সিরাজগঞ্জের গর্ব অয়ন্ত বালা মাহাতো

Jul 12, 2025 - 00:08
 0  5
সিরাজগঞ্জের গর্ব অয়ন্ত বালা মাহাতো
অয়ন্ত বালা মাহাতো। ছবি : সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক

সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার সোনাখাড়া ইউনিয়নের নিভৃত পল্লীগ্রাম গোতিথা। এ গাঁয়েরই ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের সন্তান অয়ন্ত বালা মাহাতো জাতীয় মহিলা ফুটবল দলে খেলার সুযোগ পেয়েছেন। তার জাতীয় মহিলা ফুটবল দলে সুযোগ পাওয়ায় উপজেলাবাসী গর্বিত।

ইতোমধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা দলের হয়ে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ খেলেছেন। বর্তমানে খেলছেন বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে।

জানা যায়, রায়গঞ্জ উপজেলার সোনাখাড়া ইউনিয়নের গোতিথা গ্রামের মনিলাল মাহাতো ওরফে বারিশা মাহাতো ও শেফালি রানি মাহাতো দম্পতির মেয়ে অয়ন্ত। একটি ছোট বাড়ি ছাড়া তাদের আর কোনো সম্পদ নেই। অন্যের জমিতে মজুর খেটেই চলে তাদের সংসার। স্বামী-স্ত্রী দুজনে মিলে মাঠে কাজ করে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা আয় হয় আর তা দিয়েই কোনোমতে দিনপাত চলে। এমন একটি পরিবারেই জন্ম অয়ন্তের। টিনের ছাউনি দেওয়া মাটির দেয়ালের ঘরে বসবাস করেন তারা।

মনিলাল মাহাতো-শেফালী দম্পতির দুই মেয়ে ও এক মেয়ের মধ্যে অয়ন্ত সবার ছোট। বড়বোন রিনা রানি মাহাতো স্নাতকোত্তর শ্রেণির শিক্ষার্থী। একমাত্র ভাই জয় কুমার মাহাতো স্থানীয় নিমগাছী ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। পাশাপাশি চান্দাইকোনা বাজারে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাকরিও করেন।

স্বজন ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, গোতিথা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠেই ফুটবল খেলার হাতেখড়ি হয় অয়ন্তের। ফুটবল খেলার প্রতি প্রচণ্ড আগ্রহ দেখে তাকে নিমগাছী প্রমিলা ফুটবল একাডেমিতে ভর্তি করে দেওয়া হয়। প্রাথমিকে পড়াশোনা শেষে বিষমডাঙ্গা গার্লস স্কুলে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয় অয়ন্ত। ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে থাকতেই বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিকেএসপিতে সুযোগ পান। বর্তমানে অয়ন্ত নবম শ্রেণির ছাত্রী।

অয়ন্তর কাকা সুশীল কুমার মাহাতো ঠাকুমা শান্তি রানি মাহাতোসহ পরিবারের লোকজন উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, আমরা অনেক গর্বিত। জাতীয় দলে খেলে আমাদের মেয়ে ভাবতেই আনন্দ পাই।

মনিলাল মাহাতো বলেন, শিশুকাল থেকেই ফুটবল খেলার প্রতি প্রচণ্ড আগ্রহ ছিল অয়ন্তের। তার আগ্রহ দেখে নিমগাছী প্রমীলা ফুটবল একাডেমির শিক্ষক নিহার রঞ্জন মাহাতো একাডেমিতে ভর্তি করিয়ে নেন এবং ফুটবল শিক্ষা দিতে থাকেন। একসময় তারই চেষ্টাতে বিকেএসপিতে ভর্তি হয় অয়ন্ত। সে এখন বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে খেলে, এটা আমার জন্য অত্যন্ত গর্বের।

প্রমীলা ফুটবল একাডেমির প্রশিক্ষক নিহার রঞ্জন মাহাতো বলেন, অয়ন্ত বালা মাহাতো জাতীয় নারী ফুটবল দলে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এটি আমাদের প্রতিষ্ঠান তথা সিরাজগঞ্জ জেলাবাসীর জন্য গৌরবের।

নিমগাছী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক মো. সুলতান মাহমুদ বলেন, অয়ন্ত বালা মাহাতো জাতীয় নারী ফুটবল দলে সুযোগ পেয়ে আমাদের গর্বিত করেছে। আমরা চাই ভালো ফুটবল খেলে সে আরও সুনাম বয়ে নিয়ে আসুক।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow