শশুর বাড়ি যাওয়া হলো না জাবি শিক্ষক মৌমিতার!, বাড়িতে শোকের মাতম

পাবনা প্রতিনিধি

চলতি বছরের জানুয়ারিতে পারিবারিকভাবে বিয়ে রেজিস্ট্রি হয়েছিল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জান্নাতুল ফেরদৌস মৌমিতার, পরিবারের আশা ছিল একমাত্র মেয়েকে জাকজমকপূর্ণ আয়োজনের মাধ্যমে শশুরবাড়িতে পাঠানো। কিন্তু তা আর হলো না। মাত্র ৩০ বছর বয়সেই পরপারে পাড়ি জমালেন তিনি।

যেবাড়িতে বিয়ের ধুমধাম অনুষ্ঠান করার কথা সেই পাবনার বাড়িতে এখন চলছে শোকের মাতম। জান্নাতুল ফেরদৌস মৌমিতা পাবনার বিশিষ্ট সাংবাদিক পাবনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি, দৈনিক ইত্তেফাকের পাবনা প্রতিনিধি ও অবসরপ্রাপ্ত সহকারী অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান রুমি খোন্দকার এবং পাবনা কলেজের সাবেক সহকারী অধ্যাপক লুৎফুন্নাহার পলির এক মাত্র সন্তান।

পারিবারিক ভাবে জানা যায়, ১৯৯৫ সালে জন্ম জান্নাতুল ফেরদৌস মৌমিতা ছোট থেকেই মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন। ২০০৯ সালে পাবনা সরকারি বালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং পাবনা মহিলা কলেজ থেকে ২০১১ সালে গোল্ডেন জিপিএ-৫ নিয়ে পাশ করার পর ভর্তি হোন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানেই অনার্স ও মাস্টার্স শেষে ২০২১ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের প্রভাষক হিসেবে শিক্ষকতা শুরু করেন।

বাবা রুমী খোন্দকার জানান, নির্বাচনের দায়িত্ব শেষে রাত ১২টার দিকে শিক্ষক কোয়ার্টারে তার বাসায় গিয়েছিল। পরে সকালে যখন তাকে নির্বাচনের ভোট গণনার কক্ষে ডাকা হয়েছিল, তখন সেখানে যায়। কিন্তু কক্ষে ঢুকার আগেই দরজার সামনেই সে পড়ে যায়। পরে তার মৃত্যু হয়। গতকাল ভোটগ্রহণের পর আমার সঙ্গে ওর কথা হয়। ও নির্বাচন নিয়ে বেশ খুশি ছিল।

জান্নাতুল ফেরদৌস মৌমিতার মরদেহ এখন পাবনার পথে। পাবনা পৌর এলাকার নিজ মহল্লা কাচারীপাড়া মসজিদে বাদ এশা তার দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরে পাবনার আরিফপুর কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে বলে পারিবারিক ভাবে জানা গেছে। 

এদিকে সাংবাদিক বাবার একমাত্র মেয়ের মৃত্যুতে পাবনায় গণমাধ্যম কর্মিদের মধ্যে নেমে আসে শোকের ছায়া। পাবনার বাসায় পরিবারের সদস্যদের শান্ত্বনা দিতে ছুঁটে যান বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মিরা। একমাত্র সন্তান হারিয়ে বাকরুদ্ধ বাবা মাকে শাস্ত্বনা দেয়ার ভাষা যেন হারিয়ে ফেলেছেন সতীর্থসহজনেরা।