ভিসা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে ঢাকায় ইতালি দূতাবাসের কর্মী গ্রেপ্তার

Feb 21, 2025 - 15:56
 0  4
ভিসা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে ঢাকায় ইতালি দূতাবাসের কর্মী গ্রেপ্তার

ঘুষ এবং অবৈধ ভিসা বাণিজ্যের অভিযোগে বাংলাদেশে অবস্থিত ইতালির দূতাবাসের এক কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে খবর জানিয়েছে ইউরোপের সংবাদ মাধ্যম ব্রাসেলস সিগন্যাল। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তি ঘুষের বিনিময়ে অবৈধ উপায়ে ভিসা দিয়ে পাচারের সঙ্গে যুক্ত বলে জানায় ওই প্রতিবেদনে।

জানা যায়, একজন স্টাফ সম্প্রতি ব্রাদার্স অব ইতালি (এফডিআই) পার্টির একজন এমপি ও ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির সদস্য আঁদ্রে ডি গুসেপিকে ঘুষ দেয়ার চেষ্টা করেন। তাকে ২০ লাখ ইউরো এবং প্রতি অভিবাসীর ভিত্তিতে আয়ের একটি শতাংশ প্রস্তাব করা হয়েছিল। তিনি ঘুষের প্রস্তাব গ্রহণ না করে, দি জিউসেপ্পে এই দুর্নীতির চেষ্টা রেকর্ড করেন এবং প্রসিকিউটরদের কাছে অভিযোগ জানান। এ থেকেই দুর্নীতির এ বিষয়টি সামনে চলে আসে।

অভিযোগ আছে, অবৈধভাবে কাজের জন্য ভিসা বিক্রির সঙ্গে জড়িত বাংলাদেশের একজন উদ্যোক্তা ও রোমে রেস্তোরাঁর মালিক। বাংলাদেশ থেকে অভিবাসীদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নেওয়ার সঙ্গে তার যোগসূত্র আছে। তার এই কাজের সঙ্গে যুক্ত ঢাকায় ইতালি কন্সুলার অফিসের তিনজন কর্মকর্তা।

এই কেলেঙ্কারিতে জড়িত কনস্যুলেট কর্মকর্তাদের মধ্যে দুইজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ছিলেন- বাংলাদেশে ইতালির দূতাবাসের ভিসা বিভাগের প্রাক্তন প্রধান এবং এক প্রাক্তন কর্মকর্তা, যিনি ঢাকায় ভিসা প্রক্রিয়ার দায়িত্বে ছিলেন এবং পরবর্তীতে তুরস্কে বদলি হন। দুজনেরই ভিসা আবেদন ব্যবস্থায় সরাসরি প্রবেশাধিকার ছিল।

তারা ঘুষ দাবি করেন নগদ অর্থে, উচ্চ পর্যায়ের ইলেকট্রক্সি, বিলাসবহুল ঘড়ি এমনকি দুবাই সফরে সব রকম খরচ বহন করা থেকে শুরু করে বিমানের টিকেট, বন্ধুদের প্রিয় জিনিসের পাওনা পরিশোধে।

প্রসিকিউটররা বলেন, সন্দেহজনক এসব ব্যক্তি ভিসার বিনিময়ে অভিবাসীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করেছে। তাদের মাত্রাতিরিক্ত অর্থ পরিশোধ করতে বাধ্য করা হয়েছে।

তারা আর বলেন, যে কাজের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভিসা দেয়া হচ্ছে তা নিশ্চিত না হয়েই বাংলাদেশি ভিসা গ্রহীতারা ১৫ হাজার ইউরো পর্যন্ত শোধ করেন। অনেক ক্ষেত্রে অস্তিত্ব নেই এমন কোম্পানির নাম ব্যবহার করে ভিসার জন্য আবেদন করা হয়। বিষয়টি রোমের অভিবাসন বিষয়ক ডেস্কে চেকের অভাবে সম্ভব হয়েছে বলে বলা হয়। কারণ, ভিসা আবেদন যাচাইয়ের জন্য সেখানে কম্পিউটার সিস্টেম প্রয়োজন হয় না। এ কারণে ভুয়া বা নকল ডকুমেন্ট প্রদর্শনের সুযোগ পায় অসাধু চক্র। এই প্রতারণা প্রাথমিকভাবে চালানো হয় ঢাকায় ইতালির দূতাবাসের মাধ্যমে।

এ বিষয়টি তদন্ত করে রোমের কর্মকর্তাদের জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে প্রসিকিউটররা। পরে ১৯শে ফেব্রুয়ারি এই অভিযোগে কর্মকর্তাসহ মোট ৫ জনকে আটক করেছেন ইতালি কর্তৃপক্ষ। দু’জন সরকারি কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে তারা গৃহবন্দি। দুর্নীতিতে জড়িত থাকার দায়ে দুই বাংলাদেশিকে জেলে পাঠানো হয়।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow