গত হজে ব্যয় না হওয়া ৩৭ কোটি ৯৪ লাখ টাকা ফেরত দেওয়া হবে : ধর্ম উপদেষ্টা

সৌদি আরবে আটকে থাকা হজ এজেন্সিগুলোর প্রায় ৩৮ কোটি টাকা ফেরত আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। সোমবার (১৩ অক্টোবর) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা এ তথ্য জানান।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের মাসার নুসুক প্ল্যাটফর্মের আইবিএএন (ইন্টারন্যাশনাল ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নাম্বার)-এ সর্বমোট ৯৯০টি এজেন্সির অব্যয়িত অর্থ জমা ছিল এবং সবকটি এজেন্সির টাকাই ফেরত পাওয়া গেছে। এ অর্থের পরিমাণ এক কোটি ২৫ লাখ ৩৮ হাজার ৪৬৮ সৌদি রিয়াল ও ৫৭ হালালা যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩৭ কোটি ৯৪ লাখ টাকার সমান। এরই মধ্যে এই অর্থ বাংলাদেশ হজ অফিসের মাসার নুসুক প্ল্যাটফর্মের আইবিএএন থেকে বাংলাদেশ হজ অফিসের হজ সংক্রান্ত সৌদি ফ্রান্সি ব্যাংকে পরিচালিত একাউন্টে স্থানান্তর করা হয়েছে।
৯৯০টি হজ এজেন্সির মধ্যে তিনটি এজেন্সির হিসেবে কোনো অব্যয়িত অর্থ জমা নেই জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ৮৩১টি এজেন্সির ব্যাংক হিসাব আছে তাদের টাকা ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর করা হবে এবং বাকি ১৫৬টি এজেন্সির ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য চাওয়া হয়েছে। তথ্য পেলে তাদের টাকা ফেরত দেওয়া হবে। এ টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য আমাদের দাপ্তরিক সব প্রক্রিয়া এরই মধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে।
ফেরত দেওয়া টাকার পরিমাণ একটি এজেন্সির অনুকূলে সর্বোচ্চ ৪৫ লাখ এবং একটি এজেন্সির অনুকূলে সর্বনিম্ন ২ টাকা বলেও জানান খালিদ হোসেন।
তিনি বলেন, বিগত কয়েক বছরের জমা পড়ে থাকা অব্যয়িত অর্থ ফেরত আনা এবং সেটা সংশ্লিষ্ট হজ এজেন্সিকে ফেরত দেওয়ার ক্ষেত্রে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় উদ্যোগ ও সদিচ্ছার প্রতিফলন ঘটেছে। আমরা সবাই মিলে বাংলাদেশের হজ ব্যবস্থাপনাকে একটি কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাই। ২০২৫ সালের যে অনবদ্য হজ ব্যবস্থাপনা আপনারা দেখেছেন সেটার ধারাবাহিকতা আমরা বজায় রাখার বিষয়ে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, আমাদের দেশের সিংহভাগ হজযাত্রী বেসরকারি হজ এজেন্সির মাধ্যমে হজ পালন করে থাকেন। শতকরা হিসেবে এই সংখ্যা ৯০ শতাংশেরও বেশি। সরকারি-বেসরকারি উভয় মাধ্যমে হজযাত্রীদের হজ পালনের জন্য সৌদি প্রান্তের খরচের টাকা সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক তাদের মন্ত্রণালয়ের মাসার নুসুক প্ল্যাটফর্মের আইবিএএন হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন সাপেক্ষে জমা দেয়া হয়ে থাকে।
মাসার নুসুক প্লাটফর্মে নিবন্ধিত বাংলাদেশি হজ এজেন্সির সংখ্যা এক হাজার ৩৩৯টি জানিয়ে তিনি বলেন, এসব এজেন্সি গত ৭/৮ বছরে হজের সৌদি পর্বের খরচ নির্বাহের জন্য সেদেশের নুসুক প্ল্যাটফর্মের আইবিএএন-এ যে টাকা পাঠিয়েছে সেখানে কিছু টাকা অব্যয়িত বা উদ্বৃত্ত ছিল। এই অর্থ ফেরত পাওয়ার জন্য হজ এজেন্সির দিক থেকে আমাদের কাছে অনুরোধ জানানো হয়।
ধর্ম উপদেষ্টা আরও বলেন, এ পরিপ্রেক্ষিতে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সৌদি সরকারের কাছে জমে থাকা হজ এজেন্সির অবশিষ্ট টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য বেশ কয়েকবার পত্র মারফত যোগাযোগ করা হয়। বিভিন্ন সময়ে সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে অনুষ্ঠিত দ্বিপাক্ষিক বৈঠকেও এ বিষয়ে আলোচনা করা হয়। এ বছর হজ শেষে আমি নিজে সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি মিনিস্টারকে এ বিষয়ে একটি বিস্তারিত পত্র প্রেরণের জন্য অনুরোধ করি। এমনকি বিভিন্ন সময়ে খুদে বার্তার মাধ্যমেও আমি সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীকে এ বিষয়টি দ্রুততম সময়ে নিষ্পত্তির জন্য অনুরোধ জানাই। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তারা অর্থ ফেরত দিয়েছে।
এ অর্থ এজেন্সিগুলো হজযাত্রীদের ফেরত দেবে কি না- জানতে চাইলে খালিদ হোসেন বলেন, এজেন্সিগুলোর কিছু টাকা বেশিও পাঠাতে হয়। হজ যাত্রীদের কাছ থেকে নিয়ে পাঠিয়েছে এমন নয়। এটা তাদের ব্যবসা। টাকার যাতে কমতি না পড়ে সেজন্য তারা কিছু বেশি পাঠিয়ে থাকে।
What's Your Reaction?






