অমর একুশে বইমেলার তৃতীয় দিনে এসেছে ৩২ নতুন বই
বইমেলার তৃতীয় দিনে মোট নতুন বই এসেছেন ৩২টি। এখন পর্যন্ত বইমেলার প্রথম এবং দ্বিতীয় দিন মিলে সর্বোমোট বই এসেছে ৪৫টি। সোমবার বাংলা একাডেমির জনসংযোগ দপ্তরের ও বই মেলার তথ্যকেন্দ্র সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, মেলায় গল্প ১টি, উপন্যাস ৮টি, প্রবন্ধ ৩টি, কবিতা ১০টি, গবেষণা ১টি, শিশুসাহিত্য ১টি, জীবনী ২টি, বিজ্ঞান ১টি, ভ্রমণ ১টি, ইতিহাস ১টি, রাজনীতি ২টি ও অন্যান্য ১টি।
মেলা তৃতীয় দিনে বিকেল ৩টায় মেলা শুরু হয়ে যা চলে রাত ৯টা পর্যন্ত। এদিকে বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় হায়দার আকবর খান রনো: আজীবন বিপ্লব-প্রয়াসী শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। দীপা দত্তের সভাপতিত্বে এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সোহরাব হাসান। এছাড়া আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন আবদুল্লাহ আল কাফী রতন, জলি তালুকদার এবং অনন্যা লাবণী পুতুল।
প্রাবন্ধিক সোহরাব হাসান বলেন, 'বাংলাদেশের বাম রাজনীতির অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব ছিলেন হায়দার আকবর খান রনো। তিনি ছিলেন এদেশের বাম রাজনীতির একই সঙ্গে ছাত্র ও শিক্ষক। অগ্রজদের কাছ থেকে যে শিক্ষা নিয়েছেন সেটাই তিনি পৌঁছে দিয়েছেন অনুজ কমরেডদের কাছে। হায়দার আকবর খান রনো কখনো কট্টরপন্থার অনুসারী ছিলেন না। তিনি ভিন্ন মেরুর বামপন্থী নেতাদের একসঙ্গে বসিয়ে আলোচনার পথ খুলে দিতে সচেষ্ট ছিলেন। বাষট্টির ছাত্র আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ এবং তৎপরবর্তী স্বৈরাচারবিরোধী প্রতিটি আন্দোলনে রনোর ভূমিকা ছিল প্রত্যক্ষ ও গুরুত্বপূর্ণ। রাজনীতির বাইরেও বিচিত্র বিষয়ে তার আগ্রহ ছিল। তিনি মার্ক্সবাদী দর্শন ও বিজ্ঞানের জটিল বিষয়গুলো অত্যন্ত সহজ ভাষায় পাঠকদের কাছে তুলে ধরেছেন।'
আলোচকবৃন্দরা বলেন, 'ছোটোবেলা থেকেই হায়দার আকবর খান রনো প্রগতিশীল চিন্তাচেতনার মধ্য দিয়ে বড় হয়ে উঠেছেন। মাক্সীয় তত্ত্ব অধ্যয়ন ও অনুশীলনের সমন্বয় ঘটেছিল তার জীবনে। শ্রমজীবী সাধারণ মানুষ ও শ্রমিকদের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল গভীর। মানুষ হিসেবে অত্যন্ত বিনয়ী হায়দার আকবর খান রনো বামপন্থীদের অনেক বিভেদের মধ্যেও নিজের নীতিতে ছিলেন অটল। সমাজতন্ত্রের যে স্বপ্ন তিনি নিজের ভেতর লালন করেছেন, তা নিয়েই আজীবন লড়াই সংগ্রাম করে গেছেন।'
সভাপতির বক্তব্যে দীপা দত্ত বলেন, হায়দার আকবর খান রনো ছিলেন আজীবন বিপ্লবী। তিনি কেবল কমিউনিস্ট নেতাই নন, একজন তাত্ত্বিকও। তার লেখনী, রাজনৈতিক আদর্শ, সততা, নিষ্ঠা, একাগ্রতা আমাদের জন্য আগামীর প্রেরণা হয়ে থাকবে।'
এদিকে লেখক বলছি মঞ্চে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন কবি চঞ্চল আশরাফ এবং শিশুসাহিত্যিক আতিক হেলাল। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন কবি মোহন রায়হান ও রেজাউদ্দিন স্টালিন। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী মাহমুদা সিদ্দিকা সুমি এবং হ্যাপি হাবিবা। এছাড়া ড. ইঞ্জিনিয়ার খালেকুজ্জামানের পরিচালনায় ছিল সাংস্কৃতিক সংগঠন বাঁশরীর পরিবেশনা।
আজ আলোচনা অনুষ্ঠান: মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে কুমুদিনী হাজং শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন পাভেল পার্থ। এতে আবু সাঈদ খানের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন মতিলাল হাজং এবং পরাগ রিছিল।
What's Your Reaction?