অভাবের কারণে নিষেধাজ্ঞা না মেনেই জেলের মাছ শিকার, নানান অভিযোগ

Mar 15, 2025 - 19:02
 0  2
অভাবের কারণে নিষেধাজ্ঞা না মেনেই জেলের মাছ শিকার, নানান অভিযোগ
ছবি : সংগৃহীত

মিজানুর রহমান, ভোলা প্রতিনিধি

ভোলায় ২ মাসের নিষেধাজ্ঞার প্রায় দুই সপ্তাহ পার হলেও এখনও জেলেদের ভাগ্যে জুটেনি খাদ্য সহায়তার চাল। এতে করে অভাব ও অনটনে দিন কাটছে জেলে পরিবারে লাখ লাখ মানুষ।

জেলেদের অভিযোগ, নিষেধাজ্ঞার চাল এখনও বিতরণ না হওয়ায় অনেক জেলে পেটের দায়ে নদীতে মাছ শিকার করছেন। আবার কেউ কেউ সরকারি চাল পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন।

আর মৎস্য বিভাগ বলছেন আগামী ৩/৪ দিনের মধ্যেই  চাল বিতরণের কাজ শুরু হবে। আর নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলেই আটক করা হবে জেলেদের। কিছু নেতা ও সংশ্লিষ্ট বিভাগের কিছু কর্মচারী জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।

জেলেরা জানান, গত ১ মার্চ থেকে ইলিশের অভায়াশ্রমের কারণে ভোলায় ২ মাসের মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে। আর নিষেধাজ্ঞার কারণে মেঘনা ও তেতুরিয়া নদীর পারে এভাবেই অলস সময় কাটচ্ছেন জেলেরা। কেউ কেউ আবার নতুন করে জাল বুনছেন। আবার কেউ কেউ পুরোন জালে সারিয়ে নিচ্ছেন।

জেলেরা আরও জানান, আমরা অপেক্ষা করছি সরকারিভাবে চাল পাওয়ার। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার প্রায় দুই সপ্তাহ পার হতে চললেও এখনও বিতরণ শুরু হয়নি চাল। নিষেধাজ্ঞার কারণে কর্মহীন হয়ে পরা জেলেরা সংসারের চলছে অভাব ও অনটন। আর প্রভাবশালী জেলেরা শত শত নৌকা নিয়ে মেঘনা ও তেতুলিয়া দাবড়িয়ে সবপ্রকার মাছ নিধন করে চলেছেন।

মৎস্য সংশ্লিষ্টা কিছু কর্মকর্তা, কর্মচারী ও স্থানীয় নেতারা ম্যানেজ প্রক্রিয়ায় রয়েছেন বলে সাধারন জেলেরা জানান। তারা টনে টনে মাছ ট্রোলার ভরে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার আড়তে নিয়ে বিক্রি করছেন বলে জানান সেলিম মাঝি। আর স্থানী পাইকার ও খুচড়া বিক্রেতারা বিভিন্ন স্থানে মাছ মৌজুত করে অল্প অল্প করে নিয়ে বিক্রি করছে। মাছ বিক্রির টাকার বাগ বিভিন্ন পর্যায়ে চলে যায় বলে জানিয়েছেন মাছ ব্যবসায়ী বশার।

এদিকে জেলেদের অভিযোগ, সরকারি চাল না পাওয়ায় অনেক জেলে পেটের দায়ে নদীতে মাছ শিকার করছেন। তার সাথে মেঘনা ও তেতুরিয়া পারের মৎস্য নেতা, আড়ৎদাড়, দাদন ব্যবসায়ীদের শত শত নৌকা-ট্রোলারে চলছে মাছ শিকার। ঘাটে ডাকে বিক্রি হচ্ছে মাছ এবং পাইকার ও বিক্রেতারা-বিভিন্ন জেলায়, উপজেলায়, শহরের রাস্তা, মার্কেটের সামনে, পাড়া, মহল্লা এবং লঞ্চঘাটে ওপেনে বিক্রি করছেন।

এছাড়াও মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞার সময়ও এনজিওর কিস্তি আদায়ের চাপ চলছে। তাই নিষেধাজ্ঞা সফল নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে বলে জানান মৎস্য বিশেষজ্ঞরা।

ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেবের দাবী, আগামী ৩/৪ দিনের মধ্যেই ভোলার সাত উপজেলায় জেলেদের চাল বিতরণ শুরু হবে। এছাড়াও কোন অজুহাদ দিয়ে নিষেধাজ্ঞার অমান্য করলে আটক করে মোবাইল কোটের মাধ্যমে শাস্তি দেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আরিফুজ্জামান জানান, ভোলা সদরে নিবন্ধিত ২২ হাজার জেলে রয়েছে, তাদের বিপরিতে ১৫ হাজার জেলের চাল এসেছে। এর মধ্য থেকে পর্যায় ক্রমে সবাইকে চাল দেয়া হবে।

জেলার সাত উপজেলায় নিবন্ধিত ১ লাখ ৭০ হাজার ২৮৩ জন জেলে থাকলেও এ বছর  ৪০ কেজি করে চাল পাবেন ৮৯ হাজার ৬০০ জন জেলে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow