ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওপর ৫০% শুল্ক স্থগিত রাখতে সম্মত ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রোববার (২৫ মে) জানিয়েছেন যে তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) আমদানির ওপর ৫০% শুল্ক আগামী জুলাই ৯ পর্যন্ত স্থগিত রাখতে সম্মত হয়েছেন। এক প্রতিবেদনে ইউএস সংবাদমাধ্যম সিএনএন নিউজ এ তথ্য জানায়।
ট্রাম্প বারবার হুমকি দিয়ে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন, বাজারকে অস্থিতিশীল করেন এবং পরে তা পিছিয়ে নেন—এটি সেই ধারাবাহিকতারই সর্বশেষ উদাহরণ।
ট্রাম্প বলেছেন, ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লেয়েনের সাথে তার ‘খুব ভালো আলোচনা’ হয়েছে, যার ফলে এই স্থগিতাদেশ সম্ভব হয়েছে।
নিউ জার্সির মরিস্টাউন মিউনিসিপাল এয়ারপোর্টে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় ট্রাম্প বলেন, ‘ফন ডার লেয়েন বলেছেন তিনি আলোচনায় বসতে চান। জুলাই ৯ হবে সেই দিন, এটি তিনিই চেয়েছেন। আমরা কি জুন ১ থেকে জুলাই ৯ পর্যন্ত সময় বাড়াতে পারি? আমি তা মেনে নিয়েছি।’
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘তিনি (ফন ডার লেয়েন) বলেছেন আমরা দ্রুত একত্র হয়ে বসবো এবং কোনো সমাধানে পৌঁছাতে পারি কিনা তা দেখব।’
গত শুক্রবার পর্যন্ত ট্রাম্প বলেছিলেন যে তিনি ইইউর সাথে ‘কোনো চুক্তি চান না’, এবং জুন ১ থেকে ৫০% শুল্ক কার্যকর হবে। এর আগে, এপ্রিল মাসে তিনি ইইউ’র ওপর ২০% পারস্পরিক শুল্ক ঘোষণা করেছিলেন—যেটিও স্থগিত হয়েছিল, অন্যান্য তথাকথিত পারস্পরিক শুল্ক আরোপের মতোই।
সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার কয়েক মিনিট পর ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশাল অ্যাকাউন্টে পোস্ট করেন, ‘আলোচনা দ্রুত শুরু হবে।’
এর আগে, ফন ডার লেয়েন এক্সে পোস্ট করে জানান, ট্রাম্পের সাথে তার ‘বিস্তারিত আলোচনা’ হয়েছে।
তিনি লিখেন, ‘ইইউ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও ঘনিষ্ঠ বাণিজ্য সম্পর্ক ভাগ করে নেয়। ইউরোপ দ্রুত ও দৃঢ়তার সাথে আলোচনা এগিয়ে নিতে প্রস্তুত। একটি ভালো চুক্তির জন্য আমাদের জুলাই ৯ পর্যন্ত সময় প্রয়োজন।’
এই স্থগিতাদেশের খবরের পর এশিয়ার শেয়ারবাজারগুলো সোমবার (২৬ মে) কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী ছিল। জাপানের নিক্কেই ২২৫ সূচক প্রাথমিক লেনদেনে ০.৮% বৃদ্ধি পায়, দক্ষিণ কোরিয়ার কোস্পি ০.৯% ও চীনের শাংহাই কম্পোজিট ০.৩% বৃদ্ধি পায়। তাইওয়ানের টিএআইইএক্স এবং অস্ট্রেলিয়ার এসঅ্যান্ডপি/এএসএক্স ২০০ তুলনামূলকভাবে স্থির ছিল, হংকং-এর হ্যাং সেং সূচক ০.৩% নিচে নেমে যায়।
ট্রাম্প বিশেষভাবে ‘অর্থনৈতিক বাণিজ্য বাধা’ (যেমন: তিনি বারবার উল্লেখ করেন) এবং যেসব দেশ বা বাণিজ্য জোট মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাণিজ্য ঘাটতি তৈরি করে, সেগুলোকে সমস্যা হিসেবে দেখেন। মার্কিন বাণিজ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর ইইউ’র সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ২৩৬ বিলিয়ন ডলার বাণিজ্য ঘাটতি ছিল।
এদিন ট্রাম্প আরও বলেন যে, ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্টের সাম্প্রতিক মন্তব্য-’মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে টেক্সটাইল উৎপাদন ফিরিয়ে আনার প্রয়োজন নেই।’
ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা স্নিকার্স বা টি-শার্ট বানাতে চাই না। আমরা সামরিক সরঞ্জাম বানাতে চাই। আমরা বড় জিনিস বানাতে চাই। আমরা কম্পিউটার দিয়ে ‘এআই জিনিস’ (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) তৈরি করতে চাই।’
What's Your Reaction?






