দুই দশক পর বাংলাদেশ-পাকিস্তান অর্থনৈতিক কমিশনের বৈঠক হবে ঢাকায়

Oct 14, 2025 - 02:41
 0  2
দুই দশক পর বাংলাদেশ-পাকিস্তান অর্থনৈতিক কমিশনের বৈঠক হবে ঢাকায়
প্রতীকী ছবি

দুই দশক পর বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের (জেইসি) নবম বৈঠক ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আগামী ২৭ অক্টোবরের এই বৈঠকে মৌলিক অর্থনৈতিক সহযোগিতার বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করবে দুই দেশ।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জেইসির আসন্ন বৈঠকে অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশের এবং পাকিস্তানের অর্থনীতিবিষয়ক মন্ত্রী আহাদ খান চিমা তার দেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেবেন।

কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, আহাদ চিমার ঢাকা সফরের কাছাকাছি সময়ে ইসলামাবাদ সফরে যাবেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী জাম কামাল খানের আমন্ত্রণে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনার জন্য ২৮ অক্টোবর ইসলামাবাদ রওনা হবেন। 

জানা গেছে, ঢাকা সফরের সময় জেইসি বৈঠকে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি একাধিক সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে পারেন পাকিস্তানের মন্ত্রী আহাদ চিমা। তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে দেখা করতে পারেন।

বাংলাদেশ–পাকিস্তান যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের সবশেষ বৈঠকটি ২০০৫ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ঢাকায় হয়েছিল। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা যাওয়ার পর দুই দেশের সম্পর্কে বরফ জমে। গত বছর ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বরফ গলা শুরু হয়।

জেইসিতে যা আলোচনা হতে পারে

বাংলাদেশের সঙ্গে অনেকগুলো দেশ ও জোটের মধ্যে জেইসি অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এসব দেশ ও জোটের তালিকায় রয়েছে ভারত, পাকিস্তান, সৌদি আরব, তুরস্ক এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। মূলত সব ধরনের অর্থনৈতিক সহযোগিতার বিষয়গুলো থাকে জেইসির আলোচনার টেবিলে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার অংশ হিসেবে ব্যবসা–বাণিজ্যের নানা বিষয় নিয়ে উদ্যোগ–আলোচনা হচ্ছে। তাই এবারের জেইসি বৈঠকে দুই দেশ সরাসরি অর্থনীতির সঙ্গে যুক্ত সহযোগিতার বিষয় নিয়ে আলোচনা করার বিষয়টি ঠিক করেছে। সে ক্ষেত্রে ব্যবসা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানো, কৃষিতে সহায়তা, আর্থিক সেবা খাত, ব্যাংকিংসহ সংশ্লিষ্ট খাতে কীভাবে সামনের দিনে সহায়তা এগিয়ে নেওয়া যায়, তাতে গুরুত্ব দেওয়া হবে।

বাংলাদেশ–পাকিস্তান বাণিজ্যের পরিমাণ তুলনামূলক কম হলেও এ ক্ষেত্রেও পাল্লা ইসলামাবাদের দিকে ভারী। সরকারি পরিসংখ্যানে চোখ রাখলে বিপুল পরিমাণ বাণিজ্যঘাটতি দেখা যায়। ২০২৪–২৫ অর্থবছরে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ আমদানি করেছিল ৭৮ কোটি ৭০ লাখ ডলারের পণ্য। একই সময় পাকিস্তানে রপ্তানি করেছিল ৮ কোটি ডলারের পণ্য।

আসন্ন জেইসি বৈঠকে বাণিজ্যঘাটতি কমানোর বিষয়ে আলোচনা হবে জানিয়ে এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে বাণিজ্যঘাটতি কমানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি পরিমাণে শুল্ক ও কোটামুক্তভাবে চা, পাটজাত পণ্য, ওষুধ, তৈরি পোশাক, ইলেকট্রনিক সামগ্রী আমদানির জন্য পাকিস্তানকে অনুরোধ করা হবে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow