ইয়ার উদ্দীনের ৩৮ বছরের বাউলীয়ানা জীবন

Jan 2, 2025 - 03:20
Jan 2, 2025 - 13:01
 0  22
ইয়ার উদ্দীনের ৩৮ বছরের বাউলীয়ানা জীবন
বাউল সাধক ইয়ার উদ্দীন। ছবি : যমুনা টাইমস

রফিকুল ইসলাম সবুজ

সংগীতের লোক ধারা হাজার বছর ধরে বাংলার সমাজ ও সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে মিশে আছে; অবিচ্ছেদ্যভাবে বয়ে চলেছে বহমান নদীর মতো। আর এই ক্ষেত্রে অবদান রেখেছেন ফকির লালনসহ নাম না জানা অনেক বাউল সাধকেরা। তেমনি একজন বাউল সাধক ইয়ার উদ্দীন।

৮৭ হাজার গ্রাম বাংলার চিরাচরিত ঢোল-তবলা, একতারা, সরাজের ঝংকারে দীর্ঘ ৩৮ বছর ধরে বাউল সংগীত পরিবেশন করে আসছেন ইয়ার উদ্দীন সেখ (ইয়ার পাগলা)। দেশের বিভিন্ন গ্রামগঞ্জে ঘুরে বাউল গান গেয়ে যা পায় তা দিয়েই চলে তার জীবন সংসার। ইতিমধ্যে পঙ্গুত্ব বরণ করে মানবেতর জীবনযাপন করছেন এ বাউল।

সিরাজগঞ্জ রায়গঞ্জ উপজেলার কাঠাল বাড়িয়া গ্রামের মৃত মোসলেম উদ্দীন সেখের ছেলে ইয়ার উদ্দীন। গানের পাগল বলে দর্শক তাকে ভালোবেসে নাম দিয়েছেন ইয়ার পাগলা। সেই নামেই তাকে ডাকে এবং চিনে।

বাউল ইয়ার উদ্দীন পারিবারিক অস্বচ্ছলতা কারনে লেখা পড়া করত পারেনি। ছোটবেলা থেকেই সে যাত্রা দলে অভিনয় করলেও গান তাকে আর পিছু ছাড়েনি।

ইয়ার উদ্দীন বলেন, ‘আমার বয়স যখন ১৪/১৫ বছর তখন থেকেই আমি যাত্রা পালায় অভিনয় করি। কিন্তু আমাকে বার বার শুধু মেয়ের চরিত্র দেওয়ার কারণে যাত্রা দল থেকে বের হয়ে আসি, আর তখন থেকেই আমার গানের জিবন শুরু। ৩৩ বছর হলো এই সরাজ আমার সঙ্গী।’ কি ধরনের গান গায়? সে ব্যাপারে জানতে চাইলে এ বাউল বলেন, ‘বাংলা লোক গানের বিভিন্ন ধারা যেমন পালা গান, মুর্শিদি, বিচ্ছেদ, জারি-সারি সবই সে গায়।’

গান গেয়ে তার সংসার কিভাবে চলে? এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, পরিবারে সদস্য ৬ জন, গান গেয়ে যা পাই তা খুবই সামান্য, তা দিয়ে আমার একদমই চলে না। স্ত্রী সন্তান নিয়ে অনেক কষ্টে দিন জাপন করছি। বাংলার এই অমূল্য সম্পদ “লোকগান” আজ বিলুপ্তের পথে। যা সংরক্ষণ করার তেমন কোন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছেনা। আর যারা এগুলো রক্ষা করে চলেছে সেই বাউল শিল্পিদেরও দেখাশোনার কেউ নেই। ফলে মানবেতর জীবনযাপন করতে হয় তাদের।

লোকগানের যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে খুব শিগগরই বাংলার এই অমূল্য সম্পদ হারিয়ে যাবে এ দেশ থেকে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow