ফায়ার ফাইটার নয়নের বাড়িতে শোকের মাতম

Dec 26, 2024 - 16:26
 0  2
ফায়ার ফাইটার নয়নের বাড়িতে শোকের মাতম
ছবি : সংগৃহীত

প্রশাসনের প্রাণ কেন্দ্র সচিবালয়ে আগুন নেভাতে গিয়ে ট্রাক চাপায় নিহত ফায়ার সার্ভিস কর্মী মো. সোহানুর জামান নয়নের গ্রামের বাড়ি রংপুরে মিঠাপুকুর উপজেলার ছড়ান আটপুনিয়া গ্রামে চলছে শোকের মাতম। এক মেয়ে ও এক ছেলে সন্তানের মধ্যে নয়ন ছিল ছোট। সন্তানের মৃত্যুর সংবাদ জানার পর থেকে কাঁদতে কাঁদতে বারবার অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছেন তার মা নার্গিস বেগম।

একমাত্র ছেলে সন্তানকে হারিয়ে শোকের মাতম বইছে পরিবারে। আত্মীয়-স্বজন, পাড়াপ্রতিবেশীরাও কাঁদছেন নয়নের এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে। ঘটনা জানাজানি হলে নিহত নয়নের বাড়ি রংপুরের মা নার্গিস বেগম সন্তানের শোকে বার বার জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন। স্বজনদের বুক ফাটা আর্তনাদ সেখানকার বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, পুরো আটপুনিয়া গ্রাম যেন শোকে স্তব্ধ হয়ে গেছে। নয়নের বাবা কৃষক আখতারুজ্জামান কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন। সন্তানের নিহত হওয়ার খবর মোবাইল ফোনে পাওয়ার পর থেকে তিনি নির্বাক হয়ে পরেছেন। কারো সঙ্গে কথা বলছেন না।

নয়নের বড় বোন সীমা আকতার জানান, তার ভাই ২ বছর হলো ফায়ার সার্ভিসে চাকরি করছেন। নয়নের মূল কর্মস্থল সিলেট জেলার বিশ্বনাথ উপজেলা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে। ডেপুটিটেশনের কর্মরত ছিলেন ঢাকার তেজগাঁও ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে। সেখানে ২১ দিনের প্রশিক্ষণ গ্রহণ শেষে বর্তমানে ফায়ার সার্ভিসের বিশেষ টিমের সদস্য হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বুধবার গভীর রাতে সচিবালয়ে আগুন লাগার খবর পেয়ে অন্যান্য সহকর্মীদের সঙ্গে নয়নও ঘটনা স্থলে যান। দায়িত্বপালন কালে একটি ট্রাক তাকে ধাক্কা দেয়। এতে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।

নিহত ফায়ার ফাইটার নয়নের ভগ্নিপতি সাইফুল ইসলাম জানান, নয়ন পরিবারে একমাত্র উপার্জনকারী ছিল। তার বেতনের টাকায় তাদের সংসার চলতো। জমি বিক্রি করে চাকরি নিয়েছিল। তার মৃত্যুতে পুরো পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেল।

নিহত নয়নের মা নার্গিস বেগম বলেন, “নয়ন ডিগ্রি পরীক্ষা দিয়েছিল, এখনো রেজাল্ট হয়নি। আমাকে বলতো মা আমি ডিগ্রি পাশ করলে আমার পদোন্নতি হবে তখন সংসারে অভাব থাকবেনা। কিন্তু আল্লাহর কি লীলা খেলা পরীক্ষার রেজাল্টও জানতে পারলো না।”

নিহত নয়নের বাবা আখতারুজ্জামান বলেন, “আমাদের সব শেষ হয়ে গেলো। আমার ছেলের বদলে আমার মৃত্যু কেন হলো না। বাবা হিসেবে সন্তানের লাশ বহন করা কি কষ্টের তা কাউকেই বোঝানো যাবেনা।”

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow