হয়ে কাজ করেছেন। এমন গুজব ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে। তবে এসব গুজবকে পুরোপুরি ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন বাঁধন নিজেই।
সোমবার (২৬ মে) ভোরে সামাজিক মাধ্যমে ‘আমার স্বীকারোক্তি’ শিরোনামে দেওয়া এক দীর্ঘ পোস্টে তিনি স্পষ্ট ভাষায় জানান, “আমি শুধুমাত্র বাংলাদেশের এজেন্ট।” পোস্টের শুরুতেই তিনি লেখেন, “আমি আমার দেশকে সত্যি অনেক ভালোবাসি।”
গুজব প্রসঙ্গে তিনি জানান, এসব অপপ্রচার তাকে ব্যথিত করেছে। তবে তিনি নেতিবাচকতার জবাব দিয়েছেন ইতিবাচক বার্তায়—দেশপ্রেম, দায়িত্ববোধ ও পরিবারের শিক্ষার কথা তুলে ধরে।
নিজের দেশপ্রেম কীভাবে গড়ে উঠেছে, সে প্রসঙ্গে বাঁধন লেখেন, “দেশপ্রেম জন্মগত নয়, এটা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গড়ে ওঠে।” তিনি বলেন, একসময় এক প্রভাবশালী ব্যক্তি তাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, “তুমি কবে থেকে এত দেশপ্রেমিক হয়ে উঠলে?” কারণ তিনি প্রায়ই দেশের নানা সমস্যা ও ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করতেন, যা তার মানসিক স্বাস্থ্যের উপরও প্রভাব ফেলত।
এই প্রসঙ্গে তিনি জানান, তার দেশপ্রেমের শিকড় নিহিত রয়েছে তার বাবার জীবনে ও জীবনদর্শনে। বাঁধনের ভাষায়, “আমার দেশপ্রেমের সবচেয়ে বড় উৎস আমার বাবা। তিনি দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে এসেছিলেন, কিন্তু পড়াশোনায় ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী। সব প্রতিকূলতা জয় করে তিনি বুয়েট-এ ভর্তি হন।”
বাবার সিদ্ধান্তে গড়ে উঠেছে বাঁধনের মন।পোস্টে বাঁধন আরও লেখেন, “বাবা বুয়েট থেকে অনার্স শেষ করে উচ্চশিক্ষার জন্য গিয়েছিলেন নেদারল্যান্ডসে। সেখানে ভালো চাকরি, আর্থিক স্বচ্ছলতা, এমনকি স্থায়ী হবার সুযোগও ছিল। কিন্তু বাবা দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা অনুভব করতেন। তিনি বলতেন, ‘আমি এই দেশের অর্থে পড়াশোনা করেছি, এখন ঋণ শোধ করার সময়। যদি ডাল-ভাত খেয়ে থাকতেও হয়, তবুও আমি এই দেশেই থাকব।’”
এই সিদ্ধান্তই বাঁধনের জীবনদর্শন বদলে দেয়। তিনি লেখেন, “আমি ছোটবেলা থেকেই বাবার মুখে এসব কথা শুনে এসেছি। বাবার সততা, নিষ্ঠা ও দেশপ্রেম আমাকে প্রভাবিত করেছে। তিনিই আমার জীবনের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা।”
সবশেষে বাঁধনের বার্তা সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া পোস্টের শেষাংশে বাঁধন লেখেন, “এই যাত্রায় আমার পিতা ছিলেন আমার প্রধান পথপ্রদর্শক। পাশাপাশি আমি আরও অনেক দেশপ্রেমিক মানুষের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছি, যারা নিঃস্বার্থভাবে তাদের দেশকে ভালোবাসেন। দেশপ্রেম জন্মগত নয়, এটা সময়ের সঙ্গে গড়ে ওঠে। আর সেই সময়ের মধ্য দিয়েই আমি আমার দেশকে গভীরভাবে ভালোবেসে ফেলেছি।”
What's Your Reaction?






