দৃষ্টিজুড়ে হলুদের অপার সৌন্দর্যের সমারোহ
সরিষা ফুলে ছেয়ে গেছে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ, দৃষ্টিজুড়ে হলুদের অপার সৌন্দর্যের সমারোহ। ভোর সকালে সরিষাক্ষেতের ওপর ভেসে থাকা কুয়াশা সকালবেলার প্রকৃতি মনোমুগ্ধকর দৃশ্য সৃষ্টি করেছে। এমন দৃশ্য কৃষকের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। এবার সরিষার ভালো ফলন নিয়ে স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা।
জামালপুর জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সরিষার সবুজ গাছের ফুলগুলো শীতের সোনাঝরা রোদে যেন ঝিকিমিকি করছে। এ যেন এক অপরূপ সৌন্দর্যের দৃশ্য। দেখে মনে হচ্ছে, প্রকৃতিকন্যা গায়ে হলুদবরণ মেখে সেজেছে। মৌমাছির গুনগুন শব্দে ফুলের রেণু থেকে মধু সংগ্রহ আর প্রজাপতির এক ফুল থেকে আরেক ফুলে পদার্পণ সত্যিই যেন মনোমুগ্ধকর এক মুহূর্ত।
জামালপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জামালপুরের ৭ উপজেলায় ৪৬ হাজার ২৭৮ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সরিষা চাষ হয়েছে ৪১ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হলেও গত বছরের চেয়ে সরিষার চাষ বেশি হয়েছে। গত বছর ৪১ হাজার ১২৬ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে।
কৃষকরা বলছেন, এক সপ্তাহ ধরে সরিষা ফুল ফুটতে শুরু করেছে। আরো অন্তত এক মাস ফুল থাকবে। দুই মাসের মধ্যেই সরিষা তোলা যায়। গত বছরের সরিষার দাম ভালো ছিল। মনে হচ্ছে এ বছরেও দাম ভালোই হবে।
মেলান্দহ উপজেলার টুপকারচর এলাকার কৃষক আব্দুর কাদের বলেন, এক বিঘা জমিতে সরিষা চাষে খরচ হয় এক-দেড় হাজার টাকা। ফলন পাওয়া যায় পাঁচ-সাত মণ। প্রতি মণ সরিষার বাজারমূল্য দুই হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
মেলান্দহ উপজেলার ছবিলাপুর এলাকার কৃষক চাঁদ মিয়া বলেন, ‘সরিষা আবাদে খরচ অনেক কম, কিন্তু দাম যদি একটু হয়, তাহলে আমাদের একটু ভালো হবে। অন্যান্য ফসলের থেকে এ ফসলের পরিশ্রমও কম।’
হাজারবাড়ী এলাকার দাঁতভাঙা সেতুর পাশে সরিষাক্ষেতে ঘুরতে আসা শিক্ষার্থী সুমন আহমেদ বলেন, ‘এবার সরিষাক্ষেত খুবই ভালো হয়েছে। অনেকেই এখানে ঘুরতে আসে। আমিও ঘুরতে এসেছি, ছবি তুলে চলে যাব।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক জাকিয়া সুলতানা বলেন, ‘গত বছরের থেকে এবার সরিষার চাষ বেশি হয়েছে। আমরা যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিলাম, তা অর্জিত হয়নি। কৃষকরা দিন দিন ভুট্টা চাষে বেশি আগ্রহী হচ্ছে। আমরা আশা করছি, এ বছর সরিষার ভালো ফলন হবে।’
What's Your Reaction?