লস্কর-ই-তৈয়বার শাখা টিআরএফকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ ঘোষণা করলো যুক্তরাষ্ট্র

Jul 18, 2025 - 13:16
 0  2
লস্কর-ই-তৈয়বার শাখা টিআরএফকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ ঘোষণা করলো যুক্তরাষ্ট্র
ছবি : সংগৃহীত

পাকিস্তানি চরমপন্থি গোষ্ঠী লস্কর-ই-তৈয়বার শাখা হিসেবে পরিচিত ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’কে (টিআরএফ) ‘বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন’ ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

গত ২২ এপ্রিল ভারত-শাসিত কাশ্মীরে জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।

রয়টার্স লিখেছে, ‘কাশ্মীর রেজিস্ট্যান্স’ নামেও পরিচিত ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ পেহেলগামে হামলার দায় প্রথমে স্বীকার করলেও কয়েক দিন বাদে তা অস্বীকার করে।

যুক্তরাষ্ট্রের ‘বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন’ তালিকায় থাকা লস্কর-ই-তৈয়বার বিরুদ্ধে ভারতের পাশাপাশি পশ্চিমে বিভিন্ন হামলার পরিকল্পনার অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে ২০০৮ সালের নভেম্বরে মুম্বাইতে তিন দিনের প্রাণঘাতী হামলাও রয়েছে।

রুবিও এক বিবৃতিতে বলেছেন, ওয়াশিংটন টিআরএফকে ‘বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন’ এবং ‘বিশেষভাবে মনোনীত বৈশ্বিক সন্ত্রাসী’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের ‘পেহেলগামে হামলার জন্য ন্যায়বিচারের দাবিকে’ সমর্থন করেছে।

২০১৯ সালে গঠিত টিআরফে লস্কর-ই-তৈয়বার ‘ছদ্মবেশী ও প্রতিনিধি সংগঠন’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন রুবিও । দিল্লিভিত্তিক গবেষণা সংস্থা সাউথ এশিয়া টেররিজম পোর্টালের ভাষ্য, টিআরএফ লস্কর-ই-তৈয়বার একটি শাখা।

রয়টার্স লিখেছে, পেহেলগাম হামলার কারণে পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে তীব্র সংঘাত দেখা দেয়, যা বহু দশকের শত্রুতাকে নতুন মাত্রা দেয়। দিল্লি এই হামলার জন্য ইসলামাবাদকে দায়ী করলে পাকিস্তান তা অস্বীকার করে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানায়। ওয়াশিংটন হামলার নিন্দা জানালেও সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করেনি।

ওয়াশিংটনভিত্তিক দক্ষিণ এশিয়া বিশ্লেষক ও ‘ফরেন পলিসি’ ম্যাগাজিনের লেখক মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, ওয়াশিংটন টিআরএফকে তালিকাভুক্ত করার মাধ্যমে ভারত-পাকিস্তানের সাম্প্রতিক সংঘাতের সূত্রপাত করা সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে এবং নয়াদিল্লির দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে একমত পোষণ করেছে যে- এই গোষ্ঠীর সঙ্গে লস্কর-ই-তৈয়বার যোগ রয়েছে।

তিনি বলেন, “সাম্প্রতিক কঠিন সময়ের পর যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্কের জন্য এই পদক্ষেপ সহায়ক হতে পারে।”

গত ৭ মে ভারতীয় জঙ্গিবিমান পাকিস্তানের ভেতরে হামলা চালায়, আর সেই সব নিশানাকে ‘সন্ত্রাসী অবকাঠামো’ বলে বর্ণনা করে নয়া দিল্লি। এর জেরে জঙ্গিবিমান, ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন ও কামান দিয়ে দুই দেশ পাল্টাপাল্টি হামলায় জড়ায়, ১০ মে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার আগ পর্যন্ত বহু প্রাণহানি ঘটে।

ওয়াশিংটন উভয়পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করার পর সোশাল মিডিয়ায় এ যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন ট্রাম্প। তবে ট্রাম্পের এ দাবি প্রত্যাখ্যান করে ভারত বলে, তার (ট্রাম্প) হস্তক্ষেপে যুদ্ধবিরতি হয়নি, বরং দিল্লি ও ইসলামাবাদ নিজেদের মধ্যেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ভারতের অবস্থান হল- বাইরের হস্তক্ষেপ ছাড়াই দিল্লি ও ইসলামাবাদকে নিজেদের সমস্যা সরাসরি সমাধান করতে হবে।

রয়টার্স লিখেছে, এশিয়ায় চীনের প্রভাব মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ভারত গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হয়ে উঠছে। অন্যদিকে, পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্রের পুরনো মিত্র।

হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারত ও মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ পাকিস্তান উভয়ই মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীরকে পুরোপুরি নিজেদের বলে দাবি করে, যদিও তারা হিমালয়ের এই অঞ্চলের অংশবিশেষ শাসন করে। এই অঞ্চল নিয়ে তারা একাধিক যুদ্ধও করেছে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow