কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালের অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে সাধারণ শিক্ষার্থীদের অনশন

Jan 4, 2025 - 17:24
 0  13
কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালের অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে সাধারণ শিক্ষার্থীদের অনশন
ছবি : যমুনা টাইমস

আনোয়ার হোসেন, কুড়িগ্রাম

কুড়িগ্রাম ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে জনবল সংকটের অযুহাতে বিভিন্ন অনিয়ম আর অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে অনশন কর্মসূচি পালন করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (৪ জানুয়ারি) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত হাসপাতাল প্রাঙ্গনে এই অনশন কর্মসূচি পালিত হয়।

সাধারণ শিক্ষার্থীদের এই অনশনের সাথে সংহতি প্রকাশ করেছেন কুড়িগ্রাম বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

এই অনশন কর্মসূচিতে অংশ নেয় ছাত্র আবরার শাহরিয়ার, আরমান হোসেন, লোকমান হোসন লিমন, মাহমুদুল হাসান ও নাজমুল হাসান। অনশন চলাকালিন সময় তাদের নিকট বিভিন্ন শ্লোগানের প্লেকার্ড লেখা ছিল।

এসময় আন্দোলনকারী আবরার শাহরিয়ার লিখিত বক্তব্যে জানান, আমি কোন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বাম, ডান কিংবা মধ্যপন্থি কোন রাজনৈতিক সংগঠনের সাথে জড়িত নই। আমি বাংলাদেশের একজন নাগরিক। হাসপাতালের অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় হাসপাতালের একজন ডাক্তার আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেন। এটা যদি স্বাধীন দেশ হয় এবং স্বাধীন দেশেও যদি বাক স্বাধীনতা না থাকে, তবে স্বৈরাচারী শাসক থাকলেই বা আমাদের কি ক্ষতি হতো? আমি আজ অনশনে বসেছি। আমার কোন নির্দিষ্ট দাবী নেই। আমি কারো পদত্যাগ কিংবা বহিষ্কার চাই না। আমি রাস্ট্র যন্ত্রের কাছে প্রশ্ন করতে চাই, "হে রাষ্ট্র, তুমি কার?” চিকিৎসা আমাদের মৌলিক চাহিদার মধ্যে একটি। কিন্তু আমি আমার জেলায় তা কতটুকু পাচ্ছি? আমার হাসপাতালে ডাক্তার নেই, ঔষধ নেই, ভালো খাবার নেই, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ নেই। এর সমাধান আমি কবে পাবো? কারো জীবন না গেলে কি রাষ্ট্রের চোখ খুলবে না?

এসময় তিনি সিস্টেম পরিবর্তনের জন্য কর্তৃপক্ষকে দু’দিনের আল্টিমেটাম দেন। দুইদিনে সিস্টেমের সংস্কার না হলে আমি কোন আন্দোলনের ডাক দিব না। কারো পদত্যাগ ও চাইবো না। আমি শুধু ভুলে যাবো যে আমি বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের নাগরিক এবং আমি আমার দেশকে ভালোবাসি। বাকি সিদ্ধান্ত টা রাষ্ট্রের?

এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম আহবায়ক রাজ্য জ্যোতি বলেন, চিকিৎসা সেবা পাওয়া আমাদের নাগরিক অধিকার। কিন্তু কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে সিন্ডিকেট চক্রের কারণে নানা অনিয়ম আর দুর্নীতি বিরাজ করছে। এসব ঘটনার প্রতিবাদ করলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে হেনস্তার স্বীকার হতে হয়। আজকে সাধারণ শিক্ষার্থী আবরার শাহরিয়ার প্রথমে অনশন শুরু করলেও পরে আরও একাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেয়। আমরা বৈষ্যম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে সংহতি প্রকাশ করছি।

এদিকে, বিকেল ৪ টার দিকে কুড়িগ্রাম পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান, তত্বাবধায়ক ডা.শহিদুল্লা লিংকন ও আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শাহিনুর রহমান সরদার শিপন এসে দু'দিনের মধ্যে এসব সমস্যা নিরসনের আশ্বাস দিয়ে আন্দোলনকারীদের অনশন ভাঙ্গিয়ে চলে যান।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow