ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক, কয়েকজন উপদেষ্টাকে নিয়ে আপত্তি জানাল জামায়াত

Oct 23, 2025 - 01:21
 0  1
ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক, কয়েকজন উপদেষ্টাকে নিয়ে আপত্তি জানাল জামায়াত
ছবি : সংগৃহীত

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে কয়েকজন উপদেষ্টাকে নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, ‘যারা উপদেষ্টা, তাদের ব্যাপারে বলেছি, সকলের ব্যাপারে নয়। আমরা বলেছি, কিছু কিছু লোক আপনাকে (প্রধান উপদেষ্টা) বিভ্রান্ত করে। আপনার প্রতি আমাদের আস্থা আছে। কিন্তু আপনার কিছু লোক আপনার পাশে আপনাকে বিভ্রান্ত করে এবং ওরা কোনো একটা দলের পক্ষে কাজ করে আমরা মনে করি। তাদের ব্যাপারে আপনাকে হুঁশিয়ার থাকা দরকার।’

বুধবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন। 

বৈঠকে কোনো উপদেষ্টার অপসারণের দাবি তুলেছেন কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, আমরা প্রথম দিন দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আমরা প্রথম দিনই অপসারণ চাইনি।

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে কোনো দাবি তোলেনি জামায়াতে ইসলামী। সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যাপারে এখনো সুপ্রিম কোর্টে শুনানি হচ্ছে। তার দল সুপ্রিম কোর্টের রায়ের অপেক্ষায় আছে। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে কোনো ব্যত্যয় না হলে অন্তর্বর্তী সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করছি। এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন যে, উনি এগুলো নিয়ে গভীরভাবে চিন্তাভাবনা করছেন এবং যেটা করতে হবে, সেটিই তিনি করবেন।

গণভোটের বিষয়ে বিএনপি জটিলতা সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ এনে তিনি বলেন, গণভোটের ব্যাপারে বিএনপি কোনোভাবে রাজি হচ্ছিল না শুরুর দিকে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিএনপি গণভোটে রাজি হয়েছে। এখন তারা একটা জটিলতা তৈরি করার চেষ্টা করছে। সেটা হচ্ছে, গণভোট এবং জাতীয় নির্বাচন একদিনে করার দাবি। দুইটা একেবারে আলাদা জিনিস। জাতীয় নির্বাচনে জনপ্রতিনিধিরা নির্বাচিত হয়ে দেশে কারা সরকার চালাবে– সেটা নির্ধারিত হয়। আর গণভোট হচ্ছে আমাদের কতগুলো সংস্কার হবে, কীভাবে সরকার পরিচালনা হবে, কীভাবে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে, কীভাবে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা থাকবে– এসব অনেক বিষয়ে জনগণের সিদ্ধান্ত।

বৈঠকে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে তাহের বলেন, আমরা জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। উনি আমাদের সঙ্গে একমত হয়েছেন যে, এটা বাস্তবায়ন যদি না হয়, তাহলে এই পরিশ্রম তো পণ্ডশ্রম ছাড়া কিছু নয়। তো সে কারণে উনি বলেছেন, আমি যথাযথ উদ্যোগ নেব। 

তিনি বলেন, একটি আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদকে সাংবিধানিক মর্যাদা দিতে হবে। এমন কথা আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি। এটা কনস্টিটিউশন (সংবিধান) নয়। এটা হচ্ছে এক্সট্রা কনস্টিটিউশনাল অ্যারেঞ্জমেন্ট, যেটা কোনো সরকার এ রকম (অভ্যুত্থান বা বড় পরিবর্তন) একটি পরিস্থিতিতে পড়লে দেওয়ার এখতিয়ার রাখে। এবং উনি আমাদের সঙ্গে একমত হয়েছেন যে একটা আদেশের মাধ্যমে এইটা হবে।

জুলাই সনদের বিষয়ে অধ্যাদেশ জারির কথা কেউ কেউ বললেও তাতে ভিন্নমত রয়েছে জামায়াতের। এই অবস্থানের পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে আবদুল্লাহ তাহের বলেন, অধ্যাদেশ খুব দুর্বল। এগুলোর সাংবিধানিক মর্যাদা দেওয়ার মতো ক্ষমতা অধ্যাদেশে নেই। কিন্তু আদেশ ইজ ইকুইভেলেন্ট (সমান) টু সাংবিধানিক পরিবর্তন পাওয়ার (ক্ষমতা) এবং অথরিটির দিক থেকে। আমরা আমাদের এক্সপার্ট কমিটির সঙ্গে বসেছি। আমাদের এক্সপার্ট কমিটি আবার ঐকমত্য কমিশনের এক্সপার্ট কমিটির সঙ্গে বসেছে। সবাই এই পরামর্শ দিয়েছেন যে একটি আদেশের মাধ্যম এটাকে বৈধতা দিতে হবে। আর সেই আদেশের ওপরেই গণভোট হবে। আমরা এটা ক্লিয়ারলি (পরিষ্কার) বলে আসছি। উনি আমাদের কথায় কনভিন্স (রাজি) হয়েছেন বলে আমাদের মনে হয়। আমরা আশা করি, সেদিকে যাবে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow