নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সন্ত্রাস নির্মূলে ডাকসুর গণজমায়েত ও বিক্ষোভ মিছিল
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের নির্মূল ও ফ্যাসিবাদী শক্তির মূলোৎপাটনে শিক্ষার্থীদের নিয়ে গণজমায়েত ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)। বুধবার (১২ নভেম্বর) রাত ৮ টার দিকে বিভিন্ন হল থেকে মিছিল করে শিক্ষার্থীরা ডাকসুর সামনে জমায়েত হয়। এরপর তারা ক্যাম্পাসের প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করেন। মিছিল শেষে রাজু ভাস্কর্যের সামনে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশে কথা বলেন নেতারা।
ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েম বলেন, “আওয়ামীলীগ কোন রাজনৈতিক দল নয়। আওয়ামীলীগ সন্ত্রাসী সংগঠন। আওয়ামীলীগের রাজনীতি ৩৬ জুলাই শেষ হয়ে গেছে। এই আওয়ামীলীগের দালালদের যেখানেই পাওয়া যাবে প্রতিহত করতে হবে। আজকে দের বছর পরও হাসিনার বিচারের জন্য রাস্তায় নামতে হচ্ছে। এই দায়িত্ব অন্তবর্তীকালীন সরকারের ছিল। খুনি হাসিনার ফাঁসিই বাংলাদেশে হবে। তার দোসরদের বিচার এই দেশেই হবে।”
সাদিক কায়েম আরও বলেন, “যারা খুনি হাসিনাকে দায় মুক্তি দেওয়ার চেষ্টা করছেন— সেটা যেই রাজনৈতিক দলই হোক, ছাত্র সংগঠন হোক; ইন্টারিমের মধ্যে যারা ফ্যাসিবাদীর দোসর হিসেবে কাজ করছেন তাদের সাবধান করে দিতে চাই, সাবধান হয়ে যান।”
খুনি হাসিনার বিচারের দাবিতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আজকে আমরা দেখতে পাচ্ছি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অনৈক্য, ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে অনৈক্য। আপনারা এই অনৈক্য দূর করে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলুন।”
তিনি বলেন, “আজকে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেকটি মোড়ে মোড়ে অবস্থান নেব। আমরা দেখতে চাই আওয়ামীলীগের দোসররা কোথায়? তাদেরকে যেখানেই পাওয়া যাবে সেখানেই দমন করা হবে। একই সাথে আগামীকাল যেখানেই আওয়ামী দোসরদের দেখতে পাবেন তাদেরকে ধরে থানায় দিবেন, বিচারের আওতায় নিয়ে আসবেন।”
সাধারণ সম্পাদক এসএম ফরহাদ বলেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গাফিলতির কারণে দেশে যে বিশৃঙ্খলা তৈরি হচ্ছে, সেখানে সন্ত্রাসী কার্যক্রম বেড়েই চলেছে। এখানে জাতির সকল বয়সী মানুষ যে আওয়ামীলীগের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিল সেখানে সরকার দায়সারা বক্তব্য দিয়ে পার পাওয়ার চেষ্টা করছে। আজকে যেখানে হাসিনার বিচারের রায়ের ঘোষণায় সকলের খুশি হওয়ার কথা ছিল সেখানে সরকারের নিশ্চুপ ভূমিকার কারণে শিক্ষার্থীদের মাঠে নামতে হচ্ছে । এটা খুবই দুঃখজনক।”
তিনি আরও বলেন, “যে দলের আগাগোড়া সবাই বিদেশে পালিয়ে গেছে, যে দলের বিপক্ষে সারা দেশের মানুষ আন্দোলনে নেমেছিল — কিভাবে তাদের সাহস হয়, চেতনাবোধ আবার জাগ্ৰত হয় যে রাস্তায় নামার সাহস পায়। ডাকসু, রাকসু, চাকসুসহ সকল ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীরা এই সন্ত্রাসী আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে অবস্থান সব সময় থাকবে।”
মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন বিষয়ক সম্পাদক ফাতিমা তাসনিম জুমা বলেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব ছিল আওয়ামীলীগের বিচার করা। কিন্তু তারা এটা করতে পারে নি। আমরা রাজপথে থেকেই এর জবাব দেব। আগামীকাল সারাদিন মাঠে থাকব।”
সংগঠনের পরিবহন বিষয়ক সম্পাদক ও সিনেট–সিন্ডিকেট সদস্য আসিফ আব্দুল্লাহ বলেন, “আমরা মাঠের কর্মী, ময়দানের কর্মী। আমার দীর্ঘ ১৭ বছর ময়দানে ছিলাম। খুনি আওয়ামীলীগের বিপক্ষে রাজপথে ছিলাম। এখনো থাকব। অনতিবিলম্বে খুনি হাসিনা সহ তাদের দোসরদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।”
What's Your Reaction?

