সিরাজগঞ্জে উৎপাদিত দুধকে ঘিরেই স্বপ্ন বুনেছেন উদ্যোক্তারা

Jan 16, 2025 - 15:36
 0  1
সিরাজগঞ্জে উৎপাদিত দুধকে ঘিরেই স্বপ্ন বুনেছেন উদ্যোক্তারা
ছবি : সংগৃহীত

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর অঞ্চলের গো-খামার থেকে উৎপাদিত দুধ সমিতিভুক্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিক্রি ছাড়া আর কিছুই করতে পারতেন না খামারীরা। কিন্তু এখন পাল্টে গেছে সেই চিত্র। প্রান্তিক খামারীদের উৎপাদিত দুধকে ঘিরেই স্বপ্ন বুনেছেন উদ্যোক্তারা।

ইনসাফ ডেইরি প্রতিষ্ঠানের মালিক রফিকুল ইসলাম আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারে মাধ্যমে দুগ্ধজাত বিভিন্ন পণ্য তৈরি করে বাজারজাত করছেন। ফলে ধীরে ধীরে সম্ভাবনাময় শিল্পে পরিণত হচ্ছে এ দুগ্ধজাত পণ্য। এতে খামারীরা দুধের দাম ভালো পাওয়ার পাশাপাশি কর্মসংস্থান হয়েছে অনেকেরই। দেশের অন্যতম দুগ্ধ ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলা। এ উপজেলায়  রয়েছে দেশের সববৃহৎ গো-চারণ ভূমি। আর এ গো চারণ ভূমির প্রায় ১৫শ একর জায়গা জুড়ে গড়ে উঠেছে ছোট বড় মিলে প্রায় ৩০ হাজার গো-খামার।

এসব খামার থেকে প্রতিদিন প্রায় ৫ লাখ লিটার দুধ উৎপন্ন হয়। আর উৎপাদিত এ দুধ সরবরাহ করা হয় দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদনকারী বেশ কয়েকটি সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। খামারীরা এসব প্রতিষ্ঠানের সমিতিভুক্ত হওয়ায় তাদের নির্ধারিত প্রতি লিটার দুধ ৫০ থেকে ৫৫ টাকা দরে বিক্রি করে থাকে। এতে উৎপাদিত দুধের সঠিক বাজার মূল্য না পাওয়ায় লোকসানে পড়তে হয় তাদের। মাঝে মধ্যে সমিতিভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো দুধ সংগ্রহ কমিয়ে দিলে উৎপাদিত বিপুল পরিমাণ দুধ নিয়ে বিপাকে পড়তে হতো খামারীদের।

কিন্তু এখন পাল্টে গেছে সেই চিত্র। ছোট ছোট খামারীদের লোকসানের হাত থেকে রক্ষায় স্থানীয় উদ্যোক্তারা গড়ে তুলেছে প্রায় অর্ধশত দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান।

ইনসাফ ডেইরি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী রফিকুল ইসলাম জানান, উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের সহায়তায় আধুনিক প্রযুক্তিতে গড়ে তোলা হয়েছে এসব প্রতিষ্ঠানগুলো। যেখানে প্রতিদিন প্রান্তিক খামারীদের কাছ থেকে প্রতি লিটার দুধ ৬০ থেকে ৬৫ টাকা দরে সংগ্রহ করা হচ্ছে। অরুপ ছানা কারখানার স্বত্বাধিকারী বাসু চন্দ রায় জানান, স্থানীয় খামারীদের কাছ থেকে দুধ সংগ্রহ করে উৎপাদিত হচ্ছে উৎকৃষ্ট মানের মাঠা, লাবাং, ঘি, পনির, ছানাসহ বিভিন্ন দুগ্ধজাত পণ্য।

উৎপাদিত এসব পণ্যের চাহিদা ভালো থাকায় ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। ব্যবসা ভালো হওয়ায় খুশি বাঘাবাড়ি মিল্ক প্রোডাক্ট এর স্বত্বাধিকারী তমিজ উদ্দিনসহ অন্যান্য উদ্যোক্তারা।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, জেলার সম্ভাবনায় এ দুগ্ধ শিল্পকে এগিয়ে নিতে সরকারিভাবে উদ্যোক্তাদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

ইতোমধ্যে বাঘাবাড়িতে গড়ে উঠা বেসরকারি দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত পণ্য সামগ্রী দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি করা হয়। এতে প্রতিদিন তিন কোটি টাকার পণ্য বেচা কেনা হয় বলে জানিয়েছেন এ প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow