চার উপদেষ্টাকে নিয়ে ‘আয়নাঘর’ পরিদর্শন করলেন প্রধান উপদেষ্টা

Feb 12, 2025 - 17:54
 0  8
চার উপদেষ্টাকে নিয়ে ‘আয়নাঘর’ পরিদর্শন করলেন প্রধান উপদেষ্টা
ছবি : সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ‘আয়নাঘর’ হিসেব পরিচিত গোপন বন্দীশালা পরিদর্শন করেছেন। তিনি প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) যৌথ জিজ্ঞাসাবাদ সেল এবং র‌্যাব-২ এর সিপিসি-৩ এর ভেতরের সেলগুলো পরিদর্শন করেন। পরে র‌্যাব সদর দপ্তরের টাস্কফোর্স ইন্টেলিজেন্স সেন্টারে যান।

এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, উপদেষ্টা মাহফুজ আলম এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

যেখানে গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের সদস্য এবং দেশি-বিদেশি গণমাধ্যম উপস্থিত ছিলেন। এসব ‘গোপন বন্দীশালা’ আগারগাঁও, কচুক্ষেত ও উত্তরা এলাকায় বলে জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো ছবিতে দেখা যায়, অধ্যাপক ইউনূস গোপন বন্দীশালার বিভিন্ন কক্ষ ঘুরে দেখছেন।

এর আগে ১৯ জানুয়ারি গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন (দ্য কমিশন অব এনকোয়ারি অন এনফোর্সড ডিসাপিয়ারেন্স) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করে। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টাকে গুমের ঘটনায় তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জানিয়ে ‘জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল’ যা ‘আয়নাঘর’ নামে পরিচিতি পেয়েছে তা পরিদর্শনের অনুরোধ জানিয়েছেন কমিশনের সদস্যরা।

আওয়ামী লীগ সরকারের সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ‘গুম’ হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানে এ তদন্ত কমিশন গঠন করে সরকার। হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীকে সভাপতি করে পাঁচ সদস্যের এ কমিশন গঠন করা হয়েছে। ২০১০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ৫ আগস্ট পর্যন্ত সব ‘গুমের’ ঘটনা তদন্ত করবে এই কমিশন। ৪৫ কর্মদিবসের মধ্যে কমিশনকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

আওয়ামী লীগের শাসনকালে ক্রসফায়ারের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে ধরে নেওয়ার পর লাশ উদ্ধার বা নিখোঁজের ঘটনাগুলো আলোচনায় ছিল। এ সময় হেফাজতে নিয়ে নির্যাতন, ‘আয়নাঘর’ নামে গোপন বন্দিশালায় দীর্ঘদিন আটকে রাখার ঘটনাগুলোও উঠে আসে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে।

বিএনপির দাবি, চলতি বছরের ৫ আগস্ট পর্যন্ত ১ হাজার ২৪ জনকে গুম করা হয়েছে। পরে তাদের মধ্যে ৭৮১ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। দীর্ঘদিন আটকে রেখে ছেড়ে দেওয়ার পরও বর্তমানে অন্তত ১৫৭ ব্যক্তি গুম রয়েছেন।

মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’-এর তথ্যে, আওয়ামী লীগ সরকারের ২০০৯ থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন ২ হাজার ৬৯৯ জন। আর এ সময়ে গুম হয়েছেন অন্তত ৬৭৭ জন। গুমের শিকার বেশির ভাগের সন্ধান পাওয়া যায়, যাদের গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। আলোচিত গুমের ঘটনার মধ্যে বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলী ও তাঁর গাড়িচালক, দলটির সাবেক এমপি সাইফুল ইসলাম হীরুসহ অন্তত ২৫ নেতার সন্ধান এখনও মেলেনি। এ তালিকায় জামায়াত-শিবিরের অন্তত ৯ জন রয়েছেন। বাকিরা নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। তাদের ফিরে পাওয়ার দাবিতে নানা কর্মসূচি করে আসছে স্বজনের সংগঠন ‘মায়ের ডাক’।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow