টেকনাফ দ্বীপ সাগরে নিখোঁজ বিজিবি সদস্যের মরদেহ উদ্ধার

Mar 23, 2025 - 23:24
 0  5
টেকনাফ দ্বীপ সাগরে নিখোঁজ বিজিবি সদস্যের মরদেহ উদ্ধার
ছবি : সংগৃহীত

আরিয়ান খান, কক্সবাজার প্রতিনিধি

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাবোঝাই নৌকাডুবির ঘটনায় সাগরে নিখোঁজ থাকা বিজিবি সিপাহী মোঃ বিল্লাল হাসানের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

রোববার (২৩ মার্চ) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ গোলারচর এলাকা বঙ্গোপসাগর থেকে তার মৃতদেহ পাওয়া যায়। নিখোঁজ বিজিবির সদস্যর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন।

মৃত বিল্লাল কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার জিরতলা গ্রামের বজলুর রহমানের ছেলে। শাহপরীর দ্বীপ বিজিবি সীমান্ত ফাঁড়িতে কর্মরত সিপাহী ছিলেন।

এর আগে গত শুক্রবার গভীর রাতে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় কক্সবাজারের টেকনাফ সমুদ্রে রোহিঙ্গাদের বহনকারী নৌকাডুবির ঘটনায় নারী-শিশুসহ ২৫ জন রোহিঙ্গা জীবত উদ্ধার করে। ওই সময় বিজিবির সদস্যসহ আরও বেশ কিছু রোহিঙ্গা নিখোঁজ হন। এ ঘটনায় শনিবার এক শিশুসহ চার রোহিঙ্গার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। এ নিয়ে পাচঁজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আশিকুর রহমান জানান, ‘নিখোঁজ থাকার দুই দিন পর সাগর থেকে বিজিবির সদস্যের মরদেহ পাওয়া গেছে। এর আগে সমুদ্রে অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টাকালে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের পশ্চিম পাড়ায় বহনকারী নৌকায় উদ্ধার অভিযানে যান এ বিজিবি সদস্য। এ সময় নৌকাডুবির ঘটনায় সমুদ্রে নিখোঁজ হন তিনি। অবশেষে তার মৃতদেহ পাওয়া গেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এছাড়া ঘটনার দিন খবর পেয়ে বিজিবি সদস্যরা স্থানীয় জেলেদের সহায়তায় উদ্ধার অভিযানে যান এবং শিশুসহ ২৫ জনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হন। উদ্ধার অভিযান এখনও চলছে।’

এদিকে নিহত বিজিবি সদস্যের ভাই আবু বকর যমুনাকে   জানান, ‘ভাইকে খোঁজার জন্য টেকনাফের উদ্দেশে রওনা হয়েছি। এর মধ্য খবর আসে, সাগরে চরের মধ্য ভাইয়ের মৃতদেহ পাওয়া গেছে। গত শুক্রবার সাগরে রোহিঙ্গা বহনকারী নৌকা উদ্ধার অভিযানে গেলে নৌকাডুবির ঘটনায় নিখোঁজ ছিল ভাই। ওই সময় আমাদের জানানো হয়েছিল, তিনিসহ ৩৩ জন নিখোঁজ রয়েছেন। এ ব্যাপারে আমাদের ভুল বুঝাবুঝি হয়েছিল।’

ইউএনও বলেন, এর আগে রোহিঙ্গা বহনকারী নৌকাডুবির ঘটনায় শিশুসহ চার রোহিঙ্গার মৃতদেহ ভাসমান পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আরও বেশ কিছু রোহিঙ্গা নিখোঁজ রয়েছে। তাদের বিষয়ে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে।

স্থানীয়রা জানান, গত ২২ মার্চ শুক্রবার রাতে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাবোঝাই একটি নৌকা টেকনাফে শাহপরীর দ্বীপ পশ্চিমপাড়া এলাকায় সাগরে ভাসতে দেখেন বিজিবি সদস্যরা। পরে মাঝিমাল্লারা রোহিঙ্গা বহনকারী নৌকাটি থামানোর সংকেত দেন সমুদ্রে। পরে ওই নৌকাতে ওঠেন বিজিবি সদস্য। এ সময় উত্তাল সাগরের ঢেউয়ে নৌকাটি ডুবে যায়। তাদের চিৎকারে নারী-শিশুসহ ২৫ জন রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করে স্থানীয় জেলে ও বিজিবি। পরে নিখোঁজ বিজিবির সদস্যসহ রোহিঙ্গাদের সন্ধানে সাগরে তল্লাশি চালানো হয়। ডুবে যাওয়া নৌকায় অর্ধশতাধিক লোকজন ছিলেন বলে জানিয়েছেন উদ্ধার রোহিঙ্গারা। স্থানীয় মানবপাচারকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য ঈমান হোসাইন ও আবুল মনছুর মিলে মিয়ানমারের থেকে রোহিঙ্গা পারাপারে এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানা গেছে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow