খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে নয়াপল্টনে কান্নার রোল
বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুর সংবাদে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জড়ো হচ্ছেন নেতাকর্মীরা। প্রিয় নেত্রীর মৃত্যুতে কান্নার রোল পড়েছে তাদের মধ্যে।
অনেককেই হাউমাউ করে কাঁদতে দেখা গেছে। অনেক নেতাকর্মী খালেদা জিয়ার মৃত্যুর জন্য শেখ হাসিনাকে দায়ী করে তাঁর ফাঁসি দাবি করেন।
এদিকে খালেদা জিয়ার মৃত্যুর সংবাদের পর থেকেই কোরআন খতম শুরু হয়েছে। দলীয় কার্যালয়ে উত্তোলন করা হয়েছে কালো পতাকা। কার্যালয়ে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ছাড়াও বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী রয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার ভোর ৬টায় ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাংলাদেশের প্রথম নারী এই প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যু হয়। সোমবার সন্ধ্যায় খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ডা. জিয়াউল হক জানিয়েছিলেন, ‘তাঁর অবস্থা খুবই ক্রিটিক্যাল। তিনি অনেকটা লাইফ সাপোর্টে আছেন।’ রাতে অবস্থার অবনতি হলে তাঁর বড় ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং পরিবারের সদস্যারা হাসপাতালে যান। রাত ২টার পর এজেডএম জাহিদ হোসেন হাসপাতালের সামনে এসে সাংবাদিকদের বলেন, খালেদা জিয়া ‘অত্যন্ত সঙ্কটময়’ সময় অতিক্রম করছেন। উনার পরিবারের পক্ষ থেকে উনার সুস্থতার জন্য মহান রাব্বুল আলামীনের কাছে দেশবাসীকে দোয়া করার আহ্বান জানাচ্ছি। এর কয়েক ঘণ্টা পর হাসপাতালের চিকিৎসকরা বিএনপি চেয়ারপারসনকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ সময় হাসপাতালে ছিলেন তারেক রহমানের স্ত্রী জুবাইদা রহমান, মেয়ে জাইমা রহমান, খালেদা জিয়ার প্রয়াত ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শামিলা রহমান, দুই মেয়ে জাহিয়া রহমান, জাফিয়া রহমান, খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার, তাঁর স্ত্রী কানিজ ফাতেমা, প্রয়াত সাইদ এস্কান্দারের স্ত্রী নাসরিন এস্কান্দার, খালেদা জিয়ার মেজ বোন সেলিনা ইসলামসহ পরিবারের সদস্যরা এবং বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এদিকে খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে সাত দিনব্যাপী শোক পালনের ঘোষণা দিয়েছে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। মঙ্গলবার সকাল ৯টায় দলের পক্ষ থেকে খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবর আনুষ্ঠানিকভাবে জানানোর পর এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
এভারকেয়ার হাসপাতালে ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে আজ মঙ্গলবার থেকে সাত দিনব্যাপী শোক পালন করবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, শোকের সময়ে দেশে বিএনপির সকল কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে। সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা সাতদিন ব্যাপী কালো ব্যাজ পরিধান করবেন।
এছাড়া, গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসন কার্যালয়, নয়াপল্টনের দলের প্রধান কার্যালয়সহ সব জেলা-উপজেলায় শোক উপলক্ষে দোয়া ও কোরআন খতম কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানান রুহুল কবির রিজভী।
তিনি জানান, গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয় ও নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে শোকবই খোলা হবে। এই শোক বইয়ে শোক ও সমবেদনা জানানো যাবে। জানাজা ও দাফনের ব্যাপারে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, এগুলো প্রাথমিকভাবে নেওয়া কর্মসূচি। পরবর্তীতে আরও কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। এ কর্মসূচি ঘোষণার আগে খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবর আনুষ্ঠানিকভাবে সাংবাদিকদের জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
What's Your Reaction?

