বীরগঞ্জে একজন শিক্ষিকা দিয়ে চলছে স্কুলে পাঠদান
দিনাজপুর প্রতিনিধি
দিনাজপুরের বীরগঞ্জে ছায়জন শিক্ষক কর্মরত থাকা সত্বেও মাত্র ১ জন শিক্ষিকা দিয়ে চলছে নিজপাড়া ১৮৯নং গ্রামডাংগী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান।
সরজমিনে গেলে দেখা যায়, "শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড, শিক্ষাই মুক্তি" এই স্লোগান বাস্তবায়ন হচ্ছে না উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টিতে। বিদ্যালয়টিতে হাজিরা খাতায় ১২০-১৩০ জন ছাত্র-ছাত্রীর নাম থাকলেও মাত্র ৮ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলো।
সহকারী শিক্ষা অফিসার মোঃ মাজেদুর রহমান ২১ জানুয়ারি জানায়, ২০ জানুয়ারি সোমবার বিদ্যালয়ে শিক্ষক না থাকার সংবাদ পেয়ে দ্রুত গ্রামডাংঙ্গী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুপুরে গিয়ে দেখি ৬ জন শিক্ষকের স্থলে একমাত্র শিক্ষিকা আরিফা জাহান ৮ জন শিক্ষার্থীকে পাঠদান করাচ্ছেন।
বাস্তব চিত্র দেখে তাৎক্ষণিক পরিদর্শন বইয়ে ঘটনাটি উল্লেখ করে প্রধান শিক্ষককে অফিসিয়াল নোটিস করা হয়েছে। ২ জন সহকারী শিক্ষকের মধ্যে ১ জন শিক্ষক ওমর ফারুক ভোটার হালনাগাদ তথ্য সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত রয়েছে এবং সহকারী শিক্ষক মোঃ সফিকুল ইসলাম চিকিৎসার জন্য তিন দিনের ছুটিতে রয়েছেন।
তবে প্রধান শিক্ষক সহ ৩ জন শিক্ষকের অনুপস্থিতির ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না বা তার কাছে কোনো ছুটি নেওয়া হয়নি।
এলাকার আব্দুল খালেক অভিযোগ করেন জানান, প্রায় দিনই একজন অথবা কোন কোন সময় দুইজন শিক্ষক দিয়েই স্কুল চালানো হয়, প্রধান শিক্ষক মোঃ আব্দুল লতিফ বেশীরভাগ স্কুলে অনুপস্থিত থেকেই পরবর্তীতে এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন।
নিজপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান আনিস জানায়, বিদ্যালয়টি শিক্ষার মান অত্যন্ত খারাপ হওয়ায় অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের কিন্ডারগার্ডেন অথবা মাদ্রাসায় ভর্তি করাচ্ছেন। এভাবে চললে এক সময় বিদ্যালয়ে কোন শিক্ষার্থী থাকবে না। শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে অনতিবিলম্বে কঠোর পদক্ষে নেওয়া দরকার।
জানা যায়, নিজপাড়া ইউপির প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের স্থানীয় ইলিয়াশ আলী নামের এক ব্যক্তির দানকৃত ৫৭ শতক সম্পত্তিতে ১৯৮৯ সালে ১৮৯নং নিজপাড়া গ্রামডাংঙ্গী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। যা পরবর্তীতে ২০০২-২০০৩ সালে সরকারিকরণ হয়।
প্রধান শিক্ষক মো: আব্দুল লতিফ মুঠোফোনে বলেন, আমার আত্মীয় মারা যাওয়ার কারণে আমি ছুটি নিয়ে বাড়িতে এসেছি।
প্রতিবেশী মোকসেদ আলী জানায়, প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষিকা আত্মীয় এবং এবং অপর সহকারী শিক্ষিকা এলাকার হওয়ায় নানা অজুহাত দেখিয়ে বিদ্যালয়ের ক্লাসের ব্যাপারে উদাসীন। দ্রুত তাদেরকে অন্যত্র বদলি করা হলে বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ হয়তো ফিরে আসবে।
বীরগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোছা: শাহজিদা হক মুঠোফোনে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ইতোমধ্যেই সংশ্লিষ্ট ক্লাস্টারের সহকারী শিক্ষা অফিসারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অনুপস্থিত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
What's Your Reaction?