শিক্ষকের ওপর হামলা ও ছাত্রীদের পিটানোর প্রতিবাদে উভয় পক্ষের মানববন্ধন
সাজ্জাত বিশ্বাস, ঝালকাঠি
ঝালকাঠি সদর উপজেলার নথুল্লাবাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তোফাজ্জল হোসেনের ওপর হামলা ও জোরপূর্বক পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর নেয়ার প্রতিবাদে ও ছাত্রীদের বেধড়ক পিটানো এবং দুর্নীতির অভিযোগে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারি এবং ছাত্র-ছাত্রী সহ অবিভাগবৃন্দ।
রোববার সকাল ১০টায় প্রধান শিক্ষকের পক্ষে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনের সড়কে এ মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে জেলার সর্বস্তরের, শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীবৃন্দ।
ঘন্টাব্যাপী চলা মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, প্রধান শিক্ষক আকছেদ আলী খন্দকার, বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতি-(বাকশিস) জেলা সদস্য সচিব উপাধ্যক্ষ রিয়াজুল ইসলাম বাচ্চু, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির জেলা শাখার সভাপতি আনিচুর রহমান পলাশ ও আহত প্রধান শিক্ষকের মেয়ে নিপু আক্তারসহ আরো অনেকে।
এ সময় বক্তারা বলেন, বর্তমানে বিভিন্ন স্কুল- কলেজে এ্যাডহক কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে শিক্ষকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটছে।
এরই ধারাবাহিকতায় নথুল্লাবাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তোফাজ্জল হোসেনের ওপর হামলা চালিয়ে তাকে গুরুতরভাবে আহত করা হয়েছে।
প্রধান শিক্ষকের ওপর হামলার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান বক্তারা।
মানববন্ধন শেষে প্রধান শিক্ষকের ওপর হামালার বিচার দাবিতে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন শিক্ষকরা।
এদিকে একই সময়ে প্রধান শিক্ষক তোফাজ্জল হোসেনের নানা দুর্নীতি অনিয়মের অভিযোগ ও স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে একই স্থানে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রী, অভিভাবক ও স্থানীয়রা।
পরে তারা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে ব্যস্ত সড়কটি অবরোধ করে বসে পড়েন।
জেলা প্রশাসন থেকে সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস পাওয়ার পরে সড়ক ছেড়ে তারা চলে যান। উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার আশঙ্কায় পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন ছিল।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগীতার পুর্ব প্রস্তুতি চলাকালে প্রধান শিক্ষক তোফাজ্জেল হোসেন ৭ জন ছাত্রীকে পিটিয়ে আহত করেন, এমন অভিযোগে প্রধান শিক্ষককে মারধর করে একটি কক্ষে তালাবদ্ধ করে রাখে শিক্ষার্থী অভিভাবক ও এলাকাবাসী।
পরে খবর পেয়ে সহকারী কমিশনার (ভুমি) মো. সাইফুল ইসলাম ও সদর থানা পুলিশের একটি দল প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাইলে শিক্ষার্থীরা তাতে বাধা দেয়। এ সময় পরিস্থিতি সামাল দিতে বাধ্য হয়ে ম্যাজিষ্ট্রেটের গাড়ির মধ্যে বসেই পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর করেন প্রধান শিক্ষক তোফাজ্জেল হোসেন।
তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
What's Your Reaction?