হাদিকে হত্যাচেষ্টা: প্রধান আসামি ফয়সালের সহযোগী গ্রেপ্তার

Dec 15, 2025 - 19:02
Dec 15, 2025 - 20:04
 0  6
হাদিকে হত্যাচেষ্টা: প্রধান আসামি ফয়সালের সহযোগী গ্রেপ্তার
হাদি হত্যাচেষ্টার প্রধান আসামির সহযোগী সন্দিগ্ধ কবির।

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টা মামলায় কবির নামে আরও একজনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

সোমবার রাতে র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক উইং কমান্ডার এম জেড এম ইন্তেখাব চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গ্রেপ্তার কবিরের গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালী সদর থানার বড় বিঘাই গ্রামে। ফয়সালেরও গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীতে। কবির ফয়সালের ঘনিষ্ঠ সহযোগী।

এর আগে, রোববার (১৪ ডিসেম্বর) রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে ফয়সাল করিম মাসুদের স্ত্রী সামিয়া, বান্ধবী মারিয়া ও শ্যালক শিপুকে আট করে র‌্যাব। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) তাদের আদালতে তোলা হলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদ আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিন করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। তার আবেদনের ভিত্তিতে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জশিতা ইসলামের আদালত তাদের ৫ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
 
হাদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে রোববার (১৪ ডিসেম্বর) পল্টন থানায় ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলায় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, হত্যাচেষ্টা, বিপজ্জনক অস্ত্র ব্যবহার করে স্বেচ্ছায় গুরুতর আঘাত, দুষ্কর্মে সহায়তার অভিযোগ আনা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ রাহুল দাউদরসহ (৩৭) অজ্ঞাতনামা আসামিরা তৎকালীন সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে যুক্ত ছিল। তারা হত্যা, গুম ও খুনের মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থান প্রতিহত করার চেষ্টা করেছিল। তবে ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে গণমানুষের অংশগ্রহণে স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটে।

জুলাই অভ্যুত্থানে আহত শরীফ ওসমান হাদি (৩৩) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে তিনি রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক প্ল্যাটফর্ম ‘ইনকিলাব মঞ্চ’ গঠন করে এর মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিভিন্ন বক্তব্য দেন। এ কারণে তিনি নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের বিরোধিতার মুখে পড়েন এবং একাধিকবার হত্যার হুমকি পান।

এজাহারে বলা হয়, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই শরীফ ওসমান হাদি ঢাকা-৮ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করেন। এর ধারাবাহিকতায় গত ১২ ডিসেম্বর দুপুর আনুমানিক ২টা ২০ মিনিটে মতিঝিল মসজিদ থেকে জুমার নামাজ শেষে প্রচারণা শেষ করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দিকে যাওয়ার পথে পল্টন থানাধীন বক্স কালভার্ট রোডে তাকে বহনকারী অটোরিক্সায় মোটরসাইকেলে থাকা দুষ্কৃতিকারীরা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি করে পালিয়ে যায়।

এদিকে সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে উন্নত চিকিৎসার জন্য শরিফ ওসমান হাদিকে নিয়ে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স সিঙ্গাপুরে নেয়া হয়েছে। ওসমান হাদির সঙ্গে সিঙ্গাপুরে গেছেন তার ভাই ওমর বিন হাদি এবং বন্ধু আমিনুল হাসান ফয়সাল।

গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকার পল্টন এলাকায় ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হয়। পরবর্তীতে পরিবারের ইচ্ছায় তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেয়া হয়। তারপর থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন ওসমান হাদি।

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ৪ ডিসেম্বর ফয়সাল আরও তিনজনের সঙ্গে ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে প্রবেশ করেন। সেখানে হাদির সঙ্গে কথা বলেন এবং পরে ৯ ডিসেম্বর তার সঙ্গে একটি বৈঠকে অংশ নেন।

ছবিতেও দেখা যায়, ফয়সাল ও আলমগীর শিল্পকলা একাডেমির কাছে হাদির সঙ্গে প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। সিসিটিভি ফুটেজ অনুসারে, ৪ ডিসেম্বর কবিরও ফয়সালের সঙ্গে ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়েছিলেন।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow