উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার আসামিদের আশ্রয় দেয়ার অভিযোগ

Nov 2, 2025 - 18:40
 0  3
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার আসামিদের আশ্রয় দেয়ার অভিযোগ
ছবি : সংগৃহীত

কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা থানার কড়ুইরাঁড়ির চাঞ্চল্যকর ট্রিপল মার্ডারের আসামিদেরকে বিভিন্নভাবে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বিরুদ্ধে। সেই সাথে ভুক্তভোগী পরিবারকে মামলা উঠিয়ে নিতে বিভিন্নভাবে হয়রানি ও হুমকি দেওয়া হচ্ছেও বলে অভিযোগ করেন তারা।

আলোচিত ট্রিপল মার্ডারের দীর্ঘ চার মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও মূল আসামিদের কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। অপরদিকে হুমকিতে পরে নিজ বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে ভুক্তভোগী পরিবার।

অভিযোগ আছে, মূল আসামিরা উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও তার বাবার আশ্রয়ে থেকে মামলা তুলে না নিলে বাদীকে মেরে ফেলা ও ধর্ষণের হুমকি দিচ্ছে।

ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, মূল আসামিদের আইনের বাহিরে রেখে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে নামেমাত্র কিছু আসামিকে গ্রেপ্তার করলেও তাদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ কিংবা নির্দিষ্ট কোন ধারা উল্লেখ না করেই, কোর্টে পাঠান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক নয়ন কুমার চক্রবর্তী। যে কারনে উচ্চ আদালত থেকে আগাম জামিনে বের হওয়ার চেষ্টা করছে আসামিরা।

সম্পতি ঘটনার চার মাস পর মা, বোন, ভাইয়ের কবর জিয়ারত ও দোয়া মাহফিলে কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের প্রতিটা সদস্য, আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীরা। এখন তাদের অপেক্ষা দোষীদের আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা।

ভুক্তভোগী পরিবার জানায়, আইনি সহায়তা পেতে জীবনের ঝুকি নিয়ে দৌড়াচ্ছেন বিভিন্ন দপ্তরে। তবে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের ইশারায় কোন সঠিক বিচারের আশার বাণী পাচ্ছেন না তারা। এতে কতে নিশ্চিন্তে ঘুরছেন আসামিরা।

নিহত রুবি আক্তারের ছোট মেয়ে রুমা আক্তার বলেন, আমার মা, বোন, ভাইকে যে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে তা আবু জাহেলকে হার মানায়। আজকে চার মাস হয়ে গেছে, একটা প্রধান আসামি ধরতে পারে নাই পুলিশ৷ আসামি না ধরার পেছনে উপদেষ্টা আসিফ ও তার বাবার হাত রয়েছে। তারাই আসামিদেরকে শেল্টার দিয়ে ধরা ছোয়ার বাইরে রাখছেন। উল্টো আমাকে ও আমার বোনকে মেরে নির্বংশ করে দিতে চান তারা।আমরা উপদেষ্টার ভয়ে এতোদিন বাড়িতে আসি না। কারণ আসিফ আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিছে। ওদের টার্গেট আমাদের মেরে ফেলার। আর উপদেষ্টা আসিফ বলে দিছে ৩ জন মারলে যে আইন হবে, ৪ জন মারলে সেই আইন হবে।

তিনি জানান, মূল আসামিরা কেন গ্রেপ্তার হয় না এই জন্য আমি এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করি। তিনি আমাকে বলেন, আমি গেলে তো আসামি পাই না।

নিহত রুবি আক্তারের বড় মেয়ে মামলার বাদি রিক্তা আক্তার বলেন, মামলায় যাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদেরকে উল্লেখযোগ্য কোন ধারা দেয়নি ডিবি পুলিশ। আসামি ধরার সময় আমরা মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে টাকা-পয়সা দিয়ে সহযোগিতা করেছি। এই আসামি না ধরার পিছনে একমাত্র কারণ হচ্ছে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। আমরা কি আমাদের মা-ভাই-বোন হত্যার বিচার পাব না.? আমরা শুধু সঠিক বিচার চাই। উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও তার বাবার ইশারায় সব চলছে। এসব বন্ধ করে সঠিক আসামিদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি করছি।

নিহত রাসেল মিয়ার স্ত্রীর মিম আক্তার বলেন, উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের লোকজনের ভয়ে আমরা কোন জায়গায় যাইতে পারতেছি না। ওরা এখনো আমাদেরকে ফোনে হুমকি দেয়। আমাকে ফোন দিয়ে বলছে, তোর স্বামীকে তো কুপিয়ে মারছি, তরে সামনে পেলে ২০-৩০ জন মিলে ধর্ষণ করে মেরে ফেলবো। আমরা এই অত্যাচারিত মানুষদের কাছ থেকে মুক্তি চাই, দেশবাসীর কাছে আমার পরিবারের হত্যার বিচার চাই।

তবে তদন্ত অফিসার নয়ন কুমার চক্রবর্তী জানান, মামলা দ্রুত গতিতে চলছে। এজাহার নামীয় ৭ জন ও সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ৯ জনসহ মোট ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বাকিদের গ্রেপ্তারের জন্য চেষ্টা করছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলমান আছে, তদন্ত শেষে আইনি প্রক্রিয়ায় নির্দিষ্ট ধারা যোগ করা হবে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow