বগুড়ার সেই তুফানের বড় ভাই যুবলীগ নেতা মতিন গ্রেপ্তার

বগুড়া প্রতিনিধি
বগুড়ার কুখ্যাত মাদক কারবারি, দুদকের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যা মামলায় পলাতক আসামি, বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা ও পৌর কাউন্সিলর আবদুল মতিন সরকার অবশেষে ধরা পড়েছে। বগুড়া জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা শনিবার রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বসিলার একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মতিন বগুড়া শহরের চকসুত্রাপুর এলাকার মৃত মজিবর রহমানের ছেলে। তিনি আলোচিত নারী নির্যাতনকারী ও ‘ধর্ষক’ তুফান সরকারের বড় ভাই। তিনি বগুড়া শহর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে ছিলেন। তার বিরুদ্ধে ১৮টি মামলা রয়েছে।
রোববার দুপুরে বগুড়া জেলা ডিবির ওসি ইকবাল বাহার বলেন, মতিনকে আদালতে তোলার প্রস্তুতি চলছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে একটি মামলায় তাকে সাতদিনের রিমান্ড চাওয়া হবে।
পুলিশ বলছে, ৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর মতিন গা ঢাকা দেন। জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের দুদকের একটি মামলায় গত ১১ মার্চ তার অনুপস্থিতিতে বগুড়ার বিশেষ জজ আদালত তাকে ১৩ বছরের সাজা দেন। এছাড়া আদালত তাকে দুই কোটি ২৮ লাখ ৩১ হাজার ৩১৫ টাকা জরিমানা করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর কুখ্যাত মাদক কারবারি পরিবারের সন্তান খ্যাত মতিন প্রভাবশালী এক যুবলীগ নেতার সহযোগীতায় বগুড়া শহর যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদকের পদলাভ করেন। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় তিনি মাদক কারবারের পাশাপাশি চাঁদাবাজি, দখল, টেন্ডার বাণিজ্য, হাট-বাজার ইজারা নিয়ন্ত্রণ ও পরিবহণ সেক্টরে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়েন।
হত্যা, অস্ত্র ও মাদক মামলা থাকা সত্ত্বেও তিনি আওয়ামী লীগের কতিপয় সুবিধাবাদী নেতাদের প্রভাবে স্থানীয় সরকার ও জাতীয়সহ বিভিন্ন ভোট ডাকাতিতে অংশ নেন। দলের প্রভাবে তিনি বগুড়া আন্তঃজেলা ট্রাক মালিক সমিতি ও জেলা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদকের পদ বাগিয়ে নেন।
২০০০ সালে অস্ত্রসহ গ্রেফতার হয়েছিলেন মতিন। ২০০৭ সালে ওই মামলায় তাকে ২৭ বছরের সশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়েছিল। কয়েক বছর সাজাভোগ করার পর বেরিয়ে আসেন।
ওসি ইকবাল বাহার বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও আগের মোট ১৮ মামলার আসামি মতিন। পট পরিবর্তনের পর দেশের বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপন করেন তিনি। সর্বশেষ রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বসিলার একটি বাসায় লুকিয়ে ছিলেন। খবর পেয়ে শনিবার রাত ১১টার দিকে তাকে ওই বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।’
What's Your Reaction?






