বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রুবেল নিহতের ঘটনায় মামলা বাণিজ্যের অভিযোগ
মোঃ সাজ্জাত বিশ্বাস, ঝালকাঠি
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পোশাককর্মী মো. রুবেল তালুকদার (২০) নিহতের ঘটনায় হত্যা মামলা নিয়ে বাণিজ্য করার অভিযোগ করেছেন স্বজনেরা।
নিহত রুবেলের পরিবারের দাবি, মামলায় ঢাকার সাভারের আশুলিয়া এলাকার অনেক পোশাক কারখানার মালিক ও কর্মকর্তাদের আসামি করা হয়েছে। তাঁদের কাছ থেকে মামলার বাদী বিভিন্নভাবে আর্থিক সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করছেন। মামলাটি তাঁদের পরিবারের অজান্তে করা হয়েছে।
নিহত রুবেল তালুকদার ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার চর হাইলাকাঠি গ্রামের মালেক তালুকদারের ছেলে। গত বছরের ৫ আগস্ট আশুলিয়া এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলিতে রুবেল তালুকদার নিহত হন। তাঁর লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই রাজাপুর উপজেলার মঠবাড়ি ইউনিয়নের চর হাইলাকঠি গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এ ঘটনায় পরিবারের অজান্তে গত বছরের ২৯ আগস্ট নিহত রুবেলের দূর-সম্পর্কের চাচাতো ভাই খলিলুর রহমান বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় ৬১ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। খলিলুর রহমান ঝালকাঠি সদরের গাবখান ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক। মামলায় আশুলিয়া এলাকার অনেক পোশাক কারখানার মালিক ও কর্মকর্তাদের আসামি করা হয়েছে।
মামলার বাদী খলিলুর রহমান বলেন, ‘আমি চাচাতো ভাইয়ের হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার পেতে মামলার বাদী হয়েছি। কারও কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নেওয়ার কথা সঠিক নয়। মামলার পর ঢাকার মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট আদালত রুবেলের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশ অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সকালে কবর থেকে রুবেল তালুকদারের লাশ উত্তোলন করতে আসেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাহুল চন্দ, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মাসুম ও রাজাপুর থানা-পুলিশ সদস্যরা। কিন্তু পরিবারের বাধার মুখে তাঁরা লাশ তুলতে পারেননি।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাহুল চন্দ বলেন, মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আদালতের নির্দেশে নিহত রুবেলের লাশ উত্তোলনের জন্য গেলে পরিবারের লোকজন লাশ উত্তোলন না করার জন্য লিখিত আবেদন দেন। তাই লাশ উত্তোলন করা হয়নি।
এ বিষয়ে নিহত রুবেল তালুকদারের বড় ভাই সুমন তালুকদার বলেন, মামলাটি আমাদের পরিবারের অজান্তে করা হয়েছে। এ মামলায় অনেক পোশাক কারখানার মালিক ও কর্মকর্তাদের আসামি করা হয়েছে। তাঁদের কাছ থেকে মামলার বাদী বিভিন্নভাবে আর্থিক সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করছেন। তাই লাশের ময়নাতদন্তে আমাদের আপত্তি আছে।
What's Your Reaction?