বিশাল জলপ্রপাত আর সাজানো-গোছানো নগর জীবন আমাকে মুগ্ধ করেছে : হিমি

ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জান্নাতুল সুমাইয়া হিমি। তাঁর অভিনীত নাটকগুলো ইউটিউবে বেশ জনপ্রিয়। সম্প্রতি কানাডা ভ্রমণ করেছেন এই তিনি।
হিমি বলেন, অনেকদিন ধরেই কানাডা ভ্রমণের ইচ্ছা ছিল আমার। কোনো শুটিংয়ে নয়, সম্প্রতি ব্যক্তিগত সফরে এবারে দেশটিতে যাওয়ার হয়েছে। সেখানকার মনোরম প্রকৃতি, বিশাল জলপ্রপাত আর সাজানো-গোছানো নগর জীবন আমাকে মুগ্ধ করেছে।
ভ্রমণের শুরুটা ছিল কুইবেক সিটির বিখ্যাত মন্টমরেন্সি ফলস ঘুরে। বিশাল জলরাশির গর্জন আর চারপাশের সবুজ প্রকৃতি আমাকে অভিভূত করেছিল। এরপর ঘুরেছি রয়েল বোটানিক্যাল গার্ডেন। প্রকৃতির এত বৈচিত্র্য আগে একসঙ্গে চোখে দেখিনি। নানা প্রজাতির ফুল, গাছ আর সবুজে ঘেরা বাগান আমাকে এক অন্যরকম প্রশান্তি দিয়েছে। কানাডায় গিয়ে চায়না পার্কও ঘুরে দেখেছি। সেখানে ভিন্ন সংস্কৃতির ছোঁয়া পেয়েছি। তবে সবচেয়ে রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা ছিল নায়াগ্রা ফলস দেখা। দূর থেকে শুনলেও জলপ্রপাতের কাছে দাঁড়িয়ে তার শক্তি আর সৌন্দর্য অনুভব করা এক অনন্য অভিজ্ঞতা।
জলপ্রপাতের গর্জন শুনে যতটা উত্তেজিত হয়েছিলাম, কাছে গিয়ে সেই অনুভূতি আরও হাজার গুণ বেড়ে যায়। বিশাল জলরাশি প্রবল বেগে নিচে পড়ছে, আর তার সঙ্গে তৈরি হচ্ছে কুয়াশার মতো পানির ছিটা– এ দৃশ্য সত্যিই অবর্ণনীয়। চোখ বন্ধ করলেও সেই শব্দ আর ঠান্ডা পানির ছোঁয়া যেন এখনও অনুভব করতে পারি। মনে হচ্ছিল প্রকৃতি যেন তার শক্তি ও সৌন্দর্যের সেরা প্রকাশ একসঙ্গে সাজিয়েছে নায়াগ্রায়। জীবনে অন্তত একবার এখানে না এলে প্রকৃতির এই মহিমা উপলব্ধিই করা যায় না। তবে ভ্রমণের সবচেয়ে সাহসী ও স্মরণীয় অভিজ্ঞতা ছিল আমার বাঞ্জি জাম্প। উচ্চতার ভয় কমবেশি সবারই থাকে, আমারও ছিল।
২১০ ফুট ওপর থেকে লাফ দেওয়া সহজ কিছু নয়। ঝাঁপ দেওয়ার আগে বারবার মনে হচ্ছিল, পারব না। ভিডিওতে দেখাও গেছে, কী ভয়ে বসে ছিলাম। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সাহস সঞ্চয় করে ঝাঁপ দিই। লাফ দেওয়ার সময় ভয়ংকর চিৎকার করেছি, কয়েকবার তো গলা শুকিয়ে যাচ্ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত সুস্থভাবেই নেমে আসতে পেরেছি। সত্যি বলতে ভয় জয় করার পর যে অনুভূতি এসেছে, তা কথায় প্রকাশ করা কঠিন।
আমি দেশের বাইরে গেলে সেখানকার ভ্রমণের আনন্দ সামাজিক মাধ্যমে বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করি। এই বাঞ্জি জাম্পের ভিডিও ফেসবুকে পোস্ট করেছিলাম। অবাক হয়ে দেখলাম, মাত্র কয়েক ঘণ্টায় লাখো মানুষ তা দেখে ফেলেছে। অনেকেই সাহসের প্রশংসা করেছেন, কেউ কেউ আবার নিজেদের ভয়ের কথাও শেয়ার করেছেন। কানাডা এসেছি শপিং না করলে কী হয়। মনের আনন্দে শপিং করেছি। নিজের পাশাপাশি পরিবারে সদস্যদের জন্যও এনেছি। পুরো কানাডা ভ্রমণ আমার কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
প্রকৃতির সৌন্দর্য, মানুষের আন্তরিকতা আর সেই রোমাঞ্চকর বাঞ্জি জাম্প সব মিলিয়ে এ সফর আমার জীবনের ভিন্ন এক অধ্যায় হয়ে থাকবে। শুধু কি দেশের বাইরে ঘুরতে ভালো লাগে তা কিন্তু নয়, দেশের মধ্যে সুন্দর সুন্দর জায়গা আছে সেখানে যেতে বারবারই মন চায়।
What's Your Reaction?






