আরপিও সংশোধনের বিরোধিতায় সিইসিকে ১২ দলীয় জোটের চিঠি

Nov 3, 2025 - 23:38
 0  4
আরপিও সংশোধনের বিরোধিতায় সিইসিকে ১২ দলীয় জোটের চিঠি
ছবি : সংগৃহীত

জোটবদ্ধ নির্বাচন করলেও নিজ দলের প্রতীকে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার বিধান যুক্ত করে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের বিরোধিতা করেছে ১২ দলীয় জোট। বিধানটি আরপিওতে যুক্ত না করতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের কাছে  চিঠি দিয়েছে তারা।

সোমবার ১২ দলের পক্ষে জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মহাসচিব আহসান হাবীব লিংকনের সই করা চিঠিটি সিইসির দপ্তরে জমা দেওয়া হয়। ১২ দলভুক্ত অন্য দলগুলো হলো লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি, জাতীয় দল বাংলাদেশ জমিয়াতে উলামায়ে ইসলাম, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ লেবার পার্টি, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, নয়া গণতান্ত্রিক পার্টি, ইসলামিক পার্টি, প্রগতিশীল জাতীয়তাবাদী দল ও ইউনাইটেড লিবারেল পার্টি।

চিঠিতে ‘জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করলেও শরিক দলগুলোকে নিজ নিজ দলীয় প্রতীক ব্যবহার করতে হবে’ আরপিওর ২০ নম্বর অনুচ্ছেদের এমন সংশোধনীতে ১২ দলের আপত্তির কথা জানানো হয়। এতে বলা হয়, এই পরিবর্তন তাদের কাছে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তারা এ পরিবর্তনের তীব্র বিরোধিতা করছেন। 

এতে বলা হয়, অতীতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল জোটবদ্ধ হয়ে নিজেদের বা জোটের অন্য কোনো দলের প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। এটা রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার। এই প্রক্রিয়ায় নির্বাচন অনুষ্ঠানে আগে কোনো সমস্যা হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত এই প্রক্রিয়া পরিবর্তনের কোনো দাবিও ছিল না। সরকারের উচ্চপর্যায়ের সঙ্গে আলোচনাকালে আরপিওর ২০ নম্বর অনুচ্ছেদে কোনো পরিবর্তন আনা হবে না বলে বিএনপিসহ জোটটিকে আশ্বস্ত করা হয়েছিল। হঠাৎ করেই পত্রিকায় খবর এলো, জোট করলেও দলীয় প্রতীকে ভোট করতে হবে।

জোট গঠনের মূল উদ্দেশ্য নির্বাচনে জয়ী হওয়া এমন যুক্তি তুলে ধরে চিঠিতে বলা হয়েছে, জোটবদ্ধ দলগুলোর পছন্দ অনুযায়ী প্রতীক চাওয়ার অধিকার আছে। এই প্রচলিত পদ্ধতি পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা কেন দেখা দিল, তা বোধগম্য নয়। এ ছাড়া নির্বাচনের প্রধান অংশীজন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা ছাড়াই এমন একটি বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া অনভিপ্রেত ও অগ্রহণযোগ্য।

১২ দলের চিঠিতে বলা হয়, আরপিওর এই সংশোধনী রাজনৈতিক দলগুলোর গণতান্ত্রিক অধিকার ক্ষুণ্ন করেছে। তাই তারা আরপিওতে ২০ অনুচ্ছেদের আগের বিধান বহাল রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বিশেষভাবে অনুরোধ করছেন। সংস্কারের দোহাই দিয়ে ভিন্ন এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা রাজনৈতিক দলগুলো মেনে নেবে না। 
এর আগে বিএনপির পক্ষেও একই দাবি জানিয়ে সিইসির কাছে আনুষ্ঠানিক চিঠি দেওয়া হয়। আইন উপদেষ্টার কাছেও একই চিঠি দেয় দলটি। তবে জামায়াত, এনসিপিসহ কয়েকটি দল বিএনপির এমন অবস্থানের বিরোধিতা করেছে। সংশোধিত আরপিওর অধ্যাদেশ বহাল রাখার দাবি জানিয়ে সিইসি ও আইন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে এনসিপি। সেখানে সংশোধনী বাতিলে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বিএনপির পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন বলে অভিযোগ করে এ বিষয়ে সরকারের অবস্থান পরিষ্কার করার দাবিও তুলেছে এনসিপি। 

নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন আরপিওর বিধানটি সংশোধন করার প্রস্তাব সরকারকে দেয়। গত বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে বিষয়টি অনুমোদন দেওয়া হয়। বর্তমানে এটি আইন মন্ত্রণালয়ে আছে। সেখান থেকে কোনো পরিবর্তন না এলে অধ্যাদেশ আকারে জারি হবে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow