আমি বললেই গাজায় আবার অভিযান চালাবে ইসরায়েল : ট্রাম্প

Oct 16, 2025 - 11:47
 0  2
আমি বললেই গাজায় আবার অভিযান চালাবে ইসরায়েল : ট্রাম্প
ছবি : সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, হামাস যুদ্ধবিরতির শর্ত না মানলে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে গাজায় পুনরায় সামরিক অভিযান শুরু করার অনুমতি দেবেন তিনি। 

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন-কে দেওয়া এক টেলিফোন সাক্ষাৎকারে বুধবার ট্রাম্প বলেন, ‘হামাস নিয়ে যা হচ্ছে, সেটা খুব তাড়াতাড়ি ঠিক হয়ে যাবে। আমি বললেই ইসরায়েলি বাহিনী আবার রাস্তায় নামবে।’

সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী, হামাস জীবিত ও মৃত সব জিম্মিকে ফেরত দেবে। তবে ইসরায়েল বলছে, হামাস সেই প্রতিশ্রুতি পুরোপুরি পালন করছে না। এতে দেশটির ভেতরে ক্ষোভ বাড়ছে। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জাতিসংঘকে জানিয়েছে, মৃত জিম্মির দেহ ফেরত দিতে দেরি করার কারণে গাজায় মানবিক সহায়তা সাময়িকভাবে কমানো বা বিলম্বিত হতে পারে। তবে এখন পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি টিকে আছে।

ট্রাম্পের ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনার চতুর্থ দফায় বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েল প্রকাশ্যে এই চুক্তি গ্রহণ করার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সব জিম্মি (জীবিত ও মৃত) ফেরত দেওয়া হবে।’ বুধবার সকাল পর্যন্ত জীবিত ২০ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে ফেরত দেওয়া হয়েছে। তবে হামাস এখন পর্যন্ত ১০ জনের মৃতদেহ হস্তান্তর করেছে, যার মধ্যে একজন ইসরায়েলি জিম্মি নন বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। জীবিত জিম্মিদের উদ্ধারের বিষয়টি ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’ ছিল জানিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘ওই ২০ জনকে মুক্ত করা সবচেয়ে জরুরি ছিল।’

মার্কিন প্রশাসনের দুই জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা সিএনএন-কে জানিয়েছেন, মৃতদেহ উদ্ধারে দেরি হওয়াকে যুক্তরাষ্ট্র এখনো হামাসের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ হিসেবে দেখছে না। মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে হামাস যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়েছে, তারা বাকি দেহগুলো উদ্ধারে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। যুদ্ধের ধ্বংসস্তূপের নিচে অনেকে চাপা পড়ে থাকতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এরই মধ্যে গাজায় হামাস ও প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সহিংস সংঘর্ষ দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশ্যে এক ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার ঘটনাও ঘটেছে।

এ বিষয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘ওরা এখন সহিংস গোষ্ঠীগুলোকে পরিষ্কার করছে।’

হামাস যদি নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করে থাকে, সেটি খতিয়ে দেখা হবে বলেও জানান তিনি।

‘আমি বিষয়টা যাচাই করছি। দেখা যাক, এটা কেবল গ্যাং না অন্য কিছু,’ বলেন ট্রাম্প।

শান্তি পরিকল্পনার ষষ্ঠ দফায় বলা হয়েছে, সব জিম্মি ফেরত দেওয়ার পর যারা শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে রাজি ও অস্ত্র সমর্পণ করবে, তাদের সাধারণ ক্ষমা দেওয়া হবে। আর যারা গাজা ছাড়তে চায়, তাদের নিরাপদে অন্য দেশে যেতে দেওয়া হবে।

হামাস যদি নিরস্ত্র না হয় এমন প্রশ্নের উত্তরে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি ভাবছি। আমি বললেই ইসরায়েল আবার রাস্তায় নামবে। তারা চাইলে মুহূর্তেই হামাসকে ধ্বংস করতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘আমি ওদের (ইসরায়েলি সেনা ও নেতানিয়াহুর সরকার) অনেক কষ্টে থামিয়েছি। আমার সঙ্গে বিবি’র (নেতানিয়াহু) এ নিয়ে কঠিন কথাবার্তা হয়েছে।’

তবুও ট্রাম্প দীর্ঘমেয়াদি শান্তি প্রতিষ্ঠা নিয়ে আশাবাদী। তার ভাষায়, ‘এই চুক্তির পক্ষে ৫৯টি দেশ আছে। এর আগে এমন কিছু দেখা যায়নি। সবাই এখন আব্রাহাম অ্যাকর্ডসের অংশ হতে চায়। এখন যেহেতু ইরান আর সমস্যা নয়, সবকিছু এগোচ্ছে।’

ট্রাম্প আরো জানান, তিনি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান নিয়েও কাজ করছেন। 

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি শুক্রবার হোয়াইট হাউসে আসবেন বলে জানা গেছে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow