নারায়ণগঞ্জে আলোচিত ৭ খুনের ফাঁসির রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি

Apr 25, 2025 - 18:19
 0  4
নারায়ণগঞ্জে আলোচিত ৭ খুনের ফাঁসির রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি
ছবি : সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জের বহুল আলোচিত চাঞ্চল্যকর ৭ খুনের আসামিদের ফাঁসির রায় দ্রুত কার্যকরের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন নিহতদের স্বজন ও স্থানীয়রা। শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) সকালে সিদ্ধিরগঞ্জের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মৌচাক বাসস্ট্যান্ডে এ মানববন্ধন করা হয়।

মানববন্ধনে অংশ নিয়ে নিহতদের স্বজনরা ও স্থানীয় বাসিন্দারা অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান ও বিচার বিভাগের কাছে হত্যাকারীদের বিচারের আবেদন করেন।

স্বামী হত্যার বিচারের দাবিতে নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি বলেন, আমরা আমাদের স্বজনেদর হারিয়েছি ১১ বছর পার হয়ে গেছে। অথচ এখন পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্ট খুনিদের ফাঁসি দেয়নি। বিচার বিভাগ ও অন্তর্বর্তী সরকার প্রধানের কাছে আমাদের একটাই দাবি অন্তত আমাদের ৭টা পরিবারের কথা চিন্তা করে বিচার কার্যক্রম শেষ করা হোক। আমি আইন উপদেষ্টার প্রতি আবেদন করছি যে আমরা সাতটা পরিবার কর্তা হারা হয়েছি। আমাদের অবস্থা বিবেচনা করে সুপ্রিম কোর্টের বিচার কার্যক্রম শেষ করে দ্রুত মামলাটা নিষ্পত্তি করা হোক। আমরা এইটুকু দেখে যেতে চাই।

নিহত জাহাঙ্গীরের স্ত্রী সামছুন নাহার নুপুর বলেন, আমার স্বামীকে হত্যার সময় আমার মেয়ে গর্ভে ছিল। এখন আমার মেয়ের বয়স এখন ১১ বছর। অথচ এখন পর্যন্ত  আমার মেয়ে তার বাবার হত্যার বিচার পায়নি। উচ্চ আদালতে মামলা ঝুলে রয়েছে। আমরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে আবেদন করছি যে অন্তত আমাদেরকে এই হত্যার বিচারটা শেষ করে দেওয়া হোক। আমরা অসহায়। 

মানববন্ধনে মাওলানা মো. শিহাব উদ্দিন, মৃত নজরুল ইসলামের ছোট ভাই মো. আব্দুস সালাম, মৃত তাজুল ইসলামের বাবা মোহাম্মদ আবুল খায়ের, মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, আহসানুল্লাহ মাস্টার, আব্দুল খালেক, জামাল উদ্দিন, মো. হারুনুর রশিদ, মো. নাসির উদ্দিনসহ ২ নং ওয়ার্ডবাসী  উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড থেকে নিহত তৎকালীন প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও তার সহযোগীরা এবং আরেক নিহত আইনজীবী চন্দন কুমার সরকারসহ মোট সাতজন গুম হন। গুম হওয়ার পরবর্তীতে ঘটনার তিন দিন পর নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে নিখোঁজদের মরদেহ ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ভিকটিম প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি ও ভিকটিম চন্দন কুমার সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল দুটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে আসামিরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত ৩৫ আসামির মধ্যে সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন, অব্যাহতিপ্রাপ্ত র‌্যাব-১১ সাবেক অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেন, কমান্ডার এম এম রানাসহ ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেন। উচ্চ আদালত ২০১৮ সালে ২২ আগস্ট নূর হোসেন ও র‌্যাবের সাবেক ৩ কর্মকর্তাসহ ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ বহাল ও ১১ জনকে যাবজ্জীবন ও ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেন।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow