আমার সুনাম ও মর্যাদা মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে : শাবনূর
চিত্র নায়িকা শাবনূর দীর্ঘদিন অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করলেও বাংলাদেশের চলচ্চিত্রপ্রেমীদের কাছে এখনো সমান জনপ্রিয় এক সময়ের সুপারহিট এ নায়িকা। দু-এক বছর অন্তর দেশে এসে ঘুরে যান আবার প্রবাসে। দুই বছর আগে ঘোষণা দিয়েছিলেন নতুন একটি ছবি ‘রঙ্গনা’–র মাধ্যমে ফের বড় পর্দায় ফিরবেন তিনি। গত বছর ভিডিও বার্তায়ও নিশ্চিত করেছিলেন তার কামব্যাক পরিকল্পনা।
পরিচালক আরাফাত হোসেন ও প্রযোজক মৌসুমী মিথিলার ‘রঙ্গনা’ ছবির কিছু অংশের শুটিংও হয় ঢাকার বিভিন্ন লোকেশনে। এরপর শারীরিক পরিবর্তন এনে ফের দেশের শুটিং শেষ করার পরিকল্পনা নিয়ে অস্ট্রেলিয়া চলে যান শাবনূর। তবে কথামতো শুটিং শেষ করার আগেই ছবিটির অসম্পূর্ণ ফুটেজ সম্প্রতি ইউটিউবে প্রকাশ করা হয়—আর তাতেই ক্ষোভে ফুঁসছেন এই অভিনেত্রী।
শুক্রবার সকালে নিজের ফ্যানপেজে প্রকাশিত এক পোস্টে শাবনূর সরাসরি অভিযোগ তোলেন পরিচালক ও প্রযোজকের অপেশাদার আচরণের বিরুদ্ধে। তিনি লেখেন, ‘আজকের চলচ্চিত্র জগতে পেশাদারিত্ব, শৃঙ্খলা ও পারস্পরিক সম্মানের অভাব উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। দক্ষ পরিচালক ও পেশাদার প্রযোজকের সংকটেই মানসম্মত সিনেমা তৈরি কঠিন হয়ে পড়েছে। অনেকেই শিল্পের মূল্য না বুঝে সহজ পথ বেছে নিচ্ছেন, এতে নষ্ট হচ্ছে চলচ্চিত্রের মান-আর শিল্পীরা হারাচ্ছেন তাদের প্রাপ্য সম্মান।’
‘অসম্পূর্ণ ফুটেজ প্রকাশ-একেবারেই অগ্রহণযোগ্য’
শাবনূর জানান, ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে ‘রঙ্গনা’র মহরত অনুষ্ঠিত হয়। তিনি আশাবাদী ছিলেন নতুনদের সঙ্গে কাজ করে একটি ভালো ছবিই তৈরি হবে। প্রচণ্ড গরমেও কয়েকদিন শুটিং করেন। পরিকল্পনা ছিল পরে ফিরে শুটিং শেষ করে ছবিটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি দেওয়া হবে।
কিন্তু শুরু থেকেই প্রযোজনা–পরিচালনায় অপেশাদারিত্ব লক্ষ্য করেছেন বলে দাবি করেন তিনি। তার ভাষায়, ‘কাজ শুরুর আগেই তারা একটি নিম্নমানের পোস্টার প্রকাশ করে, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচিত হয়। শুটিং সেটেও ছিল অগোছালো অবস্থা। আমাকে বলা হয়েছিল বিদেশে গান ও কিছু দৃশ্য ধারণ হবে, এডিটিংও হবে দেশের বাইরে। কিন্তু বাস্তবে কিছুই দেখিনি।’
সবশেষ ধাক্কা ছিল অসম্পূর্ণ ফুটেজ অনলাইনে প্রকাশ, ‘যে সিনেমা বড় পর্দায় মুক্তি পাওয়ার কথা, সেটি বিনামূল্যে ইউটিউবে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে! আমি বড় পর্দার অভিনেত্রী। আমার কাজ ইউটিউব কনটেন্ট হিসেবে প্রকাশ করার জন্য নয়। এমন পরিকল্পনা আগে জানলে কখনও ছবিতে কাজ করতাম না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি কখনোই বলিনি যে ছবিটিতে আর কাজ করব না। তাহলে আমার অনুমতি ছাড়া কেন অসম্পূর্ণ ফুটেজ প্রকাশ করা হলো? এখন আবার বলা হচ্ছে পুরনো সব বাদ দিয়ে নতুন করে শুটিং হবে—এটা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। এই ঘটনায় আমার অর্জিত সুনাম ও পেশাগত মর্যাদা মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে।’
‘এটি শুধু আমার ক্ষতি নয়, পুরো চলচ্চিত্র শিল্পেরও’ ঘটনাটিকে শুধু ব্যক্তিগত অপমান নয়, পুরো বাংলা চলচ্চিত্র অঙ্গনের জন্য হতাশাব্যঞ্জক বলে মনে করেন শাবনূর।
তিনি বলেন,‘এটি শুধু আমার ব্যক্তিগত ক্ষতি নয়, পুরো শিল্পের জন্যই দুঃখজনক। আমার ভক্তরা বিষয়টি নিয়ে যে হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। তাদের ভালোবাসাই আমার সবচেয়ে বড় শক্তি।’
What's Your Reaction?

