রাজনৈতিক কারণে নয়, ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বে সোহাগকে হত্যা করা হয় : ডিএমপি

Jul 16, 2025 - 15:49
 0  2
রাজনৈতিক কারণে নয়, ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বে সোহাগকে হত্যা করা হয় : ডিএমপি
ছবি : সংগৃহীত

রাজনৈতিক কোনো কারণে নয়, ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বে রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতাল এলাকায় লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। বুধবার (১৬ জুলাই) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এই হত্যা মামলার অগ্রগতি প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানানো হয়।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নিহত সোহাগ বিগত সরকারের সময় সাবেক সাংসদ হাজী সেলিমে ভাগ্নে পিল্লু কমিশনারের ছত্রছায়ায় পল্লী বিদ্যুতের চোরাই তারের ব্যবসা করত। চোরাই তার কিনে সে অ্যালমুনিয়ামের ফ্যাক্টরিতে বিক্রি করতো। বিগত ১৭ বছর ধরে সোহাগ এই কাজ করেছে। ৫ আগস্টের পরে সে তার ভোল পাল্টে অন্য রাজনৈতিক দলের দিকে আসছে। এখানে আরেকটি গ্রুপ এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে গেছে। তখন ব্যবসায়িক একটি বিভেদ তৈরি হয় তাদের মধ্যে। তারা উভয় পক্ষই পূর্বপরিচিত। ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব ও কোন্দল থেকে এই হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়েছে।

এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে রাজনৈতিক কোনো উদ্দেশ্য ছিল কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা তাদের ব্যক্ততিগত ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব। এই দ্বন্দ্ব থেকে হত্যাকাণ্ডটা সংঘটিত হয়েছে। এটা নির্বাচনকে প্রভাবিত করা বা সরকারকে বেকায়দায় ফেলানো বা অন্য কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে এই হত্যাকাণ্ড হয়নি।

এর আগে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, গত ৯ জুলাই বিকাল আনুমানিক ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ৩ নং গেইটের সামনে পাকা রাস্তার ওপর কতিপয় দুর্বৃত্ত দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে লাল চাঁন ওরফে সোহাগ নামের এক ব্যক্তিকে প্রকাশ্য দিবালোকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। আমরা এই ঘটনায় মর্মাহত ও নিহতের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।

তিনি আরো বলেন, ঘটনা চলাকালে ৯৯৯ এর মাধ্যমে চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ঘটনার সংবাদ পাওয়ার সাথে বিষয়টি চকবাজার পুলিশ ফাঁড়িকে অবহিত করলে ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক সরোয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছে। সেখানে গিয়ে পুলিশ দেখতে পায়, অভিযুক্তরা একটি মবের পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছে। ‘চাঁদাবাজদের জায়গা নেই, ব্যবসায়ীদের ভয় নেই’ এমন স্লোগান দিচ্ছে। এ অবস্থায় চকবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সরোয়ার ঘটনাস্থল থেকে সন্দিগ্ধ মাহমুদুল হাসান মহিন ও ঘটনাস্থলের পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে রবিন নামের অপর একজনকে গ্রেপ্তার করে। পরবর্তীতে প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা ও ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আরো সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই ঘটনায় মোট ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

উল্লেখ্য, ভিকটিম সোহাগকে পাথর নিক্ষেপকারী ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা গেলেও সে সময় তার পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। পরবর্তীতে পুলিশের বিশেষ টিমের সহায়তায় তার পরিচয় নিশ্চিত হয়ে তার অবস্থান চিহ্নিত করে ১৫ জুলাই পটুয়াখালী জেলা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তার নাম মো. রেজওয়ান উদ্দিন অভি। বাবার নাম মনোরঞ্জন বসু, মায়ের নাম বিউটি দেব মিলা। সে একজন ধর্মান্তরিত মুসলিম। এই ঘটনায় পাথর নিক্ষেপকারী দুইজনসহ মোট ৯ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। এই হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের জন্য গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow